কেউ চোরাকারবারে পুঁজি খাটান, কেউ মজুরিতে মালামাল বহন করেন
Published: 4th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ ও ভারতের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে মনু নদ। এপারে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ও দত্তগ্রাম। আর ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের একটি অংশ এই পথে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে চোরাই পথে বিভিন্ন পণ্য দেশে নিয়ে আসেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অনেকেই বংশপরম্পরায় এই চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে কিছু লোক সেই ‘পুরোনো অভ্যাস’ ছাড়তে পারছেন না। এক সময় চোরকারবারিদের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি ছিল। অনেকে এ পথ ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। কেউ অন্য পেশায় চলে গেছেন। তবে এ কারবার বন্ধ হয়ে যায়নি।
এলাকায় চোরাকারবারীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে খুনোখুনি পর্যন্ত হচ্ছে। পূর্ববিরোধের জের ধরে ১ মার্চ নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সালিশে চোরাকারবারীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জাবেল মিয়া (২৬) নামের এক যুবক নিহত হন। তাঁর বাড়ি দত্তগ্রামে। এ ব্যাপারে স্বজনদের পক্ষ থেকে পর দিন ২ মার্চ কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা হয়।
সরেজমিনে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিন্তপুর ও দত্তগ্রাম ঘুরে নানা শ্রেণি-পেশার ২০ থেকে ২৫ জন মানুষের সঙ্গে কথা হয়। তবে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তাঁরা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। স্থানীয় লোকজন বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে বর্তমানে নাসির বিড়ি ও বিভিন্ন ধরনের সিগারেট আসে। নিশ্চিন্তপুর ও দত্তগ্রামের কমপক্ষে শতাধিক লোক এ কাজে জড়িত। তাঁদের কেউ চোরাকারবারে পুঁজি খাটান। আবার কেউ দৈনিক ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা মজুরিতে ওপার থেকে এপারে মালামাল পরিবহন করে থাকেন।
আরও পড়ুনকুলাউড়ায় চোরাকারবারিদের দ্বন্দ্ব নিয়ে সালিসে দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১০২ মার্চ ২০২৫চোরাকারবার প্রসঙ্গে দত্তগ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘দাদায় করছে, বাপে করছে, এখন পুতেও করছে। পুরোনো অভ্যাস কেউ ছাড়তে পারছে না। তাঁদের বুঝাইতে গেলে খারাপ কথাবার্তা শোনায়। অযথা ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।’
স্থানীয় লোকজন বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত সীমান্তে চোরাকারবার চলে। এখন নদ শুকনা। হেঁটে মালামাল পরিবহন করা যায়। বর্ষায় নদ পানিভর্তি থাকে। তখন ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে মালামাল পরিবহন করা হয়। তবে ১ মার্চের ঘটনার পর থেকে চোরাকারবার বন্ধ রয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
বাবার অপেক্ষায় কেঁদে চলেছে নিহত জাবেল মিয়ার ছোট্ট মেয়ে। সোমবার শরীফপুর ইউনিয়নের দত্তগ্রামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রব র দ র চ র ক রব র
এছাড়াও পড়ুন:
রামগড়ে ভ্যাকসিন দেয়ার পর অর্ধশত গরু-ছাগলের মৃত্যু
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার লামকুপাড়া এলাকায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ভ্যাকসিন দেয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগাক্রান্ত গরু ও ছাগল মারা গেছে। গত ১৫ দিনে চারটি গরু ও প্রায় অর্ধশত ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে এলাকা পরিদর্শন করে মৃত পশুর ময়নাতদন্ত ও রোগাক্রান্ত পশুর নমুনা সংগ্রহ করেছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের চট্টগ্রাম থেকে আসা মেডিকেল টিমের সদস্যরা। তারা এলাকায় এসে খামারিদের সঙ্গে কথা বলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষে ৬ সদস্যের তদন্ত টিমের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা ভেটেনারি কর্মকর্তা ডা. সাহব উদ্দিন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে মহাজনী সুদের চাপে শ্রমিকের মৃত্যু, দাবি পরিবারের
নোয়াখালীর মাদরাসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
স্থানীয়রা খামারিরা জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পশু চিকিৎসকের পরামর্শে সরকারি ভ্যাকসিন দেয়ার পর এ ঘটনা ঘটেছে। খামারিরা মনে করছেন, এ সব ভ্যাকসিনে সমস্যা ছিল অথবা একই সিরিঞ্জে সবগুলো পশুকে ভ্যাকসিন দেয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ভ্যাকসিন দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পশুর অতিরিক্ত জ্বর, চামড়ায় গুটি ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতে গরু ও ছাগল মারা যায়। কোনো চিকিৎসায় আর বাঁচানো যাচ্ছে না।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে মৃত পশু মাটিচাপা দেয়া এবং আক্রান্ত পশুকে অন্য পশু থেকে আলাদা রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/রূপায়ন/বকুল