ধবলধোলাই হয়ে লিটন বললেন, ‘একটা বিরতি দরকার’
Published: 31st, October 2025 GMT
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে তখন সব ক্রিকেটারই হাঁটা ধরেছেন ড্রেসিংরুমের দিকে। অধিনায়ক লিটন দাসের ব্যস্ততা তখনো শেষ হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ঘরের মাঠে ধবলধোলাই হওয়ার ক্লান্তি নিয়েই তাঁকে সংবাদ সম্মেলনে আসতে হয়েছে সেটির ব্যাখ্যা দিতে।
সিরিজজুড়েই বাংলাদেশ ব্যর্থ ছিল ব্যাটিংয়ে। আগের ম্যাচে ১৫০ রান তাড়া করে জিততে পারেনি তারা, কাল হেরেছে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫১ রান করে। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই লিটন টেনে আনেন ক্লান্তির কথা। এরপর জানান, একটা বিরতি খেলোয়াড়দের চাঙা করতে পারে নতুন করে।
লিটন বলেন, ‘এখানকার খেলোয়াড়েরা নিজেদের প্রমাণ করেছে। তারা জাতীয় দলে অনেক দিন ধরে খেলছে। একটা সিরিজ বাজে যেতে পারে। তবে যেই খেলোয়াড়েরা খেলেছে, সবাই নিজেদের প্রমাণ করেছে। দুয়েকজন সব সময় ভালো করে। আমার মনে হয় বিরতিটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, তারা একটু ক্লান্ত আছে। বিরতির পরে আবার তারা চাঙা হয়ে আসবে এবং ভালো মতোই খেলবে।’
গত মাসের শুরুতে এশিয়া কাপের আগে মাসখানেকের ক্যাম্প করে বাংলাদেশ। এরপর এশিয়া কাপ খেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে না ফিরেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে। আমিরাতে দেড় মাসের লম্বা সফর শেষে দেশে ফেরার তিন দিনের মধ্যেই ক্রিকেটাররা নামেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
সেই ক্লান্তির কথা তুলে ধরে লিটন বলেন, ‘অনেক সময় ক্রিকেটাররা অনেক ক্রিকেট খেলে ফেলে এবং অবসাদ চলে আসে। আপনি অনেক কিছু চেষ্টা করেন দেওয়ার জন্য, কিন্তু অনুকূলে থাকে না কোনো কোনো সময়। এই একটা সিরিজ তেমন হতে পারে। অনেক দিন ধরে ক্রিকেট খেলছে সবাই।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার ৪০ জন
জুলাই অভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনকালের ১৪ মাসে ৪০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনা মাসের হিসেবে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে গত বছরের সেপ্টেম্বরে, ৯টি; আর গত তিন মাসে ঘটেছে ১১টি।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সংস্থাটি, সেখানে ১৪ মাসের তথ্যও তুলে ধরা হয়।
অধিকার এই হিসাব করেছে ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে এর চার দিন আগেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তাদের দেড় দশকের শাসনকালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ নিয়ে সরব ছিল দেশি–বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এরপর ৮ আগস্ট যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, সেই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা আদিলুর রহমান খান। বিতর্কিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দণ্ডিত হয়েছিলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর হাইকোর্টের রায়ে খালাস পান তিনি।
অধিকারের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, গত বছরের আগস্টের ৯ তারিখের পর ওই মাসে দেশে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। সেপ্টেম্বরে নয়জনের পর অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে একজন করে মারা যান। এরপর ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মারা যান পাঁচজন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন মারা যান। মার্চ ও এপ্রিল মাসে মারা যান একজন করে দুজন। এরপর মে, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যকাণ্ডের শিকারের সংখ্যা যথাক্রমে চার, তিন, ছয়, তিন ও দুই।
এই ৪০ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৯ জন গুলিতে মারা গেছেন, নির্যাতনে মারা গেছেন ১৪ জন, পিটিয়ে মারা হয়েছে সাতজনকে।
গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ১১ জন নিহত হয়েছেন, তার তিনটি ঘটনার জন্য পুলিশ, একটি ঘটনার জন্য সেনাসদস্য এবং সাতটি ঘটনার জন্য যৌথ বাহিনীকে দায়ী করেছে অধিকার।
অধিকারের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ১৪ মাসে মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ১৫৩ জন। এই ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে গত সেপ্টেম্বর মাসে, ১৮টি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনা ছিল ১৭টি। গত তিন মাসে এমন ঘটনার সংখ্যা ৪৫টি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় ৭ হাজার ৯৭৯টি রাজনৈতিক সহিংসতার হিসাব দিয়েছে অধিকার। এ ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে এ বছরের মার্চে, ৯৪৪টি। ৮৬২টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে গত বছরের সেপ্টেম্বরে। গত বছরের আগস্টে (৯–৩১ আগস্ট) সংখ্যাটি ছিল ৫০০। ৭৯৮টি ঘটনা ঘটে এ বছরের এপ্রিলে। গত জুন, জুলাই ও আগস্টে সংখ্যাটি ছিল যথাক্রমে ৪৮৯, ৫৭৯ ও ৬৫৮। গত সেপ্টেম্বরে সংখ্যাটি নেমে দাঁড়ায় ৩০০টিতে।
১৪ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হন ২৮১ জন। সবচেয়ে বেশি ব্যক্তি নিহত হন এ বছরের মার্চে ৪৪ জন, এরপর এক মাসে বেশি নিহত হন গত বছরের আগস্টের ২৩ দিনে, ৩৩ জন।
এ সময়কালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ২৪২টি ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে গত সেপ্টেম্বরে, ৩৪টি। এ ছাড়া গত মার্চ মাসে ৩০টি, মে মাসে ২৮টি, আগস্টে ২৬টি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫টি ঘটনায় আক্রান্ত হন সাংবাদিকেরা।