২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায় চিপস কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী (৭)। এর তিন দিন পর ওই শিশুর লাশ পাওয়া যায়। পরে তদন্তে জানা যায়, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ মামলায় লক্ষ্মণ দাশ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

তবে এ ঘটনার তিন বছরেও মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) পৌঁছায়নি আদালতে। ডিএনএ প্রতিবেদন না আসার অজুহাত দেখিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে নিহত শিশুর পরিবার। এতে অবিলম্বে ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দিয়ে ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হত্যার শিকার শিশুর মা, বোন, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের আহ্বায়ক আসমা আক্তার, শিক্ষার্থী পুষ্পিতা নাথ, সাদিয়া আফরিন, হামিদ উদ্দিন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বিচারের দাবিতে ওই শিশুর বোন বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার পরিবার শুধু থানা-পুলিশ করছে। এখনো ডিএনএ প্রতিবেদন আসেনি। আমাদের দাবি, অন্তত আদালতে মামলাটা উঠুক।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষার্থী পুষ্পিতা নাথ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আসামির স্বীকারোক্তির পর ওই শিশুর পরিবারের প্রত্যাশা ছিল, তাঁরা দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার পাবেন। কিন্তু গত তিন বছর শিশুটির পরিবার বিচার দূরে থাকুক, এখনো মামলার কোনো অগ্রগতিরই মুখ দেখতে পায়নি। তদন্তকারী পুলিশ মামলাটির চার্জশিট দিতে পারেনি। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও নানা অজুহাতে পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আইনজীবীদের বক্তব্যের বরাতে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আইনজীবীদের অভিমত, ধর্ষণ মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় ডিএনএ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হলেও, চার্জশিট দিতে ডিএনএ রিপোর্ট প্রয়োজন নেই। আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতেই এ মামলায় পুলিশ চার্জশিট দেওয়া যায়। ডিএনএ রিপোর্ট না আসাকে অজুহাত দেখিয়ে চার্জশিট না দেওয়া তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ছাড়া কিছু নয়।

শিশুটির পরিবার ও শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চার দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো, আগামী এক বছরের মধ্যে এই ধর্ষণ ও হত্যা মামলার চার্জশিট ও ডিএনএ রিপোর্ট প্রদান করতে হবে; ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাকাণ্ড ও নারীর প্রতি সহিংসতার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে; বিভাগীয় পর্যায়ে পর্যন্ত, মানসম্মত পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ ল্যাব স্থাপন করতে হবে এবং ধর্ষণ মামলায় নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতি আধুনিকায়ন করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড এনএ র প র ট র পর ব র ত ন বছর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল 

বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।

তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড