চাটমোহরে বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ
Published: 9th, March 2025 GMT
পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে পাবনার চাটমোহরে এক বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেল চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগের তীর চাটমোহর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক মামুনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী বিএনপি নেতা ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের অভিযোগ করে বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জেরে ধরে মামুনের নেতৃত্বে তার ১০ থেকে ১২ জন সহযোগী এসে শুক্রবার বিকেলে আমার বাড়িতে হামলা করে। এ সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। বাড়িতে থাকা নারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মামুন ও তার লোকজন বাড়ির প্রধান ফটকে ভাঙচুরের চেষ্টা করে। না পেরে পেছন দিকে গিয়ে টিনের ঘর ও রান্নাঘর ভাঙচুর করে। এছাড়া বসতঘরের জানালা ভেঙে ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা চলে বাড়ির মহিলারা আগুন নেভায়।
বিএনপি নেতা সাইফল ইসলাম বলেন, পবাখালী মিনহাজ মোড় গ্রামের জামে মসজিদের বরাদ্দ ২ মেট্রিক টন চাল তোলা নিয়ে মসজিদ কমিটির দুই পক্ষের বিরোধ চলছে। সম্প্রতি কমিটির ক্যাশিয়ার মতিন চাল তুলে বিক্রি করে টাকা তার কাছে রেখেছিল। আমার বাড়ি এক জায়গায়, মসজিদ অন্য জায়গায়। সেই মসজিদ কমিটিরও আমি কেউ নই। অথচ ওই মসজিদের চাল আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছে এই মামুন গং। এছাড়াও শুক্রবার দুই পক্ষের মারামারির ঘটনাতেও আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। আমি এসব ষড়যন্ত্রে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে মামুনের বিচার চাই।
ফৈলজানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, মূলত আমার চাচা সাইফুল ইসলাম এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করেন। কেমন মানুষ সবাই জানে। তাকে হেয় করে নিজে বড় হতে চায় মামুন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে সে। যাতে আমার চাচাকে নিচে ফেলে সে উপরে উঠতে পারে, বড় নেতা হতে পারে এজন্য মামুন নানাভাবে ষড়যন্ত্র আর হয়রানি করে যাচ্ছে।
ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক পালন বলেন, আমি শুনে সাইফুল ইসলামের বাড়িতে এসে ভাঙচুরের ঘটনা জানতে পারি। বিষয়টি দুঃখজনক। নিজ দলের নেতাকর্মীদের এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আমি এই হামলা ভাঙচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দলের নেতৃবৃন্দের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চাটমোহর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক মামুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মিনহাজ মোড় জামে মসজিদের চাউল চুরির ঘটনা এলাকাবাসী জেনে যাওয়ায় বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম ও তার লোকজন মুসল্লিদের বাড়িতে গিয়ে মারধর করেছে। সেই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী তার বাড়িতে ভাঙচুর করেছে। এখানে আমি জড়িত নই। কূল কিনারা না পেয়ে তিনি এখন আমার দিকে মিথ্যা অভিযোগ ছুঁড়ছেন।
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, এ ঘটনায় কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত র ঘটন মসজ দ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
কারিগরি শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণাকে ‘সহিংস আন্দোলনের উসকানি ও গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আলোচনায় বসে। দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমাধারী—উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ডাকে। সবার যুক্তিতর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়, যাতে কারও প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য না হয়।
লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাই অবরোধ ডেকে সহিংস আন্দোলনের জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে কেন জনদুর্ভোগ করে অবরোধের উসকানি দেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা ও গভীর ষড়যন্ত্র, যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাঁরা অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা খতিয়ে দেখা দরকার।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য গায়ের জোর খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবরোধের প্রয়োজন নেই। যৌক্তিক দাবি জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।