আরেক জাদুঘরে স্বর্ণালংকারসহ হাজারো নিদর্শন চুরি
Published: 1st, November 2025 GMT
ফ্রান্সের ল্যুভর জাদুঘরে চুরির ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাদুঘর থেকে দুর্ধর্ষ চুরির খবর সামনে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডের একটি জাদুঘরে। সেখান থেকে স্বর্ণালংকারসহ প্রায় এক হাজার নিদর্শন চুরি করে নিয়ে গেছে চোর। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ সপ্তাহে চুরির ঘটনাটি সামনে এনেছে। চুরি হওয়া জিনিসগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ঐতিহাসিক শিল্পনিদর্শন ও স্বর্ণালংকার রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে ওকল্যান্ড মিউজিয়াম অব ক্যালিফোর্নিয়ার একটি সংরক্ষণাগারে এই চুরির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রশাসন এফবিআইয়ের সহায়তায় যৌথভাবে ঘটনাটির তদন্ত করছে।
ওকল্যান্ডের পুলিশ বিভাগ গত বুধবার এক বিবৃতিতে জানায়, গত ১৫ অক্টোবর ভোর সাড়ে তিনটার দিকে কয়েকজন ওই স্থাপনায় ঢুকে পড়েন। এরপর তাঁরা সংগ্রহশালা থেকে শতাধিক নিদর্শন চুরি করেন। চুরি হওয়া শিল্পনিদর্শনের মধ্যে রয়েছে নেটিভ আমেরিকান ঝুড়ি, হাতির দাঁতের খোদাই কাজ, ড্যাগেরোটাইপ (প্রাচীন ফটোগ্রাফিক পদ্ধতি) ছবিসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক সামগ্রী এবং কয়েকটি ল্যাপটপ।
ওকল্যান্ড মিউজিয়াম অব ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বাহী পরিচালক ও সিইও লরি ফোগার্টি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘চুরির এ ঘটনা আমাদের রাজ্যের জনগণকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থেকে বঞ্চিত করার এক নির্লজ্জ উদাহরণ। এই সংগ্রহশালার বেশির ভাগ নিদর্শন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করা। এগুলো ফিরে পেতে ওকল্যান্ড সিটি, ওকল্যান্ড পুলিশ বিভাগ ও এফবিআইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।’
ওকল্যান্ড জাদুঘরের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ায় অবস্থিত জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৯ সালে। এখানে ২০ লাখের বেশি নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকর্ম, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও প্রাকৃতিক নমুনা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসুর শপথ এবং কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই
২২ অক্টোবর সন্ধ্যার ফ্লাইটে চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম। রাতের খাবার চট্টগ্রাম শহরে সেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় ১২টা বেজে গেল।
পরদিন ছিল নবনির্বাচিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেলগুলোর নবনির্বাচিত ছাত্র সংসদের শপথ গ্রহণ। এযাবৎকাল যাঁরা যাঁরা চাকসুর ভিপি–জিএস নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাওয়াত করেছিল। আমাদের আসা–যাওয়া, থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা তাঁরাই করেছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমার গভীর আবেগের জায়গা। ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর চারটি বিভাগে দুই শ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। দুই বছর পর ১৯৬৮ সালে আমি ভর্তি হয়েছিলাম অর্থনীতিতে অনার্সে। অনার্সে সর্বমোট শিক্ষার্থী ছিলেন ৮১ জন। একমাত্র প্রশাসনিক ভবন, ছোট আকারে একটি লাইব্রেরি, কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ নিয়ে যাত্রা করেছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। শিক্ষক ছিলেন যত দূর মনে পড়ে; মোট ৬ জন।
একটা ছোটখাটো বিদ্যালয় বলা যায়। একটি মাত্র হল ছিল। আলাওল হল। একতলা ভবন। তার আবার কংক্রিটের ছাদ ছিল না। অ্যাসবেস্টস টিনের চাল ছিল। সর্বমোট আবাসিক ছাত্রসংখ্যা শ খানেকের মতো হবে। সবুজ ঘাস, লতাগুল্ম ছাওয়া ছোট ছোট অনেকগুলো টিলা (যাকে আমরা সাধারণত ‘পাহাড়’ বলতাম)। পাহাড়ের ওপরে বা পাদদেশে নির্মিত ছোট ছোট সব ভবন।
সেখানেই আমার বিশ্ববিদ্যালয়–জীবন। সেখানেই বেড়ে ওঠা। কলেজজীবন পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়ে পরিণত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সংগ্রাম।
আমার বাড়ি বগুড়ায়। পাহাড় দূরের কথা, কোনো টিলাও নেই সেখানে। বোধ হয় এ জন্যই আমার তখনই খুব ভালো লাগত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। প্রকৃতি, প্রকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্য আর আমাদের উঠতি যৌবনের রং মাখা সময়ে এক মনোরম পরিবেশ।
ছাত্র–শিক্ষক সবাই সবাইকে চিনতাম। এক পরিবারের মতো মেলামেশাও ছিল। একই সঙ্গে সাপখোপ অন্যান্য প্রাণীও বাস করত। আমার মনে আছে, এক সন্ধ্যায় যখন আঁধার নেমে এসেছে, তখন এক আবাসিক ছাত্র বাথরুমের বেসিনে ট্যাপ খোলার সঙ্গে সঙ্গে বেসিনে কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকা সাপ ফোঁস করে উঠেছিল। আর তাতে শিক্ষার্থীটি চিৎকার করে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম–হাটহাজারী সড়কের জিরো পয়েন্টের বাঁ দিক দিয়ে পাহাড় কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তা করা হয়েছে। ওই রাস্তায় প্রবেশ করে, আমরা রাত প্রায় ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের দিকে যেতে লাগলাম। ১ নম্বর গেটের কাছে তখনো শিক্ষার্থী এবং দোকানিদের ভিড়।
আমি এ বছরেই ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশনে এসেছিলাম। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
চাকসুর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে চাকসুর সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ