২০২৪ সালে এইচএসবিসির মুনাফা আড়াই হাজার কোটি ডলার
Published: 19th, February 2025 GMT
গত বছর শেষে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসির বৈশ্বিক মুনাফা বেড়েছে। কর-পূর্ববর্তী ও কর-পরবর্তী উভয় ধরনের মুনাফাই বেড়েছে ব্যাংকটির। গত বছর বহুজাতিক এই ব্যাংকটির কর-পরবর্তী মুনাফা আগের বছরের চেয়ে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি মার্কিন ডলার বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ২৩০ কোটি ডলার। আর কর-পরবর্তী মুনাফা ৪০ কোটি ডলার বেড়ে হয়েছে ২৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ১২০ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই মুনাফার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ কোটি টাকা।
এইচএসবিসি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে বৈশ্বিকভাবে ব্যাংকটির পরিচালন ব্যয় ১০০ কোটি ডলার বেড়ে ৩৩ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার হয়েছে। ব্যাংকটির সুদের হার কমার পরও মুনাফা বেড়েছে। সুদহার কমার পরও ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা বাড়িয়ে ব্যাংকটি তাদের মুনাফা বাড়িয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এইচএসবিসি ব্যাংক চলতি বছরসহ আগামী বছর বড় অঙ্কের ব্যয় হ্রাসের পরিকল্পনা করেছে। চলতি বছর তাদের ৩০ কোটি ডলার ও আগামী বছর ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১৫০ কোটি ডলার ব্যয় হ্রাসের পরিকল্পনা আছে।
এইচএসবিসির বর্তমান বৈশ্বিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জর্জেস এলহেডেরি খুব বেশি দিন হয়নি দায়িত্ব নিয়েছেন। এর মধ্যেই তিনি ব্যাংকের আয় বৃদ্ধিতে নজর দিয়েছেন। বিশেষ করে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশেষ নজর আছে তাঁর। কারণ, এই দুটি অঞ্চল থেকেই এইচএসবিসি সবচেয়ে বেশি আয় করে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ব্যাংকটির জন্য তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীন এইচএসবিসির ব্যবসার বড় জায়গা। এখন বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হলে চীনে তাদের মুনাফা কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এইচএসবিসির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, গত বছরের মতো এবারও তারা ২০০ কোটি ডলারের নিজেদের শেয়ার কিনবে, যাকে বলে বাইব্যাক। তার আগের বছর ব্যাংকটি তিন দফায় শেয়ার বাইব্যাক করেছিল। এতে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যাংকটি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই এই শেয়ার বাইব্যাক করা হবে।
এদিকে, ২০২৩ সালে ব্যাংকটি কর-পূর্ববর্তী মুনাফা করেছিল ৩ হাজার ৩০ কোটি ডলার। ২০২২ সালে তাদের মুনাফার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭১০ কোটি ডলার। ২০২৩ সালে মুনাফা বৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা ছিল সুদ হার বৃদ্ধি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সনদ বাস্তবায়নে আবারো কমিশনের সভা আয়োজনের দাবি
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আবারো ঐকমত্য কমিশনের সভার আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর তোপখানা রোডে নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম এ দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “জুলাই অভুত্থান থেকে উঠে আসা সংস্কার আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবৎ ঐকমত্য সভায় আলাপ আলোচনার পর ঐক্য কমিশন তার জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। ঐক্য কমিশন যে ঐক্যকে সামনে রেখে প্রায় এক বছর যাবৎ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে বাস্তবায়নের সুপারিশ সেই ঐক্যকে একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে নিয়ে ফেলেছে।
‘চ্যালেঞ্জের মূল কারণ হচ্ছে ঐক্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যেটুকু আলোচনা হয়েছিল সেখানে এই প্রস্তাবে উল্লেখিত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া উপস্থাপন করা হয় নাই। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছনোর পর যদি এই প্রস্তাব জাতির সামনে হাজির করা হতো সেক্ষেত্রে এই চ্যালেঞ্জ আমরা পরিহার করতে পারতাম।”
এতে আরো বলা হয়, “ঐকমত্য কমিশনে বাস্তবায়ন নিয়ে আলাপে রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের মাধ্যমে পরবর্তী সংসদকে সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল কিন্তু যেসব প্রস্তাবে কিছু কিছু দল আপত্তি জানিয়েছিল সেগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন হবে সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয় নাই।
‘এমতাবস্থায় সংস্কার প্রস্তাবে লিপিবদ্ধ আপত্তির বিষয়গুলোকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ থাকে মুছে দেওয়াতে স্বাভাবিক কারণেই রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মনে করে দ্রুত আমরা এই সুপারিশ থেকে বের হয়ে না আসলে রাজনৈতিক দলগুলোর এক অংশের ভেতরের যৌক্তিক ক্ষোভ পরবর্তীতে দেশের মানুষের ভেতর সঞ্চালিত হয়ে পড়বে।”
এতে বলা হয়, “সারা দেশের মানুষ যখন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে তখন রাজনৈতিক দলগুলোর একাংশের প্রতি কৃত অন্যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। আর নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠলে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে এবং দেশের মানুষকে স্বৈরাচার সরকারের সময়ের চাইতে উন্নত কোনো জীবন উপহার দেওয়ার সুযোগ হারিয়ে যাবে।
‘বাংলাদেশ যাতে এই সংকটে গিয়ে না পড়ে সেজন্যে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ঐক্য কমিশনকে দ্রুত তাদের এই সুপারিশ নিয়ে পুনরায় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐকমত্য সভার আয়োজন করার দাবি জানাচ্ছে। সংবিধান টেকসই এবং সর্বজনীন করার জন্য তাড়াহুড়া করা থেকে বিরত থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানোই দেশ কাল ভেদে সংবিধান সংস্কারের একমাত্র পথ।”
“আমরা আশা করি ঐকমত্য কমিশন সঠিক বিবেচনাবোধকে গুরুত্ব দিয়ে দেশকে আসন্ন সংকট থেকে মুক্ত রাখতে প্রয়াস নেবে।” আশাবাদ ব্যক্ত করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস