বেসরকারি ব্যাংকে ইনভেস্টমেন্ট অফিসার নিয়োগ
Published: 16th, August 2025 GMT
ব্যাংক এশিয়া পিএলসি ইনভেস্টমেন্ট অফিসার (আপটু ইও) পদে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ দেবে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি এ-সংক্রান্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আগ্রহী প্রার্থীরা ২১ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা—প্রার্থীদের যেকোনো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। এমবিএ/এমবিএম বা সমমানের ডিগ্রিধারীরা অগ্রাধিকার পাবেন। পেশাগত ডিগ্রি যেমন CIPA, CIBFP, CSAA, CIBF, DAIBB বা DIB থাকলে বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
আবেদনকারীদের ব্যাংকিং খাতে অন্তত চার থেকে ছয় বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এর মধ্যে ন্যূনতম তিন বছর ইসলামি ব্যাংকিংয়ের ইনভেস্টমেন্ট অপারেশনে কাজের অভিজ্ঞতা আবশ্যক। কম্পিউটার, এমএস অফিস এবং সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রমে দক্ষতা থাকতে হবে।
আরও পড়ুনমাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিশাল নিয়োগ, পদ ১১৭০৯ আগস্ট ২০২৫কাজের দায়িত্বনিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ক্লায়েন্ট অ্যাপ্রেইজাল রিপোর্ট ও ইনভেস্টমেন্ট প্রস্তাবনা তৈরি, ঝুঁকি মূল্যায়ন, ক্লায়েন্ট পরিদর্শন, বিনিয়োগ-সংক্রান্ত কাগজপত্র সম্পাদন, শরিয়াহ্ নীতিমালা মেনে বিনিয়োগ বিতরণ, বিনিয়োগ মনিটরিং, পুনরুদ্ধারসহ নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
কর্মস্থলএটি পূর্ণকালীন চাকরি। নির্বাচিত প্রার্থীদের বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে কাজের সুযোগ থাকবে।
আরও পড়ুনপানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পদ ২৮৪১০ আগস্ট ২০২৫একনজরেপদ: ইনভেস্টমেন্ট অফিসার (আপটু ইও)
প্রতিষ্ঠান: ব্যাংক এশিয়া পিএলসি
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতকোত্তর (এমবিএ/এমবিএম অগ্রাধিকার)
অভিজ্ঞতা: ৪-৬ বছর (অন্তত ৩ বছর ইসলামি ব্যাংকিংয়ে)
কর্মস্থল: বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে
আবেদনের শেষ তারিখ: ২১ আগস্ট ২০২৫
আরও পড়ুনবেসরকারি ব্যাংকে রিলেশনশিপ অফিসার নিয়োগ০৯ আগস্ট ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা নিয়ে ট্রাম্পের বিশ দফা যেন বিশটি ‘বিষের বড়ি’
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই যুদ্ধে ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত, ১ লাখ ৬৮ হাজার জন আহত এবং কয়েক হাজার শিশু অনাহারে মারা গেছে। সর্বশেষ গাজা সিটি দখল করতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলে।
এই নির্মম চক্র ‘ভাঙতে’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক প্রস্তাব ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি একটি এআই-জেনারেটেড ভিডিও পোস্ট করে গাজাকে মার্কিন দখলে নিয়ে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর স্বপ্নের কথাও জানান দিয়েছিলেন তিনি।
নতুন করে আবারও তিনি ২০ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। যেখানে হামাসকে উচ্ছেদ করে ‘টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি কমিটি’ গঠনের কথা রয়েছে। সেই কমিটিকে তদারক করার জন্য একটি ‘শান্তি পরিষদ’ গঠন করা হবে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে। তবে চেয়ারম্যান প্রধান থাকবেন ট্রাম্প নিজেই।
সোমবার হোয়াইট হাউস এই পরিকল্পনা প্রকাশের আগে চলমান জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে আরব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। এরপর তিনি নেতানিয়াহুর সম্মতি গ্রহণ করেন এবং হামাসকে হুমকি দিয়েছেন, ‘মেনে নাও, নইলে যুদ্ধ চলবে।’
কিন্তু এই ‘শান্তি পরিকল্পনা’ কি শান্তি আনবে, নাকি ফিলিস্তিনিদের জন্য এটা হবে একটা নতুন শৃঙ্খল? ফিলিস্তিনি-আমেরিকান বিশ্লেষক ওমর বদ্দার এই পরিকল্পনাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘পয়জন পিল’ বলে। তিনি আল–জাজিরাকে বলেছেন, কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও এর মূল উপাদান ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হয়েছে। গাজার বাসিন্দা ইবরাহিম জুদেহ বলেন, ‘এটি অবাস্তব—যুদ্ধ চলবে।’
বিষাক্ত স্বপ্নের সূচনা যেভাবে হয়ট্রাম্পের বর্তমান পরিকল্পনা মূলত তার ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর ‘গাজা রিভিয়েরা’ প্রস্তাবেরই ছায়া। সে সময় তার ‘গাজা রিকনস্ট্রাকশন, ইকোনমিক অ্যাকসিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট (GREAT) প্রকল্পে গাজাকে দুবাই-স্টাইলের রিসোর্টে রূপান্তরের কল্পনা করা হয়, যেখানে থাকবে স্কাইস্ক্র্যাপার, কৃত্রিম দ্বীপ, ‘ট্রাম্প রিভিয়েরা’ এবং ‘ইলন মাস্ক স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং জোন’।
৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ৯ হাজার ডলারের ‘রিলোকেশন প্যাকেজ’ দিয়ে ‘স্বেচ্ছায়’ অন্য দেশে সরানোর পরিকল্পনা ছিল। পরে আরব রাষ্ট্রনেতারা ও জাতিসংঘ এটিকে ‘পাগলামি’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। এমনটি ইসরায়েলে জনপ্রিয় দৈনিক হারেৎজ ‘ট্রাম্পিয়ান গেট-রিচ-কুইক স্কিম’ বলে উপহাস করে।
পরে প্রকাশ পায় যে, এই প্রস্তাবের নেপথ্যে ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তদন্তে উঠে আসে, ব্লেয়ারের ‘টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জ’ (টিবিআই) ইসরায়েলি ব্যবসায়ী ও বিসিজির সঙ্গে মিলে ‘গাজা ইকোনমিক ব্লুপ্রিন্ট’ তৈরি করে এবং ইসরায়েল পরিচালিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) নিরাপত্তা প্রধান সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ফিল রিলে সে সময় ব্লেয়ারের সঙ্গে লন্ডনে সাক্ষাৎ করে প্রজেক্ট পিচ করেন।
সেই ‘রিভিয়েরা’র ছায়াই ট্রাম্পের বর্তমান পরিকল্পনায় ফিরে এসেছে। ধারণা করা হয়, সে কারণেই বর্তমান পরিকল্পনায় ব্লেয়ার ‘ট্রানজিশনাল অথরিটি’র পরিচালক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুনট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা: নেতানিয়াহুর পরাজয় নাকি হামাসের আত্মসমর্পণ২১ ঘণ্টা আগেব্লেয়ারের বিতর্কিত ভূমিকাপরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে গাজার শাসন একটি ‘অস্থায়ী টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি কমিটি’, যা ‘শান্তি পরিষদ’–এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। কিন্তু কমিটির সদস্য কে নির্বাচন করবে? প্রক্রিয়া কী? এর কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। ব্লেয়ারকে বলা হয় ২০০৩-এর ইরাক যুদ্ধের ‘স্থপতি’। চিলকট রিপোর্ট প্রমাণ করে, ব্লেয়ার শান্তিপূর্ণ বিকল্প চূড়ান্ত না করে যুদ্ধে যান, যা লাখ লাখ জীবন ধ্বংস করেছে।
ওমর বদ্দার বলেন, ‘ব্লেয়ার ও ট্রাম্পের রেকর্ড অপরাধমূলক। ব্লেয়ার ইরাক আক্রমণের মিথ্যার অজুহাতের নায়ক ছিলেন; আর ট্রাম্প হলো পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতি স্থাপন, গোলান মালভূমি দখল, জেরুজালেম ইসরায়েলের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সমর্থক।’
জাতিসংঘের আবাসন বিশেষজ্ঞ বালাকৃষ্ণান রাজাগোপাল আল–জাজিরাকে বলেছেন, ‘ব্লেয়ারের নেতৃত্বে ‘ট্রানজিশনাল অথরিটি’ মাধ্যমে স্থায়ী বাফার জোন তৈরি গাজার ভূমি দখলের একটি ঘৃণ্য প্রচেষ্টামাত্র।’ অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর ডেভিড শুব্রিজ বলেছেন, ‘ব্লেয়ার গাজায় কেন, তার তো ইরাক যুদ্ধের জন্য বিচারের কাঠগড়ায় থাকা উচিত।’ লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিনের মতে, ‘ব্লেয়ার মধ্যপ্রাচ্যে থাকা উচিত নয়—তার ইরাক সিদ্ধান্ত হাজার হাজার জীবন কেড়েছে।’
২০০২ সালে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তিপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে, বিশেষ করে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের লক্ষ্যে ‘কোয়ার্টেট অন দ্য মিডল ইস্ট’ নামের একটি আন্তর্জাতিক গ্রুপ গঠিত হয়েছিল। ব্লেয়ার ছিল এই গ্রুপের প্রতিনিধি। ব্লেয়ারের দায়িত্ব ছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রতিষ্ঠান গঠনে সহায়তা, অর্থনৈতিক প্রকল্প তত্ত্বাবধান এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় সহযোগিতা করা। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, তিনি তখন অবৈধ ইসরায়েলি বসতি রোধ করতে কোনো ভূমিকা রাখেননি, বরং ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছেন। এমনকি ২০১৪ সালে ইসরায়েল গাজায় অভিযান চালালেও ব্লেয়ার নীরব থাকেন।
হামাসকে নিরস্ত্র করা নাকি স্থায়ী দখলের চেষ্টাপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাস অস্ত্র ছাড়লে ইসরায়েল ‘মান, অগ্রগতি ও সময়সীমা’ বিবেচনা করে সেনা প্রত্যাহার করবে। কিন্তু কোনো টাইমলাইন নেই। গাজা ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল একটা ‘নিরাপত্তাবেষ্টনী’ দিয়ে রাখবে। কিন্তু কে ঠিক করবে যে ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ হয়েছে কি না?
ওমর বদ্দার বলেন, ‘ইসরায়েল অনির্দিষ্টকাল দখল চালাবে, প্রত্যাহারের কোনো গ্যারান্টি নেই। ফিলিস্তিনিরা বন্দি জীবন যাপন করবে।’ ফিলিস বেনিস বলেন, ‘কোনো নিশ্চয়তা নেই যুদ্ধ শেষ হবে। ইসরায়েল জিম্মি ফিরিয়ে নিয়ে বলতে পারে, ‘সহযোগিতা পাচ্ছি না, যুদ্ধে ফিরব।’ হোয়াইট হাউসের মানচিত্রে দেখানো হয়েছে, তৃতীয় ধাপে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘নিরাপত্তা বাফার জোন’ ধরে রাখবে।
একটি ‘অস্থায়ী আন্তর্জাতিক শান্তি বাহিনী’ (আইএসএফ) নিরাপত্তা দেখবে। কিন্তু কোন দেশ? ম্যান্ডেট কী? ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো হাজার হাজার শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, আবার তিনি জাতিসংঘের অধিবেশনে শিগগিরই ইসরায়েলকে ইন্দোনেশিয়া ‘স্বীকৃতি’ দেওয়ার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেছেন।
তা ছাড়া এই বাহিনীকে কি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা দেওয়া হবে? সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক অ্যালন পিনকাস বলেন, ‘এটি একটি সিমুলেশন গেম—জটিল, বিতর্কিত। নেতানিয়াহু চুক্তি ব্যর্থ করতে সময় কিনবেন। হামাস ৭২ ঘণ্টায় বন্দী মুক্তি দেবে না।’
হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর সোমবার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প