এনায়েত উল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 26th, February 2025 GMT
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস থেকে দৈনিক ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়, খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, তাঁর স্ত্রী নার্গিস সামদাদ, ছেলে রিদওয়ানুল আশিক নিলয় ও মেয়ে চাশমে জাহান নিশির নামে অবৈধ আয়ে কৃষিজমি, ফ্ল্যাট, প্লট ক্রয়সহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করার তথ্য পেয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের নামে বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলেও জানা গেছে। এখন তাঁরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।
শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
এর আগে ২০২১ সালের ১৪ জুন খন্দকার এনায়েত উল্লাহকে সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দিয়েছিল দুদক। নোটিশে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে-বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী কমিশনে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনখন্দকার এনায়েত উল্লাহর সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক১৪ জুন ২০২১.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অকার্যকর সিসি ক্যামেরা, পানি নেই ছয় মাস
কুড়িগ্রাম জেলা শহরের ধরলা সেতু-সংলগ্ন পুলিশ চেকপোস্টে ৬ মাস ধরে নেই পানির ব্যবস্থা। অকার্যকর হয়ে আছে নিরাপত্তায় ব্যবহার করা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের শৌচাগারও ব্যবহারের অনুপযোগী। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই চেকপোস্ট এভাবে পড়ে থাকলেও টনক নড়েনি জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিন দেখা যায়, চেকপোস্টের সামনে ভেঙে পড়ে আছে ব্যারিকেড দেওয়ার যন্ত্র। আশপাশে লাগানো সচেতনতামূলক বিলবোর্ডগুলোও উধাও। ভ্যাপসা গরমে চেকপোস্টের ভেতরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা রীতিমতো ঘামছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পানি নেই। বিদ্যুৎ লাইনে সমস্যা। পাম্প চালু করলেও পানি ওঠে না। খাবার পানিসহ প্রয়োজনীয় কাজের জন্য বাইরের চায়ের দোকান থেকে জগে করে পানি এনে রাখতে হয়। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে কয়েকবার ৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মূল থানায় যেতে হয়। এতে গুরুত্বপূর্ণ অপরাধমূলক কাজ প্রতিরোধে অভিযান বা তল্লাশিতে বিঘ্ন ঘটে।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মাদক কেনাবেচা, যৌন হয়রানি ও ছিনতাই রোধ, দুর্ঘটনায় আহত যাত্রীদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা, সীমান্ত থেকে অবৈধ চোরাচালান বন্ধসহ নিরাপত্তার স্বার্থে ধরলা সেতু এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হয়। ওই সময় আশপাশের নিরাপত্তার জন্য ৪টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়। অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে চেকপোস্টগুলো।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর চেকপোস্ট থেকে চেয়ার-টেবিল, আসবাব লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়। এর পর থেকে সেভাবেই পড়ে আছে জননিরাপত্তার স্বার্থে নির্মিত এই পুলিশ চেকপোস্ট। ২০২১ সালে পাশের একটি দোকান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হলেও বিল পরিশোধে গড়িমসি করায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। দ্বিতীয় দফায় আরেকটি দোকান থেকে সংযোগ নেওয়া হয়। সেই বিল পরিশোধেও উদ্যোগ নেই। নানা সমস্যায় জর্জরিত চেকপোস্টে ৫ জন পুলিশ সদস্য প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা ডিউটি করছেন।
চেকপোস্টের পাশের চায়ের দোকানদার মো. কাওসার বলেন, চেকপোস্টটা চালু থেকেই আলাদা বিদ্যুতের মিটার লাগানো হয়নি। আমার কাছ থেকে সংযোগ নেওয়া হয়। এতে অনেক বিল বকেয়া পড়ে। পরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
ব্যবসায়ী মো. বিদ্যুৎ বলেন, ‘৫ মাস হলো চেকপোস্টে দোকান থাকি লাইন দিছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিলের টাকা দেয়নি। টাকা চাইলে বলে, স্যারের সাথে দেখা করো। আমরা ভয়ে টাকা চাইতে যাইতে পারি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘রাতের বেলা ডিউটি করতে কষ্ট হয়। আলোর অভাবে ঠিকমতো তল্লাশি করা যায় না। সিসি ক্যামেরা নষ্ট। স্যারদের অনেকবার বলা হয়েছে। কোনো লাভ হয়নি।’
পুলিশ চেকপোস্টে নিয়োজিত ইনচার্জ মো. নওশাদ আলী বলেন, বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে সিসি ক্যামেরা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। ছয় মাস ধরে পানি নেই। কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, বাজেট এলে সব মেরামত করা হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ধরলা সেতুর চেকপোস্ট কিশোর অপরাধ দমনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এখানে পানির সমস্যা, সিসি ক্যামেরা নেই। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিষয়টি এসপি স্যারকে জানানো হবে।
জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার বজলার রহমান বলেন, বিষয়গুলো আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।