স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা
Published: 13th, January 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের নারায়ণপুরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
মঙ্গলবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে স্ত্রী লাকী আক্তারকে (৩৫) গলা কেটে হত্যার পর মোস্তফা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ঘটনার পর মোস্তফাকে স্ত্রীর লাশের উপরে আহত হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা যায়, লাকী আক্তার সারপার কালা কাজী প্রধানীয়া বাড়ির মৃত নজরুল প্রধানের মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং নিহতের খালা হোসনেআরা বেগম জানান, ৭ বছর পূর্বে মোস্তফার সঙ্গে লাকীর প্রেম করে বিয়ে হয়। তাদের ৬ বছরের জুনায়েদ নামে একটি ছেলে রয়েছে। লাকী ছেলেকে নিয়ে প্রায় এক মাস হলো মোশাররফ প্রধানের পরিত্যক্ত বাড়িতে বাস করছিলেন।
এলাকাবাসী জানান, আজ সোমবার সকাল ৭টার দিকে লাকীকে নিতে আসেন মোস্তফা। এ সময় দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হলে মোস্তফা লাকীর গলায় ছুরিকাঘাত করে। এ সময় লাকী চিৎকার দিয়ে ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে এসে উঠোনে লুটিয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে মোস্তফা তাদের সামনেই লাকীর হাতের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এবং নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপর মোস্তফা নিহত লাকীর উপরে অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়েন।
এ সব তথ্য নিশ্চিত করে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ থানার ওসি সালেহ আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত লাকির ছেলে জুনায়েদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মোস্তফাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালেও পাঠানো হয়েছে।’’
এ ঘটনায় এলাকাবাসী এবং লাকীর আত্মীয়-স্বজনরা মোস্তফার ফাঁসি দাবি করেছেন।
অমরেশ//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘জামাই-শ্বশুরের’ দোকানে চা–পান করতে আসেন দূরের লোকজনও
কবির হোসেন (৩৬) ও তাঁর শ্বশুর সোলেমান মোল্লা (৫৫) মিলে বছর পাঁচেক আগে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দেন। জামাতা-শ্বশুরের যৌথ অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় চলছে চায়ের দোকানটি। দুজনে মিলে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি করেন প্রায় ৩০০ কাপ দুধ-চা। প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার টাকার চা বিক্রি হয় দোকানটিতে।
নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন এখানে ‘খাঁটি দুধের চা’ পান করতে আসেন। গাভীর দুধ দিয়ে জামাতা-শ্বশুরের হাতের পরম যত্নে বানানো সুস্বাদু ওই দুধ-চা স্থানীয় লোকজনের কাছে বেশ সমাদৃত। দূর থেকেও অনেকে আসেন চা–পান করতে। স্থানীয়ভাবে এটি ‘জামাই-শ্বশুরের’ চায়ের দোকান হিসেবে পরিচিত। দোকান থেকে উপার্জিত আয় দিয়েই চলছে তাঁদের সংসার।
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের কলেজগেট এলাকায় চায়ের ওই দোকানের অবস্থান। জামাতা কবির হোসেনের বাড়ি উপজেলার পৈলপাড়া গ্রামে। কবিরের শ্বশুর সোলেমান মোল্লার বাড়ি উপজেলার নবকলস গ্রামে।
সম্প্রতি এক সকালে ওই চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড়। ছোট্ট পরিসরে সাজানো টুল-টেবিলে বসে চা–পান করতে করতে আড্ডা দিচ্ছেন তাঁরা। রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তর্ক চলছে সেখানে। ক্রেতাদের চা পরিবেশনায় ব্যস্ত শ্বশুর-জামাতা।
কাজের ফাঁকে কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। কবির হোসেন বলেন, তাঁর একমাত্র শ্যালক মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর শ্বশুরের আর কোনো ছেলে না থাকায় তাঁকেই (কবির) ছেলে মনে করেন তিনি। তাঁর বাবা মারা গেছেন অনেক আগে। এ জন্য শ্বশুরকেই বাবার আসনে বসিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে দুজনে মিলে ভাড়া করা এই চায়ের দোকানটি দিয়েছেন। নিজে সাতটি গাভী পালনপালন করেন। ওই গাভীর দুধ দিয়ে চা তৈরি করে বিক্রি করেন তাঁরা। তিনি ও তাঁর শ্বশুর পালা করে দোকানে বসেন এবং চা বিক্রি করেন। উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকা ছাড়াও চাঁদপুর জেলা শহর ও মতলব উত্তর উপজেলা থেকেও লোকজন এই দোকানে আসেন চা–পান করতে।
ক্রেতাদের হাতে দুধ-চা তুলে দিচ্ছেন কবির হোসেন।