সিলেটে যৌথ বাহিনীর অভিযান, এক এলাকাতেই মিলল আড়াই লাখ ঘনফুট পাথর
Published: 16th, August 2025 GMT
সিলেট সদর উপজেলার একটি এলাকাতেই মিলল প্রায় আড়াই লাখ ঘনফুট পাথর। আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত যৌথ বাহিনী পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে এসব পাথর উদ্ধার করেছে।
সাদাপাথরসহ সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে লুট করা পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনী গত বুধবার রাত থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নামে। এরই অংশ হিসেবে চতুর্থ দিনের মতো আজ সদর উপজেলায় পরিচালিত হচ্ছে।
অভিযানসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সদর উপজেলার ধোপাগুল ও মহালদিক এলাকায় যৌথ বাহিনীর দুটি অভিযান শুরু হয়। এসব অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়াৎ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরকার মামুনুর রশীদ। তাঁদের সঙ্গে সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন।
অভিযানে ধোপাগুল এলাকায় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার ঘনফুট ও মহালদিক এলাকায় আরও প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। ক্রাশার মেশিনের সামনে স্তূপাকারে এসব পাথর ছিল। এর বাইরে বিভিন্ন রাস্তা ও বাড়ির পাশে মাটি ও বালু দিয়েও এসব পাথর ঢেকে রাখা হয়েছিল। কেউ কেউ ত্রিপল দিয়েও এসব পাথর ঢেকে রেখেছিলেন।
আরও পড়ুনসিলেটে লুটের পাথরবাহী ১৩০ ট্রাক জব্দ, ফেলা হচ্ছে সাদাপাথর এলাকায়১৪ আগস্ট ২০২৫ইউএনও খোশনূর রুবাইয়াৎ বেলা তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত আছে। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। এখানে আরও কিছু স্থানে পাথর লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে খবর রয়েছে। সেসবও উদ্ধারেও অভিযান চলমান।
সারা দেশে ৫১টি কোয়ারি (পাথর, বালু ইত্যাদি উত্তোলনের নির্দিষ্ট স্থান) রয়েছে। এর মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে রয়েছে আটটি পাথর কোয়ারি। এর বাইরে সিলেটে আরও ১০টি জায়গায় পাথর রয়েছে। যেমন সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি ও উৎমাছড়া। এসব জায়গা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুনসাদাপাথর লুটে জড়িতদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের১৪ আগস্ট ২০২৫পাথর আসে সীমান্তের ওপারে ভারতের পাহাড়ি নদী থেকে। ২০২০ সালের আগে সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া সিলেটের আটটি কোয়ারি ইজারা দিয়ে পাথর উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হতো। তবে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতির কারণে ২০২০ সালের পর আর পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া হয়নি।
সিলেটের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতারা সব সময় পাথর উত্তোলনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। বিগত পাঁচ বছরে তাঁরা নানাভাবে কোয়ারি ইজারা আবার চালুর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সরকার অনুমতি দেয়নি। এ অবস্থায় রাতে লোকজন অবৈধভাবে পাথর তুলতেন।
গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টানা এক বছর দেদার পাথর লুটপাট চলে। তবে স্থানীয় প্রশাসন ছিল নির্বিকার। এতে সংরক্ষিত এলাকা, পর্যটনকেন্দ্র ও কোয়ারিগুলোর পাথর একসঙ্গে লুট করে নেওয়া ঠেকানো যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ