জিয়াবাদ-মুজিববাদ কোনো বাদ আমরা বাংলাদেশে চাই না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
Published: 23rd, January 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটগুলো চলছে, সেখানে লাল সন্ত্রাস, সবুজ সন্ত্রাস আসবে। আমরা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে জাতিগত বিদ্বেষ চাই না, কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চাই না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটরে নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে ‘১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষ: বাংলাদেশের রাজনীতি ও উন্নয়নপন্থায় প্রভাব’ শীর্ষক সভায় নাসীরুদ্দীন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যে আদর্শিক বিভাজন বাংলাদেশে রয়েছে, সেখান থেকে আমরা সরে আসতে চাই। বিভিন্ন যে বাদ আছে—জিয়াবাদ বলুন, মুজিববাদ বলুন আমরা কোনো বাদ বাংলাদেশে চাই না। আমরা বাংলাদেশে শুধু একটি বিষয় বুঝি, সেটা হলো জনগণ।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জনগণ সবার উপরের জায়গায় থাকবে। জনগণের মূল্যায়নে সংবিধান তৈরি হবে। জনগণকে ফোকাস করে জনগণের জন্য আমরা লড়াই করতে চাই। জনগণের কাছে আমরা যেতে চাই। জনগণের জয়যাত্রা জারি থাকুক। জনগণ আমাদের প্রেরণার শক্তি হোক।
তিনি বলেন, আমাদের গত ৫৩ বছরে কখনই ক্ষমতা হস্তান্তর জনগণকে সুস্থভাবে দিতে পারিনি। একটা অভ্যুত্থানের পর পার্লামেন্ট থেকে জজ, উকিল, ব্যারিস্টার সবাই পালিয়ে গেল, কীভাবে পুরো বাংলাদেশ স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল। তখন দায়িত্ব আমাদের ওপর এসে পড়ে। আমরা কতটুকু করতে পেরেছি এটা জনগণ বিচার করবে। তখন বাংলাদেশে রাস্তায় লাশ পড়ছিল; হত্যাযজ্ঞ থামানোর জন্য রাজনৈতিক গোষ্ঠী কোনো উদ্যোগ নিচ্ছিল না। আমরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মানুষের কাছে বুদ্ধি পরামর্শ নিয়েছি। যার কারণে আমরা এখনও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছি।
নাগরিক কমিটির এই নেতা বলেন, একাত্তর পরবর্তী এ দেশের জনগণকে যে আঘাত করা হয়, সেটা হলো জনগণকে অন্ধকারে রেখে একটি সংবিধান হয়েছিল। তার মাধ্যমে একটি বিভাজনের রাজনীতি চালু করা হয়। আমরা গত ৫৩ বছরে বিভাজনের সংকটে চব্বিশে এসে হাজারো শহীদ, অসংখ্য আহত হয়েছে। এখনও ১৯৭১-৭৫ সালে অজানা অধ্যায় অন্ধকারে রয়ে গেছে।
সভায় বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের উন্নয়ন অধ্যয়নের অধ্যাপক ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ন ত ত ব জনগণ র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ড. ইউনূস-তারেক বৈঠকে বিচার-সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে ইতিবাচকভাবে দেখলেও সেখানে অভ্যুত্থান পরবর্তী বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখি। জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের এমন সুসম্পর্কই কাম্য।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, হতাশার বিষয়- বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি। এই সরকার শুধু নির্বাচন দেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো রূপ নয় বরং একটি অভ্যুত্থানের উপর দাঁড়িয়ে, দেশের মানুষের অসংখ্য ত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার কাছে দায়বদ্ধ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ, মৌলিক সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন নির্বাচনের পূর্বশর্ত।
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই সনদের পূর্বে নির্বাচনের মাস আর তারিখ নিয়ে কথা বলা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়বদ্ধতা ভুলে যাওয়ার নামান্তর। সনদ রচনার পরেই নির্বাচন বিষয়ক আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও লেখেন, দেশের স্থানীয় পর্যায়ে ইতোমধ্যে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, প্রশাসনকে প্রভাবিত করা, পেশিশক্তির প্রদর্শনসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা দৃষ্টান্ত প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান হচ্ছে। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। যেটা নির্বাচনের অন্যতম আরেকটি পূর্বশর্ত।
এনসিপির এই নেতা পোস্টে আরও বলেন, নির্বাচনের মাস এপ্রিল কিংবা ফেব্রুয়ারি যেটাই হোক না কেন, তার চেয়ে মুখ্য বিষয় হচ্ছে নির্বাচনের পূর্বে জুলাই সনদ দৃশ্যমান বিচার এবং মৌলিক সংস্কার গুলো হচ্ছে কিনা।