গাজা শহর দখলের লক্ষ্যে বৃহৎ পরিসরে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি হামলার মুখে হাজার হাজার পরিবার গাজা শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

শহরের শেখ রাদওয়ান পাড়ার তিন সন্তানের জননী ৩২ বছর বয়সী লিনা আল-মাঘরেবি বিবিসিকে জানিয়েছেন, বিপদ সত্ত্বেও তিনি তার বাড়ি ছেড়ে যেতে অনিচ্ছুক ছিলেন। তবে একজন ইসরায়েলি অফিসার ফোন দিয়ে তাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

রাদওয়ান বলেন, “স্থানচ্যুতির খরচ এবং একটি তাঁবুর খরচ মেটাতে আমাকে আমার গয়না বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছিল। খান ইউনিসে পৌঁছাতে আমাদের ১০ ঘন্টা সময় লেগেছিল এবং আমরা যাত্রার জন্য তিন হাজার ৫০০ শেকেল (৭৩৫ পাউন্ড) দিয়েছিলাম। গাড়ি এবং ট্রাকের লাইন অনেক দীর্ঘ।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজা শহরে একটি ‘শক্তিশালী অভিযান’ শুরু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল-রশিদ উপকূলীয় সড়ককে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য একমাত্র অনুমোদিত পথ হিসেবে মনোনীত করেছে। অনেকেই তীব্র যানজট, গাড়ি ও ট্রাকের অবিরাম সারি এবং দীর্ঘ বিলম্বের বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে পরিবারগুলো রাস্তার ধারে আটকা পড়ে আছে এবং আকাশে বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার রাতভর ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজা শহরজুড়ে ভারী বিমান হামলা চালিয়েছে। কেন্দ্রীয় আল-দারাজ পাড়া, পশ্চিমে সৈকত শরণার্থী শিবির এবং উত্তরে শেখ রাদওয়ানে ঘনীভূত বোমাবর্ষণ করেছে। এই হামলাগুলোর সাথে কামান, ড্রোন এবং হেলিকপ্টার গানশিপ তৎপরতাও ছিল।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা তাদের আক্রমণের ‘পরবর্তী পর্যায়ে’ গাজা শহরে ‘ধীরে ধীরে’ অগ্রসর হচ্ছে। বিমান এবং স্থল বাহিনী সামরিক অভিযানের এই পরবর্তী পর্যায়ে অংশ নেবে।

বাসিন্দারা রাতভর হামলাগুলোকে ‘নরক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা গাজি আল-আলৌল বিবিসিকে বলেন, “ঘন্টা ধরে বোমাবর্ষণ উন্মাদনাপূর্ণ এবং সেনাবাহিনী এলাকার বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ভেঙে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা

মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩