যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হলো ‘একতারা বসন্ত উৎসব’। সেই উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিলেন জায়েদ খান। নব্বই দশকের জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্রের গানে এই নায়ক সেখানে পারফর্ম করেছেন। ফ্লোরিডা থেকে জায়েদ জানান, শুধু তিনি একা নন, তার সঙ্গে বাংলা গানে নেচেছেন আমেরিকান একঝাঁক নারী। তিনি বলেন, আমাদের জনপ্রিয় সব নায়ক নায়িকাদের ছবি দিয়ে বিলবোর্ড সাজানো হয়েছে।

একতারা বসন্ত উৎসবের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে আলিফ আলাউদ্দিন, পারভেজ, ঋতুপর্ণা ব্যানার্জী, ডিজে রাহাতও পারফর্ম করেছেন।

জায়েদ বলেন, আমি প্রথম বাংলাদেশি নায়ক যিনি ফ্লোরিডা-তে পারফর্ম করেছি। এখানে স্টেজে আমেরিকান মেয়েরা আমার সঙ্গে পারফর্ম করছে। আমি বলেছি, আমেরিকান মেয়েদের বাংলা গানে নাচতে হবে। আয়োজকরা খুবই আন্তরিকভাবে এতে সম্মতি দিয়েছেন।

একতারা বসন্ত উৎসবের সিইও ইমরান জনি বলেন, পুরো আমেরিকায় স্নো-ফল হলেও ওয়েদারের কারণে শুধুমাত্র ফ্লোরিডাতে বসন্ত বিরাজ করছে। এজন্য এখানে প্রতিবার বসন্ত উৎসব করে থাকি। এবার আমাদের আকর্ষণ জায়েদ খান। তার কারণে পাবলিক রেসপন্স অনেক বেশি।

স্থানীয় সময় ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ‘একতারা বসন্ত উৎসব’ উদযাপিত হয়েছে বলে জানান আয়োজক কমিটি।

গেল জুনে নিউইয়র্কে যান জায়েদ খান। তারপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার বিভিন্ন রাজ্যে স্টেজ শো-তে অংশ নিচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র ‘ঠিকানা’য় যোগ দিয়েছেন। সেখানে প্রথমবারের মতো উপস্থাপক হিসেবে দেখা যাবে তাকে।

জায়েদ জানান, ঠিকানার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিনোদনমূলক একটি টকশো উপস্থাপনা করবেন, যেখানে শোবিজ ও চলচ্চিত্রের তারকারা উপস্থিত থাকবেন। শিগগিরই এটি প্রচারে আসার কথা রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বসন ত উৎসব আম র ক একত র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তাহলে কি ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠছে

ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে নিউইয়র্ক নগরের মেয়র পদে দলীয় প্রাথমিক বাছাই নির্বাচনে জোহরান মামদানি শুধু গত কয়েক বছরের মধ্যে অন্যতম বড় রাজনৈতিক অপ্রত্যাশিত বিজয় অর্জন করেননি; বরং তিনি নগরের ইতিহাসে প্রাথমিক বাছাইয়ে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক নতুন জরিপে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থনই ছিল তাঁর প্রচারের প্রধান চালিকা শক্তি।

জোহরানকে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের ৭৮ শতাংশ মনে করেন, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। আর ৭৯ শতাংশ চান, ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হোক।

নিউইয়র্কের এসব ভোটারের মধ্যে ৬৩ শতাংশ মনে করেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুযায়ী যদি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্ক নগরে আসেন, তাহলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা উচিত। জোহরান বলেছেন, নভেম্বরের নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হলে তিনিও সেটাই করবেন।

জরিপটি পরিচালনা করেছে ইনস্টিটিউট ফর মিডল ইস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং (আইএমইইউ) পলিসি প্রজেক্ট ও ‘ডেটা ফর প্রোগ্রেস’। ২০২৫ সালের ১১ থেকে ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রাথমিক বাছাইয়ের ৫১৩ জন ভোটারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

ভোটারদের করা তিনটি প্রশ্নেই দেখা গেছে, জোহরানের সঙ্গে যেসব ভোটার একমত, তাঁদের বেশির ভাগই ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনে ভোট দেননি। হতে পারে, তাঁদের তখনো ভোটার হওয়ার বয়স হয়নি অথবা জোহরানের প্রচারই তাঁদের ভোট দিতে অনুপ্রাণিত করেছে।

ভোটারদের প্রশ্ন করা হয়, কোন কোন বিষয় তাঁদের জোহরান মামদানিকে ভোট দিতে প্রভাবিত করেছে। সবচেয়ে বেশি ভোটার (৮৯ শতাংশ) বলেন, তাঁর জীবনযাত্রার খরচ কমানোর পরিকল্পনা তাঁদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে (৮৬ শতাংশ) বলা হয়, ধনীদের ওপর কর আরোপ ও করপোরেশনগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান।

তৃতীয় সর্বোচ্চ কারণ হিসেবে (৬২ শতাংশ) বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি জোহরানের সমর্থন।

২০২৫ সালের নতুন ভোটারদের মধ্যে এ সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩ শতাংশে। এমন সময়েই এ জরিপ চালানো হয়েছে, যখন কিছু রাজ্য এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, এমনকি ইসরায়েলি গবেষক ও বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

ক্রমবর্ধমান সমর্থন

তবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এ মনোভাব শুধু নিউইয়র্ক নগরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
সিএনএনে প্রকাশিত গ্যালাপের নতুন এক জরিপে দেখা গেছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি মার্কিনদের মধ্যে জনপ্রিয়তা মাইনাস ২৩ পয়েন্ট, যা ১৯৯৭ সালের পর সবচেয়ে কম।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন মাইনাস ২৮ শতাংশ, অর্থাৎ বেশির ভাগ মানুষ তা নেতিবাচকভাবে দেখছেন।

সব মিলিয়ে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে যাঁরা ফিলিস্তিনিদের চেয়ে ইসরায়েলিদের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল, সেই সংখ্যার ব্যবধান এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন—মাত্র +৫ পয়েন্ট। এটি ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার আগে ছিল প্লাস ৪৮ পয়েন্ট।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে স্বাধীনতাকামী হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েল যে হামলা শুরু করেছে, তাতে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’ বলেছে, এ সংখ্যা সম্ভবত কম বলা হয়েছে। আসল সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

আইএমইইউ পলিসি প্রজেক্টের যোগাযোগ পরিচালক হামিদ বিনদাস মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ফিলিস্তিনিদের প্রতি জোহরানের সমর্থন ও ইসরায়েলের সমালোচনার আশপাশে যে উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, সেটি দেখিয়ে দিচ্ছে, ডেমোক্রেটিক পার্টি এখন সাধারণ ভোটারদের ভাবনার সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।

হামিদ বলেন, অভিন্ন তিনটি প্রশ্নে ভোটারদের মধ্যে যে ঐকমত্য দেখা গেছে, তার কথা কংগ্রেসের খুব কমসংখ্যক ডেমোক্র্যাট সদস্যই বলতে সাহস পান। তাঁদের মধ্যে অনেকেই গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমকে গণহত্যা বলতেও ভয় পান বা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার দাবিও করেন না।

ইএমইইউ বিবৃতিতে আরও জানায়, জরিপে নিউইয়র্কের ১০ নম্বর কংগ্রেস আসনে ভোটারদের বাড়তি নমুনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ আসনের প্রতিনিধি ড্যান গোল্ডম্যান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিদের প্রভাবশালী সংগঠন আইপেকের অর্থায়নে রাজনীতি করেন। তিনি বারবার রিপাবলিকানদের সঙ্গে মিলে ফিলিস্তিনবিরোধী প্রস্তাবে ভোট দিয়েছেন।

আমেরিকান ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স (অ্যাইপেক) হলো যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী ইসরায়েলপন্থী লবিং গ্রুপ, যারা কংগ্রেস সদস্যদের জোরালোভাবে আর্থিকভাবে সহায়তা করে থাকে।

মামদানির সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো, যিনি আইপেকের সমর্থন পেয়েছেন।

হামিদ বিনদাস বলেন, এখানে কয়েকটি বিষয় রয়েছে। প্রথমত, রাজনীতিক হিসেবে ইসরায়েল সরকারের সমালোচনা করলে, সেটি একধরনের ঝুঁকি তৈরি করে। কারণ, শক্তিশালী স্বার্থান্বেষী মহল আপনার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বিজ্ঞাপন দিতে পারে। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক বাছাই নির্বাচনেও তাই হয়েছে। জোহরানের ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান ও ফিলিস্তিনপন্থী বক্তব্যের কারণেই এসব হয়েছিল।

তবু প্রাথমিক নির্বাচনে কুওমো প্রতিপক্ষ জোহরানের চেয়ে আট গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করা সত্ত্বেও তাঁর কাছে সহজেই হেরে যান।

হামিদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বিশেষ করে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি সমর্থন এবং ইসরায়েল সরকারের সমালোচনার বিষয়ে এমন ঐকমত্য যে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে প্রচার চালিয়েও তা ঠেকানো যায়নি।’

হামিদ বলেন, জোহরানের এ জয় ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যতের জন্য একটি রূপরেখা হতে পারে। দলটি এখন স্থবির হয়ে আছে, এমনকি হোয়াইট হাউস ও সিনেটে তাদের বিপর্যস্ত অবস্থা।

হামিদ আরও বলেন, ফিলিস্তিন এখন ভোটারদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। এই ইস্যু মানুষকে উদ্দীপ্ত করছে এবং এমন একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিতে উৎসাহিত করেছে, যিনি ওয়াশিংটনের নির্ধারিত পথে হাঁটছেন না এবং এটিই মানুষকে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • নিউইয়র্কের রাস্তায় নীল সোনম কাপুর
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তাহলে কি ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠছে
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’
  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ