কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে নিখোঁজের তিন দিন পর বিনয় বিশ্বাস (৫৫) নামে এক দর্জির দ্বিখণ্ডিত মরদেহ পাওয়া গেছে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে। আজ রোববার দুপুরে স্বজনরা মরদেহটি শনাক্ত করেন। বিনয় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।

নিহত বিনয় বিশ্বাস কুমারখালী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এলঙ্গী এলাকার বাসিন্দা এবং শহরের সোনাবন্ধু সড়কের "অনুপম টেইলার্স"-এর স্বত্বাধিকারী ছিলেন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে বিনয় বিশ্বাস তার দোকান থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাননি। পরে সেদিন রাতেই কুমারখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। আজ রবিবার রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে তার দ্বিখণ্ডিত মরদেহ পাওয়া গেলে স্বজনরা শনাক্ত করেন।

রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে আসা কুষ্টিয়াগামী শাটল ট্রেন পাচুরিয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে এক ব্যক্তি  রেললাইনে মাথা দেন এবং ট্রেনে কাটা পড়ে দ্বিখণ্ডিত হয়ে মারা যান। পরে তার মরদেহ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণ করা হয়।

নিহতের জামাই সুমন বিশ্বাস বলেন, আমার শ্বশুর শুক্রবার দোকানে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। পরে থানায় জিডি করি। আজ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার দ্বিখণ্ডিত মরদেহ শনাক্ত করি। শোনা গেছে, তিনি ট্রেনের নিচে মাথা দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, তবে কেন আত্মহত্যা করেছেন তা জানা যায়নি।

কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, নিখোঁজ বিনয়ের মরদেহ রাজবাড়ী মর্গে পাওয়া গেছে। স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করেছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বজনর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

লামিয়ার মৃত্যুতে আরও সংকটে পরিবার, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মা ও বোন

গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে মারা যান স্বামী জসিম উদ্দিন। এরপর গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মারা যান বড় মেয়ে লামিয়া আক্তার (১৭)।   

স্বামী এবং মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ রুমা বেগম (৩৫)। একই অবস্থা লামিয়ার ছোট বোন বুশরা আক্তারের (১৪)। লামিয়া মারা যাওয়ার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। 

রবিবার (২৭ এপ্রিল)  রাতে লামিয়াকে দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে দাফনের পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে স্বজনরা পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্বজনরা এ দুজনকে নিয়েও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে লামিয়ার গলায় ফাঁস দেওয়া নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

রবিবার মাগরিব নামাজ বাদ পাঙ্গাশিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে লামিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ নামাজে অংশ নেন বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ স্থানীয় শতশত মানুষ।

পরিবার জানায়, গত ১৮ মার্চ দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন লামিয়া। সাহসিকতার সাথে তিনি নিজে থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। দুমকি থানা পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকেই লামিয়া গভীর মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। সামাজিক অবহেলা এবং ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় তার মধ্যে চরম হতাশা তৈরি হয়। সেই হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে পরিবারের ধারণা।

লামিয়ার দাদা শহীদ জসিম উদ্দিনের বাবা আবদুস সোবাহান বলেন, “আমরা এ শোক সইতে পারছিনা। কাঁদতে কাঁদতে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আমরা কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। ছেলের বউ ও ছোট নাতিকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।” 

বলেন, “যাদের কারণে লামিয়া আত্মহত্যা করেছে আমরা তাদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।”

দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা আবুজর মোহাম্মদ ইজাজুল হক বলেন, “লামিয়ার মা এবং বোন হাসপাতালের ভর্তির বিষয়টি আমাকে অবগত করেনি। তবে তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইমরান/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লামিয়ার মৃত্যুতে আরও সংকটে পরিবার, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মা ও বোন