নিখোঁজের তিন দিন পর দর্জির দ্বিখণ্ডিত মরদেহ মিলল রাজবাড়ীর মর্গে
Published: 16th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে নিখোঁজের তিন দিন পর বিনয় বিশ্বাস (৫৫) নামে এক দর্জির দ্বিখণ্ডিত মরদেহ পাওয়া গেছে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে। আজ রোববার দুপুরে স্বজনরা মরদেহটি শনাক্ত করেন। বিনয় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
নিহত বিনয় বিশ্বাস কুমারখালী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এলঙ্গী এলাকার বাসিন্দা এবং শহরের সোনাবন্ধু সড়কের "অনুপম টেইলার্স"-এর স্বত্বাধিকারী ছিলেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে বিনয় বিশ্বাস তার দোকান থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাননি। পরে সেদিন রাতেই কুমারখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। আজ রবিবার রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে তার দ্বিখণ্ডিত মরদেহ পাওয়া গেলে স্বজনরা শনাক্ত করেন।
রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে আসা কুষ্টিয়াগামী শাটল ট্রেন পাচুরিয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে এক ব্যক্তি রেললাইনে মাথা দেন এবং ট্রেনে কাটা পড়ে দ্বিখণ্ডিত হয়ে মারা যান। পরে তার মরদেহ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণ করা হয়।
নিহতের জামাই সুমন বিশ্বাস বলেন, আমার শ্বশুর শুক্রবার দোকানে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। পরে থানায় জিডি করি। আজ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার দ্বিখণ্ডিত মরদেহ শনাক্ত করি। শোনা গেছে, তিনি ট্রেনের নিচে মাথা দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, তবে কেন আত্মহত্যা করেছেন তা জানা যায়নি।
কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, নিখোঁজ বিনয়ের মরদেহ রাজবাড়ী মর্গে পাওয়া গেছে। স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করেছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল