দুপুরের পর থেকেই শিলংয়ের তাপমাত্রা কমতে থাকে। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা নামে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের বিপরীত তাপমাত্রা বাংলাদেশে। এই সময়ে ঢাকার তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে।

ঢাকায় যেখানে গরম অনুভব হয়, সেখানে শিলংয়ে ঠান্ডা। দুই রকম কন্ডিশনে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। তবে শিলংয়ের এমন কন্ডিশন ব্রিটিশ প্রবাসী ফুটবলার হামজা দেওয়ান চৌধুরীর জন্য সমস্যার নয়। কারণ ইংল্যান্ডে মাইনাস ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটবল খেলার অভ্যাস আছে তার। বরং সেখানকার কন্ডিশনে নিজের সেরাটা মেলে ধরার সুবর্ণ সুযোগ হামজার জন্য।

২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় বাংলাদেশ ফুটবল দল। 

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৯০৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত শিলং। শহরের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে এই প্রথম বড় কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ১৯ মার্চ প্রীতি ফুটবল ম্যাচে মালদ্বীপকে হারানো ভারত আসল লড়াইয়ের আগে সেরা প্রস্তুতি নিয়েছে। 

কোনো দেশের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলা জামাল ভূঁইয়া-তারিক কাজীরা শিলংয়ের আবহাওয়ায় খাপ খাওয়ার জন্য সৌদি আরবের তায়েফে গিয়ে ক্যাম্প করেছিলেন। তায়েফে সন্ধ্যার পর ঠান্ডা পড়ে, বাংলাদেশ দল সেই সময় অনুশীলন করেছিল। তবে শিলংয়ে শুধু ঠান্ডা নয়, বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ সেখানকার উচ্চতা। সেই উচ্চতা ও ঠান্ডা কন্ডিশন জয় করার চ্যালেঞ্জ নেওয়া বাংলাদেশ তাকিয়ে হামজার দিকে।

লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেকের অপেক্ষায় হামজা দেওয়ান চৌধুরী। লিস্টার সিটির জার্সিতে এফএ কাপের শিরোপা জেতা এ ফুটবলারের প্রতি একসময় আগ্রহ দেখিয়েছিল স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনাও। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য সান’-এর একটি প্রতিবেদনে এমনটাই উঠে এসেছে। ২০১৮-১৯ সালে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন হামজা। যুব দলের হয়ে সাতটি ম্যাচ খেলেন তিনি।

দ্য সানের মতে, কোনো ত্রুটি ছাড়াই খেলা এবং কড়া ট্যাকলের দক্ষতায় ইংলিশ যুব দলে জায়গা করে নেন হামজা। সেই সময় বার্সেলোনা দলবদলের কথাও হয়েছিল। বার্সা যাওয়ার আলোচনাটা চূড়ান্ত ধাপে না যাওয়াতেই হামজাকে পেয়েছে বাংলাদেশ।

হামজা উন্মাদনার মধ্যে গতকাল শিলংয়ে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। বৃহস্পতিবার মেঘালয় রাজ্যের রাজধানীতে পৌঁছানো হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল এবার মাঠের লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেমেছে। শুক্রবার ১ ঘণ্টার অনুশীলনে বেশ ফুরফুরে দেখা গেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীদের। গতকালও বাংলাদেশের অনুশীলনে মধ্যমণি ছিলেন হামজা। কখনো তারিক কাজী, আবার কখনো বা সাদ উদ্দিনের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে ওঠেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের এ ডিফেন্ডার। হামজাকে নিয়ে বাংলাদেশ দল যেন এক সুখী পরিবার। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানীর ছোট ভাই মো. আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তিনি উত্তীর্ণ হন।

আজ বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম আরফান হোসেনের হাতে নিয়োগপত্র হস্তান্তর করেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’ তিনি বলেন, সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১১ সালে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছিল কিশোরী ফেলানী খাতুন। সীমান্ত হত্যার সেই মর্মস্পর্শী দৃশ্য দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ফেলানীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরমান হোসেনের (২১) এই নিয়োগ যেন দীর্ঘদিনের এক চাপা বেদনার মাঝে আশার দীপ্তি এনে দিয়েছে। পরিবারসহ স্থানীয়দের বিশ্বাস, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে যাওয়া বোন ফেলানী খাতুনের অসমাপ্ত স্বপ্ন একদিন আরমান হোসেন পূর্ণ করবেন।

এইচএসসি পাস আরফান হোসেন নিয়োগপত্র পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, ছেলের এই চাকরি তাঁর যোগ্যতায় হয়েছে, সবার দোয়াও ছিল। তাঁর ছেলে চাকরিজীবনে সততা ও দক্ষতার পরিচয় দিতে সক্ষম হবে। তাহলে তাঁর মেয়ে ফেলানীর আত্মা শান্তি পাবে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্তে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার পর কাঁটাতারে ঝুলে ছিল বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের মরদেহ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ