ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের চার-ছক্কার জোয়ারে বাংলাদেশের বোলাররা যখন ভেসে যাচ্ছিলেন তখন গ্যালারিতে উল্লাস-উদ্দীপনা কমেনি। সমর্থকরা দলের করুণ পরিণতিতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আগেই! আজ গ্যালারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সমর্থনই বেশি মনে হলো। লাল-সবুজের পতাকা উড়েনি তা নয়। তবে তারাও ম্যাচ শেষের আগেই ‘ভুয়া-ভুয়া’ ধ্বনিতে বাংলাদেশকে নাকাল করেছে।
৫ উইকেটের দুর্দান্ত এক জয়ে ২০২৪ সালে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার বদলা হোয়াইটওয়াশেই নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টানা চার সিরিজ জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে বাংলাদেশ পেল ধবলধোলাইয়ের তিক্ত স্বাদ।
আরো পড়ুন:
হাজার রানে দ্রুততম তানজিদ, শেফার্ডের হ্যাটট্রিক
৪০ বল হাতে রেখে ভারতকে ৪ উইকেটে হারাল অস্ট্রেলিয়া
সান্তনার জয় নয়, এই ম্যাচে বাংলাদেশ সঙ্গী করেছে হার, হতাশা, হাহাকার। অনেক দিন ধরেই ম্যাচে লড়াই করা, হারার আগেই ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার চিত্র ফুটে উঠছিল। আজ সেই চিত্র ধরা পড়ে আরো গভীরভাবে। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৫১ রান জমা করে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ১৭ বল আগেই লক্ষ্য ছুঁয়ে বাংলাদেশকে ৩-০ সমীকরণ উপহার দেয়।
যে ডট বল নিয়ে এতো আলোচনা সেই ডট বল এই ম্যাচে বেড়েছে। প্রথম ম্যাচে ডট বল ছিল ৪৮টি। দ্বিতীয় ম্যাচে তা বেড়ে ফিফটি ছুঁয়ে ফেলে। এবার সংখ্যাটি ৫২। অথচ ডট বল কমানোর উপায় খুঁজছিল দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬২ বল খেলা তানজিম হাসান নিজের ৮৯ রানের ইনিংস খেলার পথে ১৯ বল ডট খেলেন। তা-ও তিনি ক্রিজে টিকে ছিলেন। চেষ্টা চালিয়ে রান তুলেছেন। বাকিরা তো স্রেফ নাজেহাল।
পারভেজ হোসেন ইমনকে দলে নিয়ে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করেন টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও পারভেজ দলের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হন। ১ ছক্কায় ১০ বলে ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। লিটন ক্রিজে এসে প্রথম বলে চার হাঁকান। কিন্তু ৯ বলে ৬ রানে থেমে যায় তার ইনিংস।
এই দলে সাইফ হাসান ছিলেন ফর্মে। তাকে পাঠানো হয় চার নম্বরে। নতুন পজিশনে সাইফ তেমন ভালো কিছু করতে পারেননি। তবে দলের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনিই দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করেন। তানজিদের সঙ্গে ৪৩ বলে ৬৩ রানের জুটি গড়ার পর সাইফ ২ ছক্কায় ২২ বলে ২৩ রান করে আউট হন।
পরের ব্যাটসম্যানরা কে কতো দ্রুত আউট হবেন সেই চেষ্টায় ছিলেন মগ্ন। রিশাদ (৩), সোহান (১), নাসুম (১), জাকের (৫), শরিফুল (০) আউট হন। সেঞ্চুরি হাতছানি দিচ্ছিল তানজিদকে। শেষ ওভারে তার প্রথম তিন অঙ্ক ছুঁতে ১১ রানের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু শেফার্ডের করা ওভারের প্রথম বলে মিড অনে ক্যাচ তোলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি। ওই ওভারের তাসকিন ১ ছক্কায় ৯ রান তুলে দলের রান দেড়শতে নিয়ে মুখ রক্ষা করেন।
হ্যাটট্রিক করে ৩ উইকেট নিয়ে শেফার্ড ছিলেন দলের ক্যারিবীয়ানদের সেরা বোলাররা।
জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুরুতে একটু সময় নিয়েছিল। আথানজে ৮ বলে ১ রান করে ফেরেন মাহেদীর বলে। ভালো করতে পারেননি ব্রেন্ডন কিং। ৮ রানে ফেরেন সাজঘরে। পরের গল্পটা কেবলই অতিথিদের। প্রথমে আমির জাঙ্গু তাণ্ডব চালান।
সেই যাত্রায় যোগ দেন রোস্টন চেজ ও আকিম আগাস্তে। জাঙ্গু ২৩ বলে ৩৪ রান করেন ৫ চার ও ১ ছক্কায়। চেজ ২৯ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫০ রান করেন। সবচেয়ে বিস্ফোরক ছিলেন আগাস্তে। ২৫ বলে ৫ ছক্কা ও ১ চারে ৫০ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। চতুর্থ উইকেট তার ও চেজের ৪৬ বলে ৯১ রানের বিস্ফোরক জুটিতেই মূলত উড়ে যায় বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে বাংলাদেশ যেভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে তাতে তাদের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বেশ। সঙ্গে ফিল্ডিংও ছিল গড়বড়ে। সহজ ক্যাচ হাতছাড়া হয়েছে। গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে ছিল না জোর।
ওয়ানডে সিরিজ কোনোমতে জয়ের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশের এবারের মিশন। যেভাবে, যেই ধাঁচে দল যাচ্ছে, তাতে হার, হতাশা ও হাহাকারকেই প্রতিদিন সঙ্গী করছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে টালমাটাল দশা।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১ ছক ক য় ন কর ন র ন কর প রথম উইক ট য টসম
এছাড়াও পড়ুন:
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশনে নতুন কাউকে যুক্ত করেনি বাংলাদেশ
সিরিজ হাতছাড়া হওয়ার পর বাংলাদেশের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামার একটাই উদ্দেশ্য, হোয়াইটওয়াশ এড়ানো। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তাদেরকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল।
এক বছর পর সেই বদলা নেওয়ার অপেক্ষায় তারা। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিশ্চিতভাবে সুযোগটি হাতছাড়া করতে চাইবে না।
বাংলাদেশ নিজেদের মাটিতে ‘মুখ রক্ষা’ করতে পারবে কিনা দেখার। সেই উদ্দেশ্যে নিজেদের শেষ ম্যাচের জন্য ১৪ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। স্কোয়াডে কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন কাউকেও যুক্ত করা হয়নি।
৩১ অক্টোবর দুই দল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে।
এর আগে বিসিবি শুরুর দুই ম্যাচের জন্য স্কোয়াড দিয়েছিল। তৃতীয় ম্যাচেও থাকছে একই স্কোয়াড।
বাংলাদেশ স্কোয়াড
লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, কাজী নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদী, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিদ হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন
 হঠাৎ বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে চুক্তি বাতিল তারিক কাজীর
হঠাৎ বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে চুক্তি বাতিল তারিক কাজীর