নির্বাচনে সৈয়দ ফয়সলকে প্রার্থী করার দাবি
Published: 14th, January 2025 GMT
হবিগঞ্জের মাধবপুরে উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীর অন্যরকম এক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার নোয়াপাড়ায় দিনব্যাপী মিলনমেলায় আলোচনা সভা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাধবপুর-চুনারুঘাট আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি সৈয়দ মো.
সৈয়দ মো. ফয়সল ও তাঁর পরিবার সুদীর্ঘকাল ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত জানিয়ে মাধবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল ইসলাম কামাল বলেন, বিএনপির রাজনীতি করার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সৈয়দ মো. ফয়সাল ও তাঁর পরিবারকে অনেক ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলার মোকাবিলা করতে হয়েছে। নানা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের অনেক ক্ষতি করা হয়েছে। শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে সৈয়দ মো. ফয়সল ও তাঁর পরিবার মাধবপুর-চুনারুঘাট তথা হবিগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীর পাশে ছিলেন। যখন মাধবপুর-চুনারুঘাট বিএনপির দাঁড়াবার কোনো নিরাপদ জায়গা ছিল না, তখন সৈয়দ মো. ফয়সল ও তাঁর ভাই সৈয়দ মো. শাহজাহান মাধবপুরে তাদের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকি নিয়ে বিএনপির মিটিং করেছেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান হামদু বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ মো. ফয়সল বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবেন। কারণ মাধবপুর-চুনারুঘাটে সৈয়দ মো. ফয়সল ও তাদের সায়হাম শিল্প পরিবার দীর্ঘদিন ধরে নানা সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ করে আসছে। এ কারণে এই আসনে তাঁর জনপ্রিয়তা ও সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মো. ফয়সল বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে এতদিন ফ্যাসিস্ট সরকার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা করতে দেয়নি। আমরা আল্লাহর দরবারে দেশনেত্রীর সুস্থতা কামনা করছি। আমরা যেন কারও প্রতি জুলুম-অন্যায় না করি। কারণ জুলুমকারীকে
কেউ পছন্দ করে না। তাদের পরিণতি ভয়ংকর। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সৈয়দ মো. ফয়সল আরও বলেন, ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। কেউ যাতে বিএনপির নামে চাঁদাবাজি ও দখলবাজি না করে, সে বিষয়ে দলের নেতাকর্মীকে সতর্ক করেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ত কর ম ব এনপ র পর ব র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।
এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।
আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?
উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’
আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।