শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের মসুরগাঁও এলাকার মেঘনা নদীর তীর থেকে তানিয়া আক্তার (৩০) ও তার মেয়ে রাবেয়ার (৪) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে পুলিশ মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে।

ওই ঘটনায় মেয়ের জামাই আব্দুর রহমানসহ তিনজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন তানিয়া আক্তারের বাবা দুলাল হাওলাদার।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে গোসাইরহাট থানার ওসি মাকসুদ আলম বলেন, “ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দুইটি আজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ছাত্রীকে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ অভিযোগ: ছাত্রদল নেতাসহ ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শিক্ষার্থীকে ইঙ্গিত করে অশোভন আচরণ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

মারা যাওয়া তানিয়া বরিশালের কাজিরচর থানার দুলাল হাওলাদারের মেয়ে।

পুলিশ জানায়, গোসাইরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে মেঘনা নদী প্রবাহিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মসুরগাঁও এলাকার মেঘনা নদীর তীরে স্থানীয়রা এক নারী ও শিশুর মরদেহ দেখতে পান। তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ১০টার দিকে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে। মারা যাওয়া নারী ও শিশুর পরিচয় শনাক্তের জন্য আশপাশের এলাকায় মাইকিং করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা থানায় এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।

গোসাইরহাট থানার ওসি মাকসুদ আলম বলেন, “গতকাল বিকেলেই আমরা নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করি। তারা সম্পর্কে মা ও মেয়ে। এ ঘটনায় তানিয়া আক্তারের বাবা দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে মেয়ের জামাই আব্দুর রহমানসহ তিনজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন।”

তিনি আরো বলেন, “ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার সকালে মরদেহ দুইটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি, তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ নদ উদ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ