স্কয়ার ফার্মার ৩২ কোটি টাকার শেয়ার কিনবেন পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী
Published: 18th, February 2025 GMT
শেয়ারবাজার থেকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ১৫ লাখ শেয়ার কিনবেন কোম্পানিটির পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার শেয়ার কেনার এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ঘোষণায় বলা হয়েছে, আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এই শেয়ার কেনা সম্পন্ন করবেন অঞ্জন চৌধুরী।
শেয়ারবাজারে আজ স্কয়ার ফার্মার প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২১৫ টাকা। সেই হিসাবে ১৫ লাখ শেয়ারের বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। তবে শেয়ারের দাম কমলে বা বাড়লে এই দামও কমবে বা বাড়বে।
স্কয়ার ফার্মা দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি। প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরী ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু মিলে কোম্পানিটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে কোম্পানিটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন স্যামসন এইচ চৌধুরীর চার ছেলে–মেয়ে। তার মধ্যে চেয়ারম্যান হিসেবে স্যামুয়েল এস চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে রত্না পাত্র, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তপন চৌধুরী ও পরিচালক হিসেবে অঞ্জন চৌধুরী দায়িত্ব পালন করছেন।
সর্বশেষে গত অক্টোবর–ডিসেম্বর–তিন মাসে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ৬৬০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ১৩৫ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশ। গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে কোম্পানিটির আয় বা ব্যবসায় প্রায় ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় কোম্পানিটি ১ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ২২৩ কোটি টাকার।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আয় বৃদ্ধির ফলে কোম্পানিটির মুনাফায়ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্ত সুদ বা মুনাফা। গত বছরের শেষ ৩ মাসে এ খাত থেকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ১৫৯ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১০৫ কোটি টাকা।
ভালো মুনাফা করলেও সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দামে তার বড় ধরনের কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। বরং এটির শেয়ারের দাম কয়েক মাস ধরে একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ নভেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২২১ টাকা। আজ লেনদেন শেষে এই দাম ছিল ২১৫ টাকায়।
এ অবস্থায় কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী। অতীতেও দেখা গেছে, যখনই বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমে যায় তখনই বাজার থেকে কোম্পানিটির শেয়ার কেনার উদ্যোগ নেন পরিচালকেরা। এবারও একই উদ্দেশ্যে এক পরিচালক শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন বলে কোম্পানি সূত্রে জানা যায়।
এদিকে, অঞ্জন চৌধুরীর শেয়ার কেনার ঘোষণায়ও আজ বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দামে ইতিবাচক কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। বরং এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৫০ পয়সা কমেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।
ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।