ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) আজীবন সম্মাননা পেলেন শচীন টেন্ডুলকার। গত শনিবার মুম্বাইয়ে বিসিসিআইর বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সিকে নাইডু পদক তুলে দেওয়া হয় কিংবদন্তি এ ব্যাটারের হাতে। এই সম্মাননা নিতে গিয়ে খেলোয়াড়ি জীবনের কথা মনে পড়েছে শচীন টেন্ডুলকারের। মনে পড়েছে অবসর জীবনের কথা। সেদিনগুলোর আলোকে তরুণদের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। সব প্রলোভন দূরে সরিয়ে একমনে ক্রিকেট সাধনা করার পরামর্শ দিয়েছেন টেন্ডুলকার।

১৯৮৯ সালে অভিষেক হওয়া শচীন অবসর নেন ২০১৩ সালে। দুই যুগের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ২০০ টেস্ট ও ৪৬৩টি ওয়ানডে; যা দুই ফরম্যাটেই সর্বোচ্চ। এই দুই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি রান এবং একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ১০০ সেঞ্চুরি আছে তাঁর। সেই শচীন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে মূল্যবোধের গুরুত্ব কতটা।

নিজের উদাহরণ দিয়ে তরুণদের পরামর্শও দিয়েছেন লোভ-লালসা দূরে সরিয়ে ক্রিকেট সাধনার, ‘নব্বইয়ের দশকে দুই বছর আমার ব্যাটের কোনো স্পন্সর ছিল না। তার পরও মদ কিংবা তামাকের বিজ্ঞাপন করিনি। কারণ, আমার জীবনে মূল্যবোধের বড় ভূমিকা রয়েছে। পারিবারিক শিক্ষা সব সময় আমাকে সামনে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।’ উঠতি ক্রিকেটারদের মূল্যবোধ মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে অভিষেকের পর থেকে ক্রিকেটই নাকি পথ দেখাচ্ছে। আর যেই ব্যাট দিয়ে তিনি বিশ্বের তাবড় তাবড় বোলারকে শাসন করেছেন, সেই ব্যাটকে এখনও ভীষণ যত্নে রাখেন তিনি। এখনও সেই ব্যাটকে প্রণাম করেন। অবশ্য জীবনে কোনো কিছুকেই হালকাভাবে নেননি তিনি। গুরুত্ব দিয়েছেন সবকিছুতে। 

তবে সবকিছুর আগে রেখেছেন ক্রিকেটকে, ‘ক্রিকেট না থাকলে এই ঘরে আমরা বসে থাকতাম না। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় উপহার। আমাদের কাছে ব্যাট-বল আছে। শক্ত করে তাদের ধরে রাখতে হবে। মুঠো আলগা করলে চলবে না। যদি মুঠো আগলা হয়ে যায়, তাহলে ক্যারিয়ারও ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে।’

সে কারণে মনোসংযোগ ধরে রাখার কথা বলেছেন শচীন। কোনো প্রলোভনে পা না বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন, ‘আমি শুধু বলব, মনোসংযোগ ধরে রেখে এক লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। ক্যারিয়ারে অনেক প্রলোভন আসবে। তাতে পা দিলে হবে না। সবার আগে দেশ। দেশের জন্য সবটুকু দিয়ে খেলতে হবে। আর অবসরের পর বোঝা যায় খেলার মাঠ কত আনন্দের ছিল।’

২০১৩ সালে ছেলেবেলার স্মৃতিবিজড়িত মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে উইন্ডিজের বিপক্ষে বিদায়ী টেস্ট শেষে একটা ভাষণ দিয়েছিলেন শচীন। সেদিনের কথা নাকি এখনও মনে পড়ে তাঁর, ‘ওই মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। ধোনি বলল, ওরা আমার জন্য কিছু ব্যবস্থা করেছে। তার পর দেখলাম, মাঠে আমাকে ঘিরে উল্লাস হলো, আমাকে গার্ড অব অনার দিল। বুঝতে পারছিলাম, এটাই শেষবার। এর পর আর দেশের হয়ে নামা হবে না। এই অনুভূতি বলে বোঝানো যায় না।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব

রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপন নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে যে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে, তাকে ভিত্তিহীন ও গুজব বলে অভিহিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সরকার জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি।

তিনি বলেন, “সরকারের অবস্থান হলো রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের নেতৃত্বে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হলে বাংলাদেশ কেবল লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করতে ইচ্ছুক হবে।”

শফিকুল আলম বলেন, “মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ সহায়তা করেছে।দুর্যোগের সময়ে দেশগুলোকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটি দুর্দান্ত রেকর্ড রয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, “জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর মতে, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে এক চরম মানবিক সংকট চলছে। বাংলাদেশ সবসময় বিপদের সময় অন্যান্য দেশকে সহায়তা প্রদানে অগ্রগামী থেকেছে, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর আমাদের ত্রাণ সহায়তা।”

তিনি বলেন, “আমরা উদ্বিগ্ন যে, এই মানবিক দুর্দশা অব্যাহত থাকলে তা রাখাইন থেকে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয়প্রার্থীদের ঢল নামাতে পারে, যা আমাদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়।”

প্রেস সচিব বলেন, “আমরা আরো বিশ্বাস করি, জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করতে সহায়তা করবে।”

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আলম বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ সরবরাহের একমাত্র বাস্তব পথ হলো বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে।”

তিনি উল্লেখ করে, এই রুটে ত্রাণ পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানে সম্মত।

তবে তিনি বলেন, “রাখাইনে সাহায্য প্রদানের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি এবং যথাসময়ে দেশের অভ্যন্তরীণ অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করব।”

একটি প্রধান শক্তির জড়িত থাকার প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, “এগুলো অপপ্রচার ও ভিত্তিহীন গুজব।” 

প্রেস সচিব বলেন, “সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্যের ঝড় দেখতে পেয়েছি, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এই ধরনের প্রচারণাও এর থেকে আলাদা নয়।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদ্যালয়ের ১৮টি গাছ বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক 
  • ৩ কর্মকর্তার অবসর ও বরখাস্তের আদেশ আদালতে বহাল
  • কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি
  • বাবার মরদেহ দুই বছর লুকিয়ে রাখেন সন্তান
  • দেশে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর দাবি 
  • রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব
  • ১৪ বছর বয়সী বৈভবের বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে উড়ে গেল গুজরাট
  • বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি
  • সেজনি: অবসর ভেঙে ফিরে বার্সার হয়ে ইতিহাস লিখছেন যিনি