সিনেমার পর ওয়ার্নারের চোখ এবার রাজনীতিতে
Published: 18th, March 2025 GMT
অভিনয়ে নাম লিখিয়েছেন। আসছে ২৮ মার্চেই মুক্তি পাবে ডেভিড ওয়ার্নার অভিনীত ভারতীয় সিনেমা। এরই মধ্যে আবার রাজনীতিতে নামার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ওপেনার।
গত বছরের জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন ওয়ার্নার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট এখনো খেলছেন ওয়ার্নার। ক্যারিয়ারের এমন পরিস্থিতিতে ভিন্ন এক ক্যারিয়ারের প্রসঙ্গ তুলেছেন এই কিংবদন্তি। কাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ওয়ার্নার লিখেছেন, ‘আমার মনে হয় আমার সংসদ সদস্য হওয়া উচিত। এ নিয়ে আপনাদের কী ভাবনা?’
ওয়ার্নারের এমন পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক ভক্ত আবার জানতে চেয়েছেন—ভারত না অস্ট্রেলিয়ার, কোন দেশের সংসদের কথা বলেছেন ওয়ার্নার। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দীর্ঘদিন আইপিএল খেলার কারণে ভারতে ওয়ার্নারের সমর্থক অনেক বেশি। তাঁদের অনেকেই ওয়ার্নারকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসরণ করেন। তাঁদের কেউ কেউ মজা করে ওয়ার্নারের কাছে এমন প্রশ্ন করেছেন।
আবার অনেক সমর্থক গুরুত্বের সঙ্গেই দেখেছেন ওয়ার্নারের ভাবনাকে। এই যেমন স্টিভ অ্যান্ডারসন নামের একজন বলেছেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে? যদিও এখন আরও বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তবে আপনি কি জানেন কী কী প্রয়োজন? আপনার একজন ম্যানেজার, স্বেচ্ছাসেবক এবং অর্থের প্রয়োজন হবে। সৌভাগ্যবশত, আপনার একটা পরিচিতি আছে। আপনি যদি প্রধান দলগুলোর একটিতে যোগ না দেন, তবে সিনেটের কথা ভাবতে পারেন। ভোটের পদ্ধতি আলাদা বলে একটু সহজ হতে পারে সেটি। আপনি কী ভাবছেন?’
আরও পড়ুনআইপিএলের প্রথম আদিবাসী ক্রিকেটার ‘ঝাড়খন্ডের ক্রিস গেইল’ ৪০ মিনিট আগেএ মন্তব্যটি শেয়ার করে ওয়ার্নার জানিয়েছেন তাঁর ভাবনা, ‘আপনার বিশ্লেষণ ভালো লেগেছে। তবে, সবাই আসলে কী চায় এবং কী প্রয়োজন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। কম আয়কর, মানুষের হাতে বেশি টাকা, জিএসটি (পণ্য ও সেবার কর) বাড়ানো—এগুলোর মধ্যে কোনটা সমাধান হতে পারে, নিশ্চিত নই। তবে আমাদের আগে নিজেদের দেশকে সুরক্ষা দিতে হবে!!! অস্ট্রেলিয়ান পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
এখন দেখা যাক ওয়ার্নার রাজনীতিতে যোগ দেন কি না! এর আগে অস্ট্রেলিয়ার রাগবি লিগের কিংবদন্তি গ্লেনলাজারাসও ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে অল্প সময়ের জন্য রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর সাবেক রেইডার্স সতীর্থ ম্যাল মেনিঙ্গার অভিজ্ঞতা অবশ্য খুবই বাজে। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথম রেডিও সাক্ষাৎকারেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
আরও পড়ুনএক মিনিট নীরবতা পালনের পর ক্লাব জানতে পারল খেলোয়াড়টি মারা যাননি ১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ত
এছাড়াও পড়ুন:
দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’
তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’
ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।
ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’
পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।
গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।
তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫