স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেট ভাঙাসহ তিন দফা দাবিতে বরিশালে চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বেলা একটার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনের সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি এ ঘোষণা দেন।

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আগামীকাল রোববার বেলা ১১টায় নগরের সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে বলে জানান মহিউদ্দিন রনি।

সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘আমরা ১৮ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলাম। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। হামলার পর উল্টো হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল কোতোয়ালি মডেল থানায় আমাদের ৪২ জনকে আসামি করে অভিযোগ করেছেন। আমরা তাঁর (বাদী) কাছে মামলার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, হাসপাতালের পরিচালকের নির্দেশে তিনি মামলা করেছেন।’

মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, হামলায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে খিচুড়ি পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। গতকাল শুক্রবার দুপুরেও তাঁদের জন্য তেহারি পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। যাঁরা এই হামলা করেছেন, তাঁরা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। আমরা এই হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি। এই হামলার প্রতিবাদে ও চলমান স্বাস্থ্য সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আগামীকাল নগরের সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ কমর্সূচি করা হবে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মানববন্ধনে হামলার অভিযোগে মহিউদ্দিন রনিসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল।

১৭ দিন ধরে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের তিন দফা দাবিতে বরিশালে নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ছাত্র–জনতার ব্যানারে আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত শুক্রবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ছয় দিনে বরিশাল–ঢাকা মহাসড়ক সাড়ে ২৯ ঘণ্টা অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে কয়েকজন শিক্ষার্থী দাবি আদায়ে তিন দিন ধরে অনশন করছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বরিশালে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর। তিনি ওই দিন শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজের সম্মেলনকক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, চিকিৎসক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরিশালে না আসা পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন না বলে জানান। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে অনশনকারী শিক্ষার্থীরা কয়েকজন কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করেছেন অভিযোগে কর্মচারীরা একত্র হয়ে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেন। এ সময় কয়েকজনকে মারধর করতেও দেখা যায়। পরে তাঁদের অনশন পণ্ড হয়ে যায়।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো, শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজসহ দেশের সব সরকারি হাসপাতালে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নিয়োগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ দেশের সব হাসপাতালে দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, দলীয় লেজুড়বৃত্তিক চিকিৎসকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ডিজিটাল অটোমেশন ও স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক টাস্কফোর্স গঠন এবং স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনকে জনগণের ভোগান্তির বিষয় শুনে তদন্ত সাপেক্ষে আবার সুপারিশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জোর পদক্ষেপ নেওয়া।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল র স মন কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে দোকান থেকে কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

খাগড়াছড়ি জেলা শহরে একটি ফার্মেসির ভেতর থেকে সুমিত চাকমা (১৭) নামের এক কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল গেট এলাকায় অবস্থিত হীরক মেডিকেল সেন্টার নামের ফার্মেসি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সুমিত চাকমার বাড়ি মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি দাকোপ এলাকায়। সে পুণ্যবসু চাকমার ছেলে।

দোকানের মালিক রুবেল চাকমা জানান, সকাল নয়টার দিকে দোকানে এসে দেখেন দরজা বন্ধ। বাইরে থেকে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হয়। পরে পাশের দোকানিদের পরামর্শে তিনি থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান।

রুবেল চাকমা আরও বলেন, দোকানের পেছনে সুমিতের থাকার জন্য একটি ছোট কক্ষ তৈরি করা হয়েছিল। আগের রাতেও সে স্বাভাবিক ও হাসিখুশি ছিল।

খাগড়াছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, মালিকের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমিতের লাশ উদ্ধার করে। তবে পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্ত করাতে রাজি নন। মামলার বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ কোনো মামলা করেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ