লিভারপুল যখন ২–২ গোলে সমতায়, জোতাকে খুঁজেছেন স্লট
Published: 16th, August 2025 GMT
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নতুন মৌসুমের শুরুতে গতকাল বোর্নমাউথের বিপক্ষে লিভারপুলের প্রথম ম্যাচের সবটুকুজুড়ে ছিলেন প্রয়াত দিয়েগো জোতো। যেমন ৮৮ মিনিটে ম্যাচের মোড় বদলে দেওয়া গোলের নায়ক ফেদেরিকো কিয়েসার কথাই ধরা যাক।
লিভারপুলের ৪–২ গোলের দারুণ জয় কিয়েসা উৎসর্গ করেন জুলাইয়ের শুরুতে ভাই আন্দ্রেসহ সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করা জোতার জন্য। লিভারপুল তারকাকে স্মরণ করে কিয়েসা বলেন, ‘এটি ছিল জোতার দিন।’
অ্যানফিল্ডে গতকাল রাতে জোতাকে স্মরণ করার ক্ষণ বারবার ফিরেছে। ম্যাচের আগে, ম্যাচ চলাকালে এবং ম্যাচ শেষেও মনে করা হয়েছে জোতাকে। রুদ্বশ্বাস ম্যাচে জয়ের পর কাঁদতে কাঁদতে তালি দিয়ে সমর্থকদের সঙ্গে জোতাকে স্মরণ করেন মোহাম্মদ সালাহ। ম্যাচে গোল করে জোতার মতো উদ্যাপনও করেন মিসরীয় তারকা।
আরও পড়ুনপ্রিয় জোতা, এভাবে চলে যেতে নেই০৩ জুলাই ২০২৫ম্যাচের পর জোতাকে নিয়ে কিয়েসা বলেছেন, ‘এই গোলের মুহূর্তটা আমার জন্য দারুণ ছিল। কিন্তু আমার ভাবনা ঘিরে ছিল জোতা। আমি মনে করি, এটা তার দিনই ছিল। সমর্থকেরা আমাকে যা অনুভব করিয়েছে, যেভাবে তারা পুরো ম্যাচে তার গান গেয়েছে, এটা খুবই আবেগঘন ছিল। গোল করার পর আমার মনে পড়েছে তার পরিবার ও ভাই আন্দ্রের কথাও। এটুকুই শুধু আমি বলতে চাই।’
গ্যালারিতে উপস্থিত ছিল জোতার পরিবার। কিক-অফের আগে গাওয়া হয় লিভারপুলের ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’ গানটি এবং নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় ক্লপ এবং স্যার কেনি ডালগ্লিশ স্ট্যান্ডে ভক্তদের তৈরি করা বিশেষ মোজাইকও দেখা যায়। ম্যাচের আগে খেলোয়াড়েরা যখন মাঠে নামছিলে, দর্শকেরা তখন ‘ওহ, হি ওয়্যারস দ্য নম্বর ২০’ গানটি গেয়েছেন। এরপর ম্যাচের ২০তম মিনিটে একটি পতাকা ওড়ানো হয়, যাতে লেখা ছিল ‘অ্যানফিল্ড সব সময়ই তোমার বাড়ি’।
ম্যাচে একপর্যায়ে ২–০ গোলে এগিয়ে থাকা লিভারপুল ধাক্কা খায় এবং লড়াইয়ে সমতা ফেরায় বোর্নমাউথ। শেষ দিকে ম্যাচ যখন ২–২ সমতায়, তখন আর্নে স্লটের স্বাভাবিকভাবে মনে পড়েছিল জোতার কথা। ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন জোতা।
তাঁর অভাববোধ করেছেন জানিয়ে স্লট ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘সাধারণত যখন স্কোর ২-২ হয়, সবাই জানে আমি কোন খেলোয়াড়ের দিকে তাকাই। আমি চাইতাম জোতাকে নামাতে, কিন্তু মর্মান্তিক কারণে পারিনি। তবে ভক্ত আর খেলোয়াড়েরা আমাদের জন্য খেলেছে, যেভাবে জোতা আমাদের জন্য খেলত।’
আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলার জিতে মৌসুম শুরু লিভারপুলের১২ ঘণ্টা আগেস্লট যোগ করেন, ‘আমার মনে হয়, দিয়োগোকে ঘিরে যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে, তার শক্তি আর গভীরতাই ছিল আসল অনুভূতি। ম্যাচের পর আমি যেতে চাইনি, কারণ আজ আমাদের সমর্থকরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা বিশেষ ছিল।’
লিভারপুল কোচ আর্নে স্লট.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিনের জন্য কেন হাঁটু গেড়ে লালগালিচা বিছালেন মার্কিন সেনারা, কী বলছেন ইউক্রেনের মানুষ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিশাল আয়োজন করে সাড়ম্বরে স্বাগত জানালেন। অন্য কোনো বিশ্বনেতাকে এমনভাবে অভ্যর্থনা জানাননি ট্রাম্প। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম তাঁরা মুখোমুখি বৈঠক করলেন। আর শুরু থেকেই দুজনের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্কের প্রকাশ দেখা গেছে।
নিজেকে ‘চুক্তির কারিগর’ বলতে পছন্দ করেন ট্রাম্প। আলাস্কার এক বিমানঘাঁটিতে তিনি পুতিনের জন্য লালগালিচা বিছিয়ে দিলেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর গতকাল শুক্রবারই প্রথম পশ্চিমা মাটিতে পা রাখলেন পুতিন।
ট্রাম্প বিমানঘাঁটির টারম্যাকে ধৈর্য ধরে দাঁড়িয়ে তাঁর ‘বন্ধু’ পুতিনের অপেক্ষা করলেন। পুতিন এগিয়ে আসতেই ট্রাম্প হাততালি দিতে থাকলেন। এরপর উষ্ণ করমর্দন ও হাসিমুখে একে অপরকে স্বাগত জানালেন।
তবে যে দেশের মানুষ ট্রাম্পের কাছ থেকে শান্তির আশা করছিলেন, সেই ইউক্রেন থেকে ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠকের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, পুতিনের প্রেসিডেনশিয়াল বিমান থেকে নামার সিঁড়ির নিচে মার্কিন সেনারা হাঁটু গেড়ে বসে লালগালিচা ঠিক করছেন।
ইউক্রেনের অবকাঠামো উন্নয়ন সংস্থার সাবেক প্রধান মুস্তাফা নায়েম ছবিটি শেয়ার করে ব্যঙ্গ করে লিখলেন—‘মেক নিইলিং গ্রেট অ্যাগেইন’ (হাঁটু গেড়ে বসাকে আবার মহৎ করো)।
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক
ট্রাম্প–পুতিনের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক থেকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি। তবে তাঁরা কিছু বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং পুরোনো বন্ধুত্ব আবারও ঝালিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
তিন ঘণ্টা শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প ও পুতিন শুধু উষ্ণ মন্তব্য করলেন। কিন্তু সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নিলেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি কিনা মিডিয়া পছন্দ করেন, তাঁর ক্ষেত্রে এটি বিরল ঘটনা।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল, অনেক বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘খুব অল্প কিছু বিষয় রয়ে গেছে, যার মধ্যে একটি রয়েছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখনই সে বিষয়ে বিস্তারিত বলব না।’
ট্রাম্প পরে ফক্স নিউজকে বলেন, এখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দায়িত্ব। তাঁকে এই আলাস্কা বৈঠককে কাজে লাগিয়ে রাশিয়ার তিন বছরের আক্রমণ শেষ করার মতো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষায়, ‘এখন এটা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দায়িত্ব। ইউরোপীয় দেশগুলোকেও কিছুটা ভূমিকা রাখতে হবে। তবে মূলত জেলেনস্কির হাতেই বিষয়টা।’
ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেন, ‘আমি এই বৈঠককে দশের মধ্যে দশ দিয়েই মূল্যায়ন করব।’