বাংলাদেশ ও ভারতের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে মনু নদ। এপারে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ও দত্তগ্রাম। আর ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের একটি অংশ এই পথে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে চোরাই পথে বিভিন্ন পণ্য দেশে নিয়ে আসেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অনেকেই বংশপরম্পরায় এই চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে কিছু লোক সেই ‘পুরোনো অভ্যাস’ ছাড়তে পারছেন না। এক সময় চোরকারবারিদের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি ছিল। অনেকে এ পথ ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। কেউ অন্য পেশায় চলে গেছেন। তবে এ কারবার বন্ধ হয়ে যায়নি।

এলাকায় চোরাকারবারীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে খুনোখুনি পর্যন্ত হচ্ছে। পূর্ববিরোধের জের ধরে ১ মার্চ নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সালিশে চোরাকারবারীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জাবেল মিয়া (২৬) নামের এক যুবক নিহত হন। তাঁর বাড়ি দত্তগ্রামে। এ ব্যাপারে স্বজনদের পক্ষ থেকে পর দিন ২ মার্চ কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা হয়।

সরেজমিনে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিন্তপুর ও দত্তগ্রাম ঘুরে নানা শ্রেণি-পেশার ২০ থেকে ২৫ জন মানুষের সঙ্গে কথা হয়। তবে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তাঁরা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। স্থানীয় লোকজন বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে বর্তমানে নাসির বিড়ি ও বিভিন্ন ধরনের সিগারেট আসে। নিশ্চিন্তপুর ও দত্তগ্রামের কমপক্ষে শতাধিক লোক এ কাজে জড়িত। তাঁদের কেউ চোরাকারবারে পুঁজি খাটান। আবার কেউ দৈনিক ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা মজুরিতে ওপার থেকে এপারে মালামাল পরিবহন করে থাকেন।

আরও পড়ুনকুলাউড়ায় চোরাকারবারিদের দ্বন্দ্ব নিয়ে সালিসে দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১০২ মার্চ ২০২৫

চোরাকারবার প্রসঙ্গে দত্তগ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘দাদায় করছে, বাপে করছে, এখন পুতেও করছে। পুরোনো অভ্যাস কেউ ছাড়তে পারছে না। তাঁদের বুঝাইতে গেলে খারাপ কথাবার্তা শোনায়। অযথা ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।’

স্থানীয় লোকজন বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত সীমান্তে চোরাকারবার চলে। এখন নদ শুকনা। হেঁটে মালামাল পরিবহন করা যায়। বর্ষায় নদ পানিভর্তি থাকে। তখন ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে মালামাল পরিবহন করা হয়। তবে ১ মার্চের ঘটনার পর থেকে চোরাকারবার বন্ধ রয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন।

বাবার অপেক্ষায় কেঁদে চলেছে নিহত জাবেল মিয়ার ছোট্ট মেয়ে। সোমবার শরীফপুর ইউনিয়নের দত্তগ্রামে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক রব র দ র চ র ক রব র

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকের প্রেমকাহিনির মঞ্চে ম্যাথুসের বিদায়ী সুর

* শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৬ টেস্টে বাংলাদেশের একটাই জয়। সেটি আবার শ্রীলঙ্কাতে। সেই জয় বাংলাদেশের শততম টেস্টে বলে আপনার তা খুব ভালোমতোই মনে থাকার কথা।

* টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ৬০০ ছাড়ানো একমাত্র স্কোরটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেটিও শ্রীলঙ্কাতে।

* টেস্টে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। হ্যাঁ, হ্যাঁ, সেটিও শ্রীলঙ্কাতেই।

শেষ দুটি আবার একে অন্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। দুটি একই টেস্টে। ২০১৩ সালে যে টেস্টে বাংলাদেশের ৬৩৮, সেটিতেই মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি। টানা ১২ টেস্টে হারার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ড্র-ও।

এই পুরোনো প্যাচাল খুব বেশি অপ্রাসঙ্গিক লাগবে না, যখন জানবেন ওই টেস্টটা হয়েছিল গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। পশ্চাৎপটে অতিকায় গল ফোর্টের পাথুরে কাঠামো আর দুই পাশে সাগর মিলিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের একটি। ২০০৪ সালে সুনামিতে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার পর পুনর্জন্ম নেওয়া গলের সেই মাঠেই আজ শুরু বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট। শুরু আসলে তিন ধরনের ক্রিকেটেই একে অন্যের নাড়ি-নক্ষত্র বুঝে নেওয়ার লড়াই। যাতে টেস্ট আছে, ওয়ানডে আছে, আছে টি-টোয়েন্টিও। দুই টেস্টের পর সাদা বলের সিরিজে তিনটি করে ম্যাচ।

আরও পড়ুনআমিনুল ইসলাম বুলবুলকে চিনতে হলে এই লেখাটা পড়তে হবে০২ জুন ২০২৫

দুই দল পরস্পরের খুব চেনা। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ২৬টি টেস্ট খেলেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ঘন ঘন দেখা হলে হৃদ্যতা যেমন হয়, তেমনি রেষারেষিও। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। গত কয়েক বছরে এই দুই দল মুখোমুখি হলেই মাঠে বা মাঠের বাইরে উত্তেজনার ফুলকি ছুটেছে। ‘টাইমড আউট’ হয়তো সেটির এক নম্বরে, এর বাইরেও নানা কিছু মিলে লঙ্কা-বাংলা এখন গনগনে এক দ্বৈরথের নাম।

গত চার বছর দুই দলের মধ্যে চতুর্থ টেস্ট সিরিজ। দুই দলের জন্যই রণকৌশল ঠিক করা তাই খুব সহজ হওয়ার কথা। বাংলাদেশ দলের জন্য হয়তো তা থাকছে না শ্রীলঙ্কা দলে নতুনের সমারোহে। ১৮ জনের দলের এক–তৃতীয়াংশই এখনো টেস্ট খেলার অপেক্ষায়। বাংলাদেশ দলেও কিছু পরিবর্তন আছে, তবে তা ধর্তব্যের মধ্যে নয়।

টেস্টের প্রস্তুতিতে গলে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল

সম্পর্কিত নিবন্ধ