শিক্ষকের উদ্দেশে বিএনপিপন্থী আইনজীবী বললেন, ‘তাঁর মাইরে মাফ নাই’
Published: 4th, March 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ইদ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ওই বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন অংশ নেন।
বিদ্যালয়ের ওই জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষকের নাম মো.
শিক্ষক আলতাফ হোসেন অভিযোগ করেন, পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন তাঁর মুঠোফোনে কল করে কুপিয়ে তাঁর মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন। এ–সংক্রান্ত একটি কলরেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষক আলতাফ ও আইনজীবী জাহাঙ্গীর—দুজনেই কলরেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে তিনজনের তালিকা পাঠিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কমিটির সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন। তবে তাঁর নাম প্রস্তাব করা হয়নি। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর শিক্ষক আলতাফকে দায়ী করে তাঁকে হত্যার হুমকি দেন এবং অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন। বিষয়টি আলতাফ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছেন এবং থানায় জিডি করেছেন। তাঁর সঙ্গে জাহাঙ্গীরের কোনো বিরোধ নেই বলে দাবি করেন আলতাফ হোসেন।
তবে কলরেকর্ডে থাকা হুমকির সত্যতা স্বীকার করলেও জাহাঙ্গীর হোসেন দাবি করেন, এর সঙ্গে সভাপতি হওয়ার কোনো বিষয় যুক্ত নয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কলরেকর্ড ভাইরাল হওয়া ভালো, এতে অসুবিধা নেই। সে গালমন্দ পায় দেখে তাঁকে গালাগাল করেছি। সে (আলতাফ) আমার ছোট ভাইর থেকে বিমা করার জন্য তিন লাখ টাকা নিছে। সেটা ফেরত দেয় না, তাই গালমন্দ করেছি। তাঁর (আলতাফ) মাইরে মাফ নাই। টাকা ফেরত দিবে, নইলে মাইর খাইবে—সোজা কথা।’
এ বিষয়ে ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জাহাঙ্গীর তাঁকেও গালমন্দ করেছেন এবং হুমকি দিয়েছিলেন। কমিটির সভাপতি মনোনয়নের বিষয়ে তাঁদের কিছু করার নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক যাচাই-বাছাই করে সভাপতি মনোনয়ন দেন বলে জানান তিনি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আলত ফ হ স ন আইনজ ব কর ছ ন এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।