ফতুল্লায় হাবিব হত্যার রহস্য উদঘাটন, নারী সহ গ্রেপ্তার ৫
Published: 18th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তালাবদ্ধ ঘর থেকে ভ্যান চালক হাবিবুর রহমানের বিকৃত মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সাথে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এক নারী সহ অপহরণকারী চক্রের পাঁচ সদস্য কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতভর ঢাকা,নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের কে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো পটুয়াখালী জেলার সদর থানার মাদারবুনিয়ার মোঃ ইউসুফ আকনের পুত্র কবির ওরফে সগির হোসেন(৩৮), মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার হাতিমারার মজিদ আলী সৈয়ালের মেয়ে রেহেনা বেগম(২৫),নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর থানার চর ইসলামপুরের আসমত আলীর পুত্র আরিফ(২৫), মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার দানেছপুরের মৃত জলিল মিয়ার পুত্র সিদ্দিক(৫২) ও পটুয়াখালী জেলার সদর থানার হাজীখালা গ্রামের আব্দুল সাত্তার পেয়াদার পুত্র নুরুজ্জামান(৩৫)।
জানা যায় ২৯ জানুয়ারী দুপুরে ফতুল্লার পঞ্চবটি শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে একটি বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।ঐদিন রাতেই নিহত হাবিবুরের বাবা তার ২১ বছর বয়সী ছেলের লাশ সনাক্ত করে থানায় ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন।এর আগে ২৫ জানুয়ারী নিহতের বাবা বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় নিখোঁজের একটি সাধারন ডায়েরী করেন। সাধারন ডায়েরীতে তিনি উল্লেখ্য করেন ২৪ জানুয়ারী রাত ৮ টার দিকে হাবিবুর দাপা পোস্ট অফিসরোডস্থ ভাড়া বাসা থেকে বের হয়। পরে রাত দশটার দিকে তার ফোনে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করা হয় অন্যথায় তার ছেলেকে হত্যা করা হবে। এক পর্যায়ে অপহরনকারী মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়।
পুলিশ জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ সোমবার রাতে প্রথমে মুন্সিগঞ্জের হাতিমারা থেকে কবির ওরফে সগির হোসেন ও রেহেনা বেগম কে গ্রেফতার করে। তারা দুজনে স্বামী স্ত্রী। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার শাসনগাও এলাকা থেকে আরিফ কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আরিফের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঢাকার পোস্তগোলা থেকে সিদ্দিক কে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে সিদ্দিকের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ফতুল্লা থানার দাপা ইদ্রাকপুর থেকে নিহতের সহোযোগি নুরুজ্জামান কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত সকলেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশের নিকট স্বীকার করে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নারায়নগঞ্জ জেলার ক সার্কেল মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান জানান,গ্রেফতারকৃত দম্পত্তি কবির ওরফে সগির হোসেন ও রেহেনা বেগম বিভিন্ন স্থানে ঘর ভাড়া নিয়ে মোবাইল ফোনে যুবক -পুরুষদের সাথে সম্পর্ক করে বাসায় ডেকে এনে মুক্তিপণ আদায় করতো। এরই ধারাবাহিকতায় নিহত হাবিবুরের সহোযোগি এবং গ্রেফতারকৃত কবির ওরফ সগিরের চাচাতো ভাই নুরুজ্জামানের মাধ্যমে নিহতের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শারিরীক মেলােমশার প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে আনে। পরবর্তীতে মুক্তিপন আদায়ে নিহতের পরিবারের নিকট অর্থ দাবী করে হাবিবুর কে নির্যাতন করে। হাবিবুর চিৎকার করলে অপর আসামীদের সহায়তায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরের ভিতর লাশ ফেলে তালাবদ্ধ করে তারা সকলে পালিয়ে যায়।
.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়নগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
নারায়নগঞ্জের জেলার ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় আমেনা বেগম (৩৮) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী ফিরে গেলো তার আপন ঠিকানায়।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে উদ্ধার মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পরিবারের লোকজন কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। মানসিক প্রতিবন্ধী নারী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার লনেস্বর গ্রামের জহিরুল হকের স্ত্রী।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১১ টার দিকে ফতুল্লা বাজার এলাকায় অস্বাভাবিক আচরন করতে থাকা মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে ঘিরে লোকজনের ভীড় উপস্থিতি দেখতে পেয়ে এগিয়ে যায় পুলিশ।
নারীটির আচরন ও কথাবার্তা শুনে মানসিক প্রতিবন্ধী মনে হওয়ায় তাকে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিবন্ধী নারীর বিচ্ছিন্নভাবে প্রদত্ত তথ্যের সমন্বয়ে থানা পুলিশ ধারণা করেন যে তার বাড়ী কুমিল্লা জেলার কোন এক জায়গায়।
মঙ্গলবার সকালে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নানা কথাবার্তার এক পর্যায়ে তার বাড়ী এবং পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়।পরবর্তীতে পুলিশ বেলা ১১ টার দিকে
ঐ নারীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। পরে কুমিল্লা থেকে বিকেল ৪ টার ঐ নারীর ভাই সহ পরিবারের অপর সদস্যরা থানায় এলে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী আমেনা বেগম কে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে তুলে দেয়।
আমেনা বেগমের ভাই মোঃ মানিক জানায়,তার বোন মানসিক রুগী। বোন জামাই প্রবাসী। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে নিজ বাসা থেকে পরিবারের সকলের অগোচরে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তারা তাকে খুঁজে পেতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ ও করতেছিলো।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে ফতুল্লা থানা পুলিশ তাদের কে মোবাইল ফোনে ফোন করে তার বোনকে পাওয়ার বিষয়টি জানায়। পরে চারটার দিকে তারা ফতুল্লা থানায় এসে তার বোনকে পায়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক গাজী শামীম জানান,নারীটি রাতে ঠিকমতো কিছু বলতে পারছিলোনা। সকালে তার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তার ফলে বাসার ঠিকানা জানতে পারেন। তখন সেখানকার থানার সাথে যোগাযোগ করেন।
থানা থেকে স্থানীয় মহিলা মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে ঐ মহিলার ইউপি সদস্যের মাধ্যমে নারীর পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ হয়। বিকেল চারটার দিকে ঐ নারীর পরিবারের সদস্যরা ফতুল্লা থানায় এলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।