চঞ্চল চৌধুরী। অভিনেতা। গত বুধবার ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিরিজ ‘ফেউ’। ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগনা জেলার মরিচঝাঁপিতে ঘটে যাওয়া গণহত্যার পটভূমিতে সিরিজটি গড়ে উঠেছে। এই সিরিজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে–

আপনার অভিনীত ‘ফেউ’ সিরিজ নিয়ে বলুন?

একটি জনগোষ্ঠীর টিকে থাকার লড়াই নিয়ে তৈরি হয়েছে সিরিজটি। তাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তরিত হওয়া। তাদের জীবনের সংকট, জীবন-মরণ– সবকিছু মিলিয়ে অনবদ্য একটি গল্প। এটি সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হলেও গল্পটি খুব বেশি মানুষ জানে না। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগনা জেলার মরিচঝাঁপির গণহত্যা নিয়ে সিরিজের গল্প। নির্মাতার কাছে থেকে যখন প্রথম গল্পটি শুনি, তখন খুব চিন্তায় ছিলাম কীভাবে সে পর্দায় দেখাবে। সেই কঠিন কাজটি খুব ভালোভাবেই করতে পেরেছেন নির্মাতা। গল্পটি দর্শকদের ভিন্ন দুটি সময়ের মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়, যার একটি ১৯৭৯ সালের, অন্যটি ২০০২ সালের। দর্শকরাও এই দুই সময়ের ট্রানজেকশন বেশ পছন্দ করছেন। কেউ অভিনয়ের মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন, কেউ কারিগরি দিক নিয়েও কথা বলেছেন। এই সিরিজে আমি অভিনয় করেছি সুনীল চরিত্রে, যিনি একজন ফটোগ্রাফার।

সিরিজটির শুটিংয়ের সময়কার কথা মনে আছে?

হ্যাঁ। আমরা যখন শুটিং করেছি, তখন প্রচণ্ড ঠান্ডা ছিল। মাসখানেক সুন্দরবনে শুটিং হয়েছে, এর মধ্যে আমি ছিলাম ২০ দিন। রাতে যখন লঞ্চে ঘুমাতাম, খুব ঠান্ডা লাগত। শীতের জামাকাপড় পরেই ঘুমাতাম। তবে ঠান্ডার চেয়ে ভয়ের বিষয় ছিল কুমির। আমাদের লঞ্চ যেখানে নোঙর করা ছিল, সেখানে ছিল কুমির। সকালে জানালা দিয়ে মুখ বের করলেই কুমিরসহ বিভিন্ন পশুপাখি দেখা যেত। আমরা লঞ্চ থেকে শুটিং স্পটে যেতাম ছোট ছোট ট্রলারে। রাতেও শুটিং করতে হতো। এক কথায় বলতে গেলে, খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের শুটিং হতো। 

ওটিটি মাধ্যমে এখন প্রায় একই ধরনের গল্প দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে আপনার কী মনে হয়?

এটি হয়তো সত্যি, আমরা একই ধরনের গল্পের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছি। নতুন নতুন গল্প নিয়ে কাজ করলে দর্শকের আগ্রহ বেশি থাকে। যখন নতুন ভাবনা দিয়ে দর্শকদের চমকে দেওয়া যায়, তখনই তারা কাজটি দেখে। দর্শক সবসময় আমাদের কাছে ভালো কাজ চায়। আমাদের প্রচুর গল্প আছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লাখ লাখ গল্প ছড়িয়ে আছে। যাঁরা নতুন গল্প ও ভাবনা নিয়ে কাজ করবেন এবং সেটি যদি রিয়েলিটির কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে, তাহলে দর্শক সবসময় তাদের সঙ্গে থাকবে। 

এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে। গত মাসে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সৃজিত মুখার্জির পরিচালনায় ‘পদাতিক’ সিনেমাটি দেখানো হলো। এবারই প্রথম দেশের দর্শক সিনেমাটি দেখার সুযোগ পেল। উৎসবে অনেকেই আপনার উপস্থিতি আশা করছিলেন। আপনি ছিলেন না কেন?

প্রথমবার বাংলাদেশে সিনেমাটি দেখানো হলো। উৎসবে আমি থাকতে পারলে আরও ভালো লাগত। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় ছিল। তাই যাওয়া হয়নি। পদাতিকের প্রদর্শনীর পর অনেকেই আমাকে ফোন করে ভালো লাগার কথা বলছেন। পদাতিকে কাজের সময়ও আমার অন্যরকম আগ্রহ ছিল। মৃণাল সেনের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিচালকের চরিত্রে অভিনয় করব, এটি চিন্তা করতেই অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছিল। ভারতবর্ষে লাখ লাখ অভিনেতা আছেন। অনেকেই মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই সৌভাগ্যটা আমার হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশেও পদাতিক মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু পায়নি। ভবিষ্যতে কি মুক্তির কোনো সম্ভাবনা আছে?

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভারত ও বাংলাদেশে সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। আমি খুব করে চাই, সুযোগ থাকলে সিনেমাটি যেন এ দেশের হলে মুক্তি দেওয়া হয়। চলচ্চিত্র উৎসবে সবাই সিনেমাটি দেখতে পাননি। সিনেমা হলে রিলিজ হলে সাধারণ দর্শকেরা দেখার সুযোগ পাবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদ ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

রাজধানীর বাংলা মোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শিশুসাহিত্যিক অমিত কুমার কুণ্ডুর শিশুতোষ ছড়ার বই ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল বইটির প্রকাশনা সংস্থা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।

শিক্ষাবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সাহিত্যিক রফিকুর রশীদ। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দন্ত্যস রওশন, লোকসংস্কৃতিবিদ তপন বাগচী, শিশুসাহিত্যিক সঙ্গীতা ইমাম, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার। অনুষ্ঠানে বক্তারা বইটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

নদী স্মৃতিনির্ভর সংকলন গ্রন্থ ‘আমার নদী’ প্রকাশিত 

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

প্রধান অতিথির আলোচনায় রফিকুর রশীদ বলেন, “১২৪টি ফলের ওপর লেখা এই বইয়ের ছড়াগুলো কেবল পাঠকের রসাস্বাদনই করাবে না, শিশু শিক্ষামূলক এই ছড়াগুলো রসোত্তীর্ণও বটে।”

তিনি দেশের প্রকাশকদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন,“প্রকাশকদের বেশি বেশি এরকম প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা উচিত।”

বইটির ব্যতিক্রমী আকৃতির দিকে ইঙ্গিত করে দন্ত্যস রওশন বলেন, “পাঠক তৈরির প্রয়াসেই পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এমন ক্ষুদ্রাকৃতির ও নতুন নতুন সাইজের বইয়ের ধারণা বাজারে আনছে। এটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।”

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, “শিক্ষার দুটো দিক রয়েছ।একটি হলো ট্রাডিশনাল, যা আমরা পড়েছি, আপনারাও পড়েন। আরেকটি  হলো জাঁ জ্যাক রুশোর পদ্ধতি। তিনি বলেছে, প্রকৃতির সঙ্গে শেখা।রবীন্দ্রনাথ যা বিশ্বভারতীর মাধ্যমে করিয়ে দেখিয়েছেন।অমিত কুমার কুণ্ডুর ছড়ার বইটি সে রকমই।এর মাধ্যমে প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করবে শিশুরা ও ওরা শিখবে। এরকম বই প্রকাশ করার জন্য প্রকাশকে ধন্যবাদ। আমাদের প্রকাশকদের এ ধরনের বই বেশি বেশি করতে হবে।”

কাঁচামিঠে ফলের ছড়া বইটির পাতায় পাতায় দেশি-বিদেশি বিচিত্র ফলের পরিচয়, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নান্দনিক অলংকরণে ছন্দে-ছড়ায় তুলে ধরা হয়েছে। বইটি থেকে ছড়া আবৃত্তি করে বাচিক শিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা।

অনুষ্ঠান শেষে ছিল মৌসুমী ফল দিয়ে অতিথিদের অ্যাপায়নের ব্যবস্থা।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুয়েটে দিনভর তারুণ্যের ‘তর্ক-যুদ্ধ’
  • ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন