টানা ১৩ দিন বৃদ্ধ বাবাকে হাত পা বেঁধে নির্যাতন সন্তানদের
Published: 8th, March 2025 GMT
খাটের উপর হাত-পা রশি দিয়ে চার দিকে টানা দিয়ে বাঁধা। এভাবে একদিন-দুইদিন নয়, টানা ১৩ দিন খাটের উপর বেঁধে রাখা হয় বৃদ্ধ খুইল্লা মিয়াকে। সন্তানদের সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধের ওপর এমন বর্বর ও অমানবিক অত্যাচার চালিয়েছেন তাঁর সন্তানরা। বিষয়টি পাশের ভবনের একজন দেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খবর দেন। শনিবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে এখন তিনি আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।
চট্টগ্রাম নগরের ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়ার শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং সোসাইটির খুইল্লা মিয়ার ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তাঁর দুই ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল কাদের বলেন, বাকলিয়ার এক বড় ভাই আমাদের বিষয়টি জানায়। তারপর আমরা ওই বাড়িয়ে গিয়ে দুই ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীর সামনে বৃদ্ধ খুইল্লা মিয়াকে চার হাত-পা বাঁধা অবস্থা দেখতে পাই। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসক তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন। এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খুইল্লা মিয়া সম্পত্তি ছেলেদের লিখে না দেওয়ায় তাঁকে ১৩ দিন হাত-পা বেঁধে অত্যাচার করা হয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছেন। দুই ছেলে কিছুদিন পর পর তার কাছ থেকে ৫ লাখ, দুই লাখ টাকা জোর করে নিতেন। টাকা না দিলেই অত্যাচার করতেন।
পুলিশ ও ছাত্রদল নেতারা জানান, বৃদ্ধ খুইল্লা মিয়ার হার্টে রিং পরানো আছে। ১৩ দিন নির্যাতনের কারণে তাঁর হার্টের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। তাঁর একটি ভবন আছে। ওই সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় সন্তানরা তাঁর উপর নির্যাতন চালায়। সন্তানরা তাঁকে পাগল বললেও নিজে পাগল নন বলে জানিয়েছেন খুইল্লা মিয়া।
বাকলিয়া থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, পৈত্রিক সম্পত্তির জন্য দুই জনকে ৫৪ ধারায় আটক করে আদালতে পাঠাই। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখনও এ ঘটনায় মামলা হয়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ১৩ দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২’
কক্সবাজার জেলার লোকসংগীত শিল্পী বুলবুল আক্তার। এই শিল্পী নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারের নিজস্ব ভাষা, সুর ও সংস্কৃতি। কালো বোরকার ফ্যাশনে সাধারণ ও সরল চেহারার এই শিল্পীর দরদি কণ্ঠে ফুটে ওঠে প্রেম, বিরহ, সমাজ ও প্রান্তিক জীবনের গল্প। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গেয়েছেন ‘মধু হইহই বিষ খাওয়াইলা’ ও ‘হালাসান গলার মালা’।
রসিক আড্ডার আয়োজনে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় আয়োজিত হয় জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মাঠে এই আয়োজন চলে। দুপুরে বৃষ্টি এলে ভিজে বৃষ্টিবিলাসে মেতে ওঠেন আয়োজক এবং অনুষ্ঠান দেখতে আসা অনেকে।
অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিল বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া। দূর থেকে মঞ্চে তাকালে বাঙালির ঐতিহ্যই চোখে ভেসে ওঠে। মঞ্চ তৈরি করা হয় প্রতীকী গ্রামবাংলার দৃশ্য কলাগাছ ও খড়ের ঘর দিয়ে। তা ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের বর্ষবরণকে ফুটিয়ে তুলতে এই আয়োজনে ছিল ধামাইল নাচ, চাকমা, মারমা ও খুমি জনগোষ্ঠীর নৃত্য ও আধুনিক নৃত্য। ব্যান্ডের মধ্যে ছিল ফিরোজ জঙ, আপনঘর, Sacrament-গারো ব্যান্ড, ব্যান্ড লাউ।
এই আয়োজনে গ্রামীণমেলায় ছিল নাগরদোলা, বানরখেলা, রণপা, বায়োস্কোপ ও পুতুলনাচ। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের খাবার ও পোশাকের স্টল ছিল।
আয়োজকদের একজন নাহিয়ান ফারুক বলেন, রসিক আড্ডা বাংলাদেশের সংস্কৃতি পাঠ ও তা চর্চা করে। রসিক আড্ডার তিনটি ম্যাগাজিন রণপা, কলন্দর ও সিনেযোগ বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতি–নির্ভর আলোচনা করে এবং তা জনপরিসরে ফুটিয়ে তোলে। এরই ধারাবাহিকতায় এই আয়োজন করা হয়েছে।