ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক কি যুদ্ধ থামাতে পারবে, ইতিহাস কী বলছে
Published: 16th, August 2025 GMT
আলাস্কায় রাশিয়া ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যকার বৈঠক সমস্যার শেষ নয়; বরং এক দীর্ঘ যাত্রার সূচনামাত্র। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে চলমান অস্থিরতার সমাধান দিতে পারবে না এই বৈঠক। তবুও এটি সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এমন ঘটনা খুব কম ঘটেছে, যখন শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতাদের বৈঠক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর সমাধান দিয়েছে।
এর একটি কারণ হলো, এত বেশি মাত্রায় মনোযোগ আকর্ষণ করা পরিস্থিতিও খুব বিরল। আমরা বর্তমানে ঠিক তেমনই একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার ‘কৌশলগত পরাজয়।’ আর রাশিয়া বিশ্বরাজনীতিতে পশ্চিমাদের একচেটিয়া আধিপত্যের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।
অন্য কারণ হলো বাস্তবিক। বিশ্বের শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতারা এমন কোনো সমস্যার পেছনে সময় নষ্ট করেন না, যেগুলো তাঁদের অধীনেরাই সমাধান করতে পারেন। আর ইতিহাস ঘাঁটলেও দেখা যায়, শীর্ষ পর্যায়ের এসব বৈঠকের কারণে কদাচিৎ বিশ্বরাজনীতির গতি-প্রকৃতি বদলেছে।
আর তাই আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠককে অতীতের অনেক বিখ্যাত বৈঠকের সঙ্গে তুলনা করা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
ইতিহাসে অনেক শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, যেগুলো যুদ্ধ ঠেকানোর বদলে পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে।বিশেষ করে ১৮০৭ সালে নেমন নদীতে একটি ভেলার ওপর অনুষ্ঠিত রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্রাটের মধ্যের বৈঠকের সঙ্গে আলাস্কার বৈঠকের তুলনা করা হচ্ছে। নেমন নদীর ওপর বৈঠকও যুদ্ধ ঠেকাতে পারেনি। বৈঠকের মাত্র পাঁচ বছর পর নেপোলিয়ন রাশিয়া আক্রমণ করে বসেন। আর সেই ভুলই তাঁর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এরপর ১৮১৫ সালের ভিয়েনা কংগ্রেসে রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো বড় ক্ষমতাধর দেশের নেতা নিয়মিত আলোচনায় অংশ নেননি। জার প্রথম আলেকজান্ডার তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ইউরোপের নতুন রাজনৈতিক কাঠামো দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। অন্য শক্তিগুলো তা মানেনি। যেমন হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, তাঁরা আদর্শ নয়; বরং স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করতে চাইতেন।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্য দূরীকরণে ৯ দাবি রাবি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের
প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বহাল এবং বৈষম্য দূরীকরণে ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এগ্রোনমি ও এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল আলিম, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড.মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান, অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ, মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
আরো পড়ুন:
রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
রাকসু ফান্ডে জমা ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা, হল সংসদের ফান্ড অস্পষ্ট
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে এবং দীর্ঘ ১৫ বছরের গুম-খুন ও নির্যাতনের অবসান হয়। গণঅভ্যুত্থানে জনগণের প্রত্যাশা ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অবসান এবং গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সেই প্রত্যাশা পূরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
তারা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবতাও প্রায় একই রকম। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, আবাসন, যাতায়াত, পেশাগত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন এবং দুর্নীতিবাজ ও নিপীড়কদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণে কার্যকর অগ্রগতি দেখা যায়নি। এসব জরুরি বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার ঘোষিত সুবিধা বহাল রয়েছে। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তা কার্যকর হয়নি।
বক্তারা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বাইরে কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নয়। তাই এখানেও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য একই ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
অফিসার সমিতি সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, “পোষ্য কোটা ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা এক নয়। আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা চাই, কোটা নয়। আমাদের সন্তানরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেই এখানে ভর্তি হোক এটা চাই।”
রাবি/ফাহিম/সাইফ