গণভোট ও জুলাই আদেশ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চায় জামায়াত
Published: 1st, November 2025 GMT
নভেম্বরে গণভোট অনুষ্ঠান এবং অতি দ্রুত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান এখনো অনড়। এ লক্ষ্যে দলটি মাঠের কর্মসূচি জোরদার করার লক্ষ্য স্থির করেছে। পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়ারও চেষ্টা করছে।
জামায়াতের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির বিষয়ে কথা বলতে তারা গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে তাদের এখনো সময় দেওয়া হয়নি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোট চেয়ে আসছে জামায়াত। তারা মনে করে, সে জন্য অতি দ্রুত সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা জরুরি। কিন্তু সরকার আদেশ জারিতে সময় ক্ষেপণ করছে, যা নভেম্বরে গণভোট অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা অনিশ্চিত করে তুলছে। এ পরিস্থিতিতে দলটির নেতারা বোঝার চেষ্টা করছেন, গণভোট ঘিরে সরকার কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
এই নেতার ভাষ্য, জামায়াতকে নির্বাচন বর্জন করার মতো পরিস্থিতিতে ঠেলে দেওয়া হলে তাঁরা প্রতিরোধমূলক কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবেন।তবে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। সরকার আদেশ জারিতে আরও সময় নিলে জামায়াত শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
জামায়াত নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, লন্ডন বৈঠকের পর থেকে কয়েকজন উপদেষ্টার প্রভাবে সরকারপ্রধান বিএনপির দিকে ঝুঁকেছেন। জুলাই ঘোষণাপত্রে তাঁদের চাওয়া প্রাধান্য পেয়েছে। সর্বশেষ জুলাই সনদের বাস্তবায়নপ্রক্রিয়াসহ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২১ ধারা সংশোধনীর পরিবর্তনসহ বিএনপি যেভাবে চাইছে, সবকিছু সেভাবেই হচ্ছে। গণভোটের প্রশ্নেও সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির চাওয়াকে প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে জামায়াতের নেতারা মনে করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা বলেন, তাঁরা মনে করছেন সরকার একটি দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে। এমনটা হলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হয়ে উঠবে। এতে সরকারের প্রতি মানুষ আস্থা হারাচ্ছে।
এই নেতার ভাষ্য, জামায়াতকে নির্বাচন বর্জন করার মতো পরিস্থিতিতে ঠেলে দেওয়া হলে তাঁরা প্রতিরোধমূলক কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবেন।
গণভোটের প্রশ্নেও সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির চাওয়াকে প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে জামায়াতের নেতারা মনে করছেন।নির্বাচনের দিনেই গণভোট নাকি একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট—এ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এটাকে দুই দলের নেতারা সময়মতো জাতীয় নির্বাচনকে অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবেও দেখছেন।
গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার কোনো সুযোগ এখন আর নেই। তিনি বলেন, গণভোট নির্বাচনের দিনই হবে, সে কথা তাঁরা পরিষ্কার করে বলেছেন। সেখানে দুটি ব্যালট থাকবে—একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে বলেও অভিযোগ করেন।
আমরা পরিস্থিতি নজরে রাখছি। সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করছি। জামায়াত রাষ্ট্র সংস্কারে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। এ পথে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে আমরা মাঠে থাকব।জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরঅন্যদিকে জামায়াত বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির পর গণভোটের আয়োজন করতে হবে। গণভোটের পর ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। এমন কোনো বিষয় সামনে আনা যাবে না, যার কারণে নির্বাচন সংশয় বা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, একই দিনে নির্বাচন ও গণভোটের অর্থ সংস্কার বাস্তবায়নকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া। এর মাধ্যমের কার্যত সংস্কার ভণ্ডুল হয়ে যাবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের শুক্রবারের মধ্যেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি জানিয়েছিলেন। গতকাল সে সময়সীমা পার হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নজরে রাখছি। সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করছি। জামায়াত রাষ্ট্র সংস্কারে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। এ পথে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে আমরা মাঠে থাকব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট পর স থ ত অন ষ ঠ ন গণভ ট র ব এনপ র সরক র র করছ ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ওজন কমাতে ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই ডায়েট
আজ বিশ্ব ভেগান দিবস। জীবনযাপনের এই পদ্ধতিতে খাদ্য হিসেবে প্রাণিজ উৎস থেকে কোনো খাবার খাওয়া হয় না। খাওয়া হয় উদ্ভিজ্জ খাবার। শাকসবজি, ফল, ডাল, বীজ ও বাদাম নিরামিষ খাদ্যের একটি বড় অংশ গঠন করে। তারকা, ক্রীড়াবিদসহ অনেকে এখন ভেগান ডায়েটে অভ্যস্ত। তবে ভেজিটেরিয়ান আর ভেগান কিন্তু এক নয়। ভেজিটেরিয়ানরা উদ্ভিজ্জ খাবারের পাশাপাশি দুধ, ডিম ইত্যাদি প্রাণিজ আমিষও খেয়ে থাকেন।
উপকারিতাওজন কমাতে ও ব্লাড সুগার বা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
গাউট বা ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে ভেগান ডায়েট খুবই উপকারী।
ভেগান ডায়েট প্রদাহ প্রতিরোধী। এটি শরীরে ব্যথা কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
প্রাণিজ আমিষে চর্বি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে তা নেই।
ভেগান ডায়েট হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায় ও হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা নিশ্চিত করে।
ভেগান ডায়েট উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ, তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অ্যানাল ফিসার, পাইলস, রেক্টাল ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি কমায়।
ভেজিটেরিয়ান আর ভেগান কিন্তু এক নয়