ইয়াবা সেবন করে ৮ বছরের এক শিশুকে গজারী বনের ভেতর নিয়ে যায় আরমান আলী নামের এক যুবক। সেখানে তাকে ধর্ষণের সময় ধারণ করা ভিডিও সামাাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে বন্ধুদের পাঠান ওই যুবক। এদিকে শিশুটির কান্নার শব্দ পেয়ে বনের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। একইসঙ্গে অভিযুক্ত আরমানকে আটকের পর গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। আজ শনিবার সন্ধ্যার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমীর দরগারচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বাসিন্দা। সে স্থানীয় একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। আর অভিযুক্ত আরমান (২৭) ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের মো.

শামসুল হকের ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দরগারচালা গ্রামের মাঝেরটেক এলাকার বাসিন্দা। 

স্থানীয়রা জানান, শনিবার দুপুরের পর হঠাৎ নিখোঁজ হয় শিশুটি। স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই এলাকার বনের গভীর থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান তারা। এর পর বনের ভেতর তল্লাশির সময় ভুক্তভোগী শিশুসহ আরমানকে পাওয়া যায়। শিশুর কাছে বিস্তারিত জেনে আরমানের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে ধারণা করা ভিডিও পাওয়া যায়। এ সময় ভিডিওটি কয়েকটি ইমো নাম্বারে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন সেখানে জড়ো হতে থাকেন। পরে আরমানকে গণধোলাইয় দিয়ে একটি গুদামে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন তারা।

শিশুর বাবা বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। স্ত্রী শারীরিক প্রতিবন্ধী। অভিযুক্ত যুবক আমার শিশুকন্যাকে বাড়ি থেকে গজারী বনে নিয়ে আসে। আমার শিশুর ওপর অমানুষিক অত্যাচার করে সে। শিশুকন্যা কান্নাকাটি করলে আশপাশের মানুষ গিয়ে উদ্ধার করে।’

আরমান মিয়া বলেন, ‘শিশুকে ধর্ষণ ও ভিডিও আমি নিজেই ধারণ করছি। আমার কয়েকজন বন্ধুকে ইমোতে পাঠিয়েছি। আমাকে কয়েকজন মিলে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করিয়েছে। এজন্য আমার মাথা ঠিক ছিল না।’ 

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামীম আখতার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্তকে। মোবাইল ফোনে ধারণ করা কয়েকটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে মোবাইল ফোন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র আরম ন

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ