শরীয়তপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 4th, February 2025 GMT
শরীয়তপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হাতুড়িপেটা ও হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে অংশ নেন শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামসহ অন্যান্য সংগঠনের সাংবাদিকরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেয় তারা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন গণমাধ্যম কর্মীরা।
এদিকে হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী সমকালের সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন সোমবার রাতে বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পালং মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলো, নুরুজ্জামান শেখ (৪৫), শামিম শেখ (৪০), ইব্রাহিম মোল্লা (৪০), জিহাদ মোল্লা (২১), মাকসুদা বেগম (৩৫), মনির ঢালী (৩০), সালাউদ্দিন ঢালী (৩৮)।
মানববন্ধনে গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, গত মঙ্গলবার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস এক রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়। এ ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে গণমাধ্যমকর্মীরা। এ বিষয় নিয়ে স্থানীয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শেখ ওই চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সোমবার নুরুজ্জামান শেখ, তাঁর ভাই শামীম শেখসহ ৮ থেকে ১০ জন মিলে ছুরি, হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সমকালের জেলা প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলা চালায়। তাকে বাঁচাতে এলে নিউজ টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশন ও জাগো নিউজের প্রতিনিধি বিধান মজুমদার অনি, দেশ টিভির সাইফুল ইসলাম আকাশ ও বাংলা টিভির নয়ন দাসের ওপর হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে সোহাগ খান সুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক মানব জমিনের প্রতিনিধি খলিল শেখ বলেন, সাংবাদিকরা সংবাদ প্রচার করার ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা যেই হামলা চালিয়েছে এটা ন্যক্কারজনক। এমন ঘটনা মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য হুমকি ও গোটা জাতির জন্য অশনিসংকেত। আমরা চাই দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
আসামিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা দিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সদস্য সচিব ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশনের সাংবাদিক নুরুল আমিন রবিন বলেন, গতকাল সাংবাদিকদের উপরে যেভাবে হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে এটি পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। আমি প্রশাসনকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা না হয়, আমরা এর থেকেও বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দিবো।
এই ন্যক্কারজনক হামলার বিচারের দাবি জানিয়েছেন প্রথম আলোর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের উপরে যে হামলাটি হয়েছে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সাংবাদিকদের উপর এভাবে আক্রমণ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আমরা চাইনা। আমাদের আহ্বান থাকবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী ও রাষ্ট্রের কাছে, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের নিরাপত্তার জায়গাটি তারা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হোক।
এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অপরাধীদের গ্রেফতার করতে ইতোমধ্যে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ গ খ ন স জন দ র উপর ত র কর গণম ধ
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জকে মেট্রোরেল প্রকল্প-২ এ সংযুক্ত করার দাবিতে নিসচার মানববন্ধন
রাজধানী ঢাকার সাথে মেট্রোরেল প্রকল্প-২ এ নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
সকালে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জায়েদুল ইসলাম মিয়ার হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
মানববন্ধনে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড: হাবিবুর রহমান, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হাসানউদৌলা, কার্যকরী সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, সদস্য আল আমিন, কাউসার আলম, ফারুক মৃধা, রফিকুল ইসলাম, ইব্রাহিম, রাজু আহাম্মদ, হুমায়ুন, কাকলী প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তব্যরা বলেন, নারায়ণগঞ্জে আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক গুণ বেশি। এখান থেকে প্রতিদিন ২ লাখেরও বেশি মানুষ ঢাকা যাতায়াত করে এবং ৫০ হাজার মানুষ কর্মের তাগিদে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জে আসেন।
"যে সক্রিয় লাইন আছে, সে লাইনে মাত্র ৪ লাখ যাত্রী যাতায়াতের জন্য মতিঝিল থেকে উত্তরা এমআরটি-৬ হতে পারে। তবে, ৩ লাখ মানুষের জন্য নারায়ণগঞ্জে এমআরটি-২ হতে পারবে না কেন?
কোন অজুহাতেই এমআরটি-২ প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া যাবে না।’ প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন বক্তারা।