রাজশাহীতে এক পরিবারে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ২ মামলা
Published: 16th, August 2025 GMT
রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিখর গ্রামে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি হত্যা মামলা, অন্যটি অপমৃত্যুর মামলা।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে নগরের মতিহার থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়।
এর আগে শুক্রবার সকালে বাড়ির দুটি ঘরে চারজনের লাশ পাওয়া যায়। এরা হলেন- মিনারুল ইসলাম (৩০), তাঁর স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলা (৩)। একটি ঘরের বিছানায় ছিল মনিরা ও শিশুকন্যা মিথিলার লাশ। পাশের ঘরের বিছানায় ছিল মাহিমের লাশ। সেই ঘরেই ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মিনারুলের লাশ ঝুলছিল।
ঘর থেকে দুই পাতার একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। এটি মিনারুল লিখে গিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চিরকুটে লেখা আছে, ‘‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এ কারণে যে, আমি একা যদি মরে যাই, তাহলে আমার বউ, ছেলে, মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভাল হলো।’’
চিরকুটে আরও লেখা আছে, ‘‘আমি মিনারুল প্রথমে আমার বউকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিনকে মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।’’
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক জানান, মিনারুলের আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা রুস্তম আলী বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। আর মনিরা, মাহিম ও মিথিলাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন মনিরার মা শিউলী বেগম।
ওসি আরও জানান, মামলা দুটিতে আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ নেই। আসামি অজ্ঞাত। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
শুক্রবার দুপুরে লাশ চারটি উদ্ধারের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছিল। শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লিভারপুল যখন ২–২ গোলে সমতায়, জোতাকে খুঁজেছেন স্লট
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নতুন মৌসুমের শুরুতে গতকাল বোর্নমাউথের বিপক্ষে লিভারপুলের প্রথম ম্যাচের সবটুকুজুড়ে ছিলেন প্রয়াত দিয়েগো জোতো। যেমন ৮৮ মিনিটে ম্যাচের মোড় বদলে দেওয়া গোলের নায়ক ফেদেরিকো কিয়েসার কথাই ধরা যাক।
লিভারপুলের ৪–২ গোলের দারুণ জয় কিয়েসা উৎসর্গ করেন জুলাইয়ের শুরুতে ভাই আন্দ্রেসহ সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করা জোতার জন্য। লিভারপুল তারকাকে স্মরণ করে কিয়েসা বলেন, ‘এটি ছিল জোতার দিন।’
অ্যানফিল্ডে গতকাল রাতে জোতাকে স্মরণ করার ক্ষণ বারবার ফিরেছে। ম্যাচের আগে, ম্যাচ চলাকালে এবং ম্যাচ শেষেও মনে করা হয়েছে জোতাকে। রুদ্বশ্বাস ম্যাচে জয়ের পর কাঁদতে কাঁদতে তালি দিয়ে সমর্থকদের সঙ্গে জোতাকে স্মরণ করেন মোহাম্মদ সালাহ। ম্যাচে গোল করে জোতার মতো উদ্যাপনও করেন মিসরীয় তারকা।
আরও পড়ুনপ্রিয় জোতা, এভাবে চলে যেতে নেই০৩ জুলাই ২০২৫ম্যাচের পর জোতাকে নিয়ে কিয়েসা বলেছেন, ‘এই গোলের মুহূর্তটা আমার জন্য দারুণ ছিল। কিন্তু আমার ভাবনা ঘিরে ছিল জোতা। আমি মনে করি, এটা তার দিনই ছিল। সমর্থকেরা আমাকে যা অনুভব করিয়েছে, যেভাবে তারা পুরো ম্যাচে তার গান গেয়েছে, এটা খুবই আবেগঘন ছিল। গোল করার পর আমার মনে পড়েছে তার পরিবার ও ভাই আন্দ্রের কথাও। এটুকুই শুধু আমি বলতে চাই।’
গ্যালারিতে উপস্থিত ছিল জোতার পরিবার। কিক-অফের আগে গাওয়া হয় লিভারপুলের ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’ গানটি এবং নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় ক্লপ এবং স্যার কেনি ডালগ্লিশ স্ট্যান্ডে ভক্তদের তৈরি করা বিশেষ মোজাইকও দেখা যায়। ম্যাচের আগে খেলোয়াড়েরা যখন মাঠে নামছিলে, দর্শকেরা তখন ‘ওহ, হি ওয়্যারস দ্য নম্বর ২০’ গানটি গেয়েছেন। এরপর ম্যাচের ২০তম মিনিটে একটি পতাকা ওড়ানো হয়, যাতে লেখা ছিল ‘অ্যানফিল্ড সব সময়ই তোমার বাড়ি’।
ম্যাচে একপর্যায়ে ২–০ গোলে এগিয়ে থাকা লিভারপুল ধাক্কা খায় এবং লড়াইয়ে সমতা ফেরায় বোর্নমাউথ। শেষ দিকে ম্যাচ যখন ২–২ সমতায়, তখন আর্নে স্লটের স্বাভাবিকভাবে মনে পড়েছিল জোতার কথা। ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন জোতা।
তাঁর অভাববোধ করেছেন জানিয়ে স্লট ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘সাধারণত যখন স্কোর ২-২ হয়, সবাই জানে আমি কোন খেলোয়াড়ের দিকে তাকাই। আমি চাইতাম জোতাকে নামাতে, কিন্তু মর্মান্তিক কারণে পারিনি। তবে ভক্ত আর খেলোয়াড়েরা আমাদের জন্য খেলেছে, যেভাবে জোতা আমাদের জন্য খেলত।’
আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলার জিতে মৌসুম শুরু লিভারপুলের১২ ঘণ্টা আগেস্লট যোগ করেন, ‘আমার মনে হয়, দিয়োগোকে ঘিরে যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে, তার শক্তি আর গভীরতাই ছিল আসল অনুভূতি। ম্যাচের পর আমি যেতে চাইনি, কারণ আজ আমাদের সমর্থকরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা বিশেষ ছিল।’
লিভারপুল কোচ আর্নে স্লট