সাকুরা সায়েন্স এক্সচেঞ্জে অংশ নিতে জাপান গেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ সদস্যের দল
Published: 26th, February 2025 GMT
সাকুরা সায়েন্স এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নিতে জাপান গেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। জাপান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এজেন্সির (জেএসটি) আমন্ত্রণ ও অর্থায়নে তাঁরা ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত জাপানের টোকিওতে কোগাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নিচ্ছেন।
প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্বে দিচ্ছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম। গত সোমবার দুপুরে তাঁরা জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন।
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জাপানের কোগাকুইন ও তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষণাগার পরিদর্শন করবেন। পাশাপাশি তাঁরা লেকচার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ, গবেষণা উপস্থাপন এবং মতবিনিময় সভা করবেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাপানের কোগাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতামূলক গবেষণা সহযোগিতা ও যৌথ গবেষণা প্রকল্পের সম্ভাবনা নিয়েও তাঁরা আলোচনা করবেন।
প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক লোকমান হোসেন ও মো.
আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যালপার ডগার (এডি) সায়েন্টিফিক ইনডেক্স-২০২১–এর বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের তালিকায় মর্যাদাপূর্ণ স্থান লাভ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষক খোরশেদ আলম। আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা এই সংস্থা সারা বিশ্বের ৭ লাখেরও বেশি বিজ্ঞানীর ও গবেষকের সাইটেশন এবং অন্যান্য ইনডেক্সের ভিত্তিতে প্রতিবছর এই তালিকা প্রকাশ করে। ২০২৪ সালেও তিনি এই তালিকায় সেরাদের মধ্যে রয়েছেন। এ ছাড়া ২০২১ সালে বায়োমেমব্রেন নিয়ে গবেষণা করে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বেস্ট পোস্টার অ্যাওয়ার্ড জেতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল। এর নেতৃত্বে ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম।
২০২৩ সালে টেকসই উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিবিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন তাঁর তত্ত্বাবধানে আরেকটি গবেষণা প্রবন্ধ বেস্ট পেপারের স্বীকৃতি পেয়েছিল। সেরা হিসেবে ‘বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করা গবেষণাটির শিরোনাম ছিল ‘সিমুলেশন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্ট ডেটা মাইনিং ফর মলিকুলার ট্রান্সপোর্ট থ্রু মাল্টিপোল ন্যানোপোরস ইন অ্যান ইলেকট্রোপোরেটেড জায়ান্ট ইউনিলামেলার ভেসিকেল’। গবেষণাটি পরিচালনা করেছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শোভন সাহা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
চিম্বুকে ভালুকের আক্রমণে একজন আহত, ৫ বছরে ১০ জন হামলার শিকার
বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ায় আজ শুক্রবার সকালে ভালুকের আক্রমণে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০২১ সাল থেকে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। গত পাঁচ বছরে ১০ জন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের অধিকাংশ ম্রো জনগোষ্ঠীর। ভালুকের কারণে আহত হওয়ার ঘটনায় আবেদন না করায় এই পর্যন্ত কেউ ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ার কাইনপ্রে ম্রো (৩৫) পাড়া থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে জুমখেতে কাজ করতে যান। সেখানে জুমের পাশে কলাবাগানে কাজ করার সময় হঠাৎ কালো রঙের একটি ভালুক তাঁর ওপর আক্রমণ করে। ভালুকটি তাঁর পেটে ও মুখে আঘাত করতে থাকে। তাঁর চিৎকারে আশপাশে জুমের লোকজন এগিয়ে আসেন।
আহত কাইনপ্রে ম্রোর ভাই তনরুই ম্রো জানিয়েছেন, আশপাশের লোকজনের এগিয়ে আসা দেখে ভালুকটি কাইনপ্রে ম্রোকে ছেড়ে দিয়ে বনে পালিয়ে যায়। তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে কাইনপ্রে ম্রোকে উদ্ধার করে দুপুরে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়া জেলা শহর থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে। পাড়াটি রুমা উপজেলার গালেংগ্যা ইউনিয়নে পড়েছে।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আহত কাইনপ্রে ম্রোর পেটে ও মাথায় গভীর ক্ষত আছে। এ জন্য তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, থানচি তিন্দু ইউনিয়নে মেনপই ম্রো নামের একজন ২০২০ সালের ২৮ এপ্রিল প্রথম ভালুকের আক্রমণের শিকার হন। ওই একজনসহ ২০২১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৫ বছরে ১০ জন ভালুকের আক্রমণে আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে থানচিতে দুজন, রুমাতে তিনজন, আলীকদমে একজন ও বান্দরবান সদর উপজেলা চিম্বুক পাহাড়ে চারজন রয়েছেন। কারও মৃত্যু না হলেও তাঁদের মধ্যে কেউ চোখ হারিয়েছেন, কারও হাত–পা পঙ্গু হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা একজন মারমা ও একজন খুমি ছাড়া অন্যরা সবাই ম্রো।
বন বিভাগের বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আবদুর রহমান জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বনাঞ্চল কেটে উদ্যান বাগান ও জুমচাষ করা এলাকাগুলোতে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বাগানের কারণে ভালুক ও অন্যান্য বন্য প্রাণীরা আবাসস্থল ও বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যসংস্থান হারাচ্ছে। জীবনের তাগিদে তারা মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি হতে বাধ্য হচ্ছে। বন নির্ভর মানুষকে অন্যভাবে আয়ের সংস্থানের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সংরক্ষণ না হলে বন্য প্রাণীর সঙ্গে সহাবস্থান গড়ে উঠবে না। এভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা না হলে বন্য প্রাণী ও মানুষ কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না।