সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ধষ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ছিনতাইয়ের কবলে পড়া কুয়েত প্রাবাসী সিরাজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার তিনি ছুটিতে কুয়েত থেকে বাংলাদেশে আসেন। পরে তার স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান তাকে প্রাইভেটকার যোগে নোয়াখালী থেকে নিতে আসেন স্বজনরা।

বিমান বন্দর থেকে নোয়াখালীর চাটখিল যাওয়ার পথে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া এলাকায় মেনীখালী ব্রীজের কাছে গাড়িটি পৌছঁলে রাত ৩টার দিকে হালকা যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের সুযোগে ৭/৮ জনের একটি সশস্ত্র ছিরতাইকারী দল গাড়ীর সামনে এসে গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে গাড়িতে থাকা সবাইকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।

এ সময় তার কাছে থাকা নগদ প্রায় ১ লক্ষ সমপরিমান টাকা, বিদেশ থেকে আনা অন্যান্য জিনিসপত্র, মেবাইল ফোন ও পাসর্পোটসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনতাই করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ছিনতাইকারীরা। 

ছিনতাইকারীদের মারধরে এসময় প্রবাসীসহ তার স্ত্রী,সন্তান ও সাথে থাকা স্বজনরা আহত হয়। পরে তারা তাৎক্ষনিকভাবে নিরাপত্তার জন্য তাদের বহনকারী গাড়িটি নিয়ে সোনারগাঁ থানায় অবস্থান নেন।

সিরাজুল ইসলাম অশ্রুসিক্ত হয়ে বলেন, ছিনতাইকারীরা আমার সবকিছু নিয়ে গেছে ভাই। আমার পাসর্পোট ভিসা দরকারী কাগজপত্র সব নিয়ে গেছে। আমি কিভাবে আবার বিদেশ যাব তার কোন উপায় নাই। 

আমার ছোট দুটি সন্তান রাত থেকে এখনো না খেয়ে আছে তাদেরকে খাওয়ানোর মতো টাকাও এখন আমার কাছে নাই। তারা গাড়িতেই রাত কাটিয়েছে। অন্তত আমার কাগজপত্রগুলো যাতে উদ্ধার হয়  সে জন্য সোনারগাঁ থানার সহায়তা চাই।

সোনারগাঁ থানার ওসি আব্দুল বারী জানান, প্রবাসীর গাড়িতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় বুধবার একটি মামলা হয়েছে। এ মামলার সূত্রধরে এক ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে। লুট হওয়া টাকা, মালামাল ও কাগজপত্র  উদ্ধার এবং বাকি ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ছ নত ই ক গজপত র

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। 

আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’ 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’ 

আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’ 

নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে। 

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা