চট্টগ্রাম মহানগরীর ভেতর অটোরিকশা-মাহিদ্রা যানবাহনের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে মুরাদপুর মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করেছেন চালকরা। এতে সড়কের একলেন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

মুরাদপুরের আশপাশের এলাকা, বহদ্দারহাট, রাহাত্তারপুল, কালামিয়া বাজার ও নতুনব্রিজের ৫ থেকে ৮ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সড়কে শতশত বাস-ট্রাকসহ গণপরিবহন আটকে পড়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় হাজারো সাধারণ যাত্রীদের। 

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন চালকেরা। শনিবার নিয়ম না মেনে গাড়ি পার্কিং করায় মামলা দেন দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেন টেম্পো (থ্রি-হুইলার) ও মাহিদ্রা চালকরা। 

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, চালকদের সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চালকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ সময় ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে আসেন। পরবর্তীতে কর্মসূচি স্থগিত করে তাদের দাবির বিষয়ে জানানোর জন্য থানায় একটি টিম আসতে বলি। ঘণ্টাখানেক পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

চালকরা অভিযোগ করে বলেন, ট্রাফিক পুলিশ বিনা কারণে টেম্পো ও থ্রি হুইলার গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দেয়। ৫০০ টাকার মামলা এখন ৬ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগে একটা দিলেও এখন ডাবল মামলা দিচ্ছে। ১৫ বছর আগে ৫ শ’ টাকা এক হাজার টাকার উপর মামলা ছিল না। এখন ৫ হাজার টাকা, ১০ হাজার টাকা, এমকি ১৫ হাজার টাকার মামলা দিয়ে চালকদের হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা এসব মামলা থেকে বাঁচতে আন্দোলন করছি। 

নাইমুল নামের এক রিকশাচালক বলেন, ১৫ দিন আগে সড়কের পাশে দাঁড়ানোয় আমার গাড়ির বিরুদ্ধে ৬ হাজার টাকার মামলা দেয়। বৃহস্পতিবার আবারও ৬ হাজার টাকার মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা আইন না মামলার বিষয়টি সঠিক না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ চ লকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ