শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় ‘দ্য সাউন্ড অব মিউজিক’ মঞ্চস্থ
Published: 27th, February 2025 GMT
চঞ্চল মারিয়া প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ায় আর মনের আনন্দে গান গায়। নান বা খ্রিষ্টধর্মাচরণের জীবন বেছে নিয়ে এভাবে ভালোই কাটছিল মারিয়ার জীবন। কিন্তু হঠাৎ এই জীবনে ছেদ পড়ে। ক্যাপ্টেন জর্জ ফন ট্রাপের সাত সন্তানের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে মারিয়াকে দূরে পাঠিয়ে দেন নান লিডার মাদার অ্যাবেসে।
ধীরে ধীরে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয় মারিয়া। নিজ গুণে অবাধ্য সাত শিশুকে সহজেই নিজের ভক্ত বানিয়ে ফেলে। একটা পর্যায়ে শিশুদের বাবা কঠোর স্বভাবের ক্যাপ্টেন ফন ট্রাপ আকৃষ্ট হয় মারিয়ার প্রতি। গানে গানে এভাবে এগিয়ে চলে গল্প।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবন মিলনায়তনে ‘দ্য সাউন্ড অব মিউজিক’ মঞ্চস্থ হয়। ১৯৬৫ সালে তৈরি সংগীতনির্ভর চলচ্চিত্র ‘দ্য সাউন্ড অব মিউজিক’–এর ৬০তম বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে এই আয়োজন করে এক্সেল একাডেমি।
এক্সেল একাডেমির শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় গত বুধ ও বৃহস্পতিবার (২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি) দুই দিন নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। নাটকটি সফলভাবে মঞ্চস্থ করার জন্য অংশগ্রহণকারী শিশুরা প্রায় দেড় মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। অভিনয়ে অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেণির ২০ জন শিক্ষার্থী এবং সংগীতে ১৮ জন।
মূল চরিত্র মারিয়ার ভূমিকায় অভিনয় করে আরিশা ওহাব। ক্যাপ্টেন ফন ট্রাপের চরিত্রে দেখা যায় সাইফান রাসূলকে। নাটকটির চিত্রনাট্য রচনা ও নির্দেশনা দেন রকি খান।
বৃহস্পতিবার সমাপনী পরিবেশনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নন্দিত অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শৈশবে আমাদের ইচ্ছেগুলো নিজেদের উদ্যোগেই পূরণ করতে হয়েছে। অভিভাবক বা শিক্ষকেরা সেভাবে সহযোগিতা করেননি। শিল্পবোধ তো সব প্রাণেই জাগিয়ে তোলা দরকার। এরা সৌভাগ্যবান যে এদের স্কুল, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা তাদের ভেতরের স্পৃহাগুলো জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।’
সংগীতনির্ভর চলচ্চিত্র ‘দ্য সাউন্ড অব মিউজিক’–এর ৬০তম বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে মঞ্চ নাটক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।
সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।
জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।
আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।
এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।