সাভারে দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক সংঘর্ষে সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়াসহ ৬ দফা দাবি তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিরুলিয়ার খাগান এলাকায় সিটি ইউনিভার্সিটির নিজস্ব ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে দাবিগুলো জানান সিটি ইউনিভার্সিটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

দাবিগুলা হলো- ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে অগ্নিসন্ত্রাস, লুটপাট ও মিথ্যাচারের দায় স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে, হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় ও ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত সিটি ইউনিভার্সিটির অবকাঠামো ও বিনষ্ট পরিবহন সমূহের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীসহ যারা সরাসরি এই ধ্বংসযজ্ঞে জড়িত সুস্পষ্ট তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনি ব্যবস্থা ও ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে, এ ঘটনায় প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি এসোসিয়েশন (এপিইউবি) এর সভাপতি সবুর খানের নীরবতা ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের জন্য তাকে অপসারণ করতে হবে এবং হামলার রাতে সহযোগিতা চাওয়ার পর‌ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা না পাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

এসময় শিক্ষার্থীরা হামলার ঘটনা বর্ণনা করে বিভিন্ন ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করেন। তাদের দাবিগুলো দ্রুত পূরণ করে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ইউজিসির প্রতি আহ্বান জানান সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ অক্টোবর থুথু ফেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। রাতভর চলা সংঘর্ষে আহত হয় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা ও পরিবহন। পরে এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন উভয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা/সাব্বির/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন ভ র স ট র ব শ বব দ য

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি

আট মাস আলোচনার পর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, তাকে ‘অশ্বডিম্ব’ বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন।

‘জগাখিচুড়ি মার্কা’ কমিশনের সুপারিশের পর পরিস্থিতি জটিলতার দিকে মোড় নেওয়ার দিকটি নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আট মাস আলোচনার পর একটা অশ্বডিম্বের মতো একটা অবস্থা।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংলাপে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন সাজ্জাদ জহির। এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।

তরুণ রাজনীতিকদের মধ্যে মতাদর্শভিত্তিক সংলাপ ও গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে জার্মান ফাউন্ডেশন ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস)-এর সহযোগিতায় ‘পলিটিকস ল্যাব’ শিরোনামে চারটি ধারাবাহিক কর্মশালা করেছে সিজিএস। তার সমাপনী অনুষ্ঠান হিসেবে আজকের সংলাপ হয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। নানা প্রশ্নে বিভিন্ন দলের আপত্তির বিষয়গুলো সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ার তফসিলে না থাকা নিয়ে যেমন সমালোচনা হচ্ছে, আবার গণভোটের সময় নিয়েও দলগুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।

এই সংকট তৈরির জন্য ঐকমত্য কমিশনকে দায়ী করে সাজ্জাদ জহির বলেন, ‘এটার সমাধানটা কী? এই গণভোটের সমাধানটা কী? জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা কিন্তু নেই। মানে একধরনের হাওয়ার ওপরে সবকিছু চলছে। এখানে ৮৪টা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০টাতে একমত হয়েছে, বাকিগুলোতে একমত হয়নি। তাহলে কোন বিষয়ে ভোটটা হবে।’

জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখলাম জুলাই সনদে স্বাক্ষর হলো। এরপর সর্বশেষ সংস্কার কমিশন তারা আবার আরেকটা খেলা খেলল এখানে। দেখেন কী অবস্থা! তারা বলছে যে নোট অব ডিসেন্ট কিছুই থাকবে না। ভিন্ন মত থাকবে না। আমার তো ভিন্নমত আছে, কেন থাকবে না?’

গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে কোথাও গণভোটের কোনো বিধান নেই। একটা আছে যেটা ১৪২ ধারা। যেটা নির্বাচিত সংসদে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মতভেদ তীব্রতর হয়, তাহলে সেই বিষয়ের ওপরে নির্বাচিত সংসদ জনগণের আহ্বান করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে গণভোট সংবিধানসম্মত নয়।’

সিপিবির সভাপতি বলেন, এসব জটিলতা এড়াতে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে গত বছরের অক্টোবর মাসে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলেন। তবে ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে’ সরকার সেটি শোনেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ