বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে ম্যাচ ফিও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ১৮তম বোর্ড সভায় ক্রিকেটারদের বেতন ও ম্যাচ ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোববার (০৩ মার্চ) বোর্ড মিটিং শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
সংবাদ সম্মেলনে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে ফাহিম বলেন, “পারিশ্রমিক বেড়েছে, ম্যাচ ফিও বেড়েছে। বাড়ানোর ক্ষেত্রে টেস্ট ক্রিকেটার যারা, তাদের বৃদ্ধির পরিমাণটা অন্যদের তুলনায় একটু বেশি। এর মধ্য দিয়ে ওদের আগ্রহটা আমরা ধরে রাখতে চাই।”
আরো পড়ুন:
বিসিবির বোর্ড মিটিং
কেন্দ্রীয় চুক্তি, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতনবৃদ্ধিসহ আসছে যে সব সিদ্ধান্ত
জয় শাহের সাথে সাক্ষাতের পর পাকিস্তান যাবেন ফারুক
এদিন ২০২৫ সালে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের নামও চূড়ান্ত করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বৃদ্ধিকৃত বেতন পাবেন চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা। তবে কত শতাংশ বেতন বৃদ্ধি হয়েছে কিংবা ম্যাচ ফি কত শতাংশ বাড়ানো হয়েছে তা জানায়নি বোর্ড।
চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের সংখ্যা কতো এই ব্যাপারেও বোর্ড গোপনীয়তা রক্ষা করছে। ফাহিম বলেন, “এই মুহূর্তে সংখ্যাটা বলতে চাই না। একটা সংখ্যা আছে। তবে সেটা বলতে চাই না। পর্যালোচনা করার পরে হয়তো বাড়তে বা কমতে পারে। তবে অনুমোদন হয়ে গেছে। এখন যেটা দেখানো হবে, সেটাই চূড়ান্ত।”
এর আগে গত বছর ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছু হটে নাজমুল হাসান পাপনের বোর্ড। সেবার শেষ পর্যন্ত পারফরম্যান্স অনুযায়ী ক্রিকেটারদের বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে সবশেষ ২০২০ সালে বাড়ানো হয়েছিল ম্যাচ ফি। সেবার ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে টেস্টে ম্যাচ ফি হয়েছিল ৬ লাখ টাকা, ওয়ানডেতে ২ লাখ থেকে ৩ লাখ, আর টি-টোয়েন্টিতে ১ লাখ ২৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা। বর্তমানে চার বছর আগে বাড়ানো অর্থই পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।