সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বিতর্কিত হতে পারে: বদিউল আলম
Published: 16th, August 2025 GMT
‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন বিতর্কিত হতে পারে’ বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই প্রধান’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ড.
বদিউল আলম মজুমদার বলেন,“আগামী ফেব্রুয়ারিতে নিবার্চন অনুষ্ঠানের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে সময়ের মধ্যে নির্বাচন হওয়া জরুরি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।”
আরো পড়ুন:
কোনো দল চায় না চায়, সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হবে
নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই: প্রেস সচিব
‘সরকার না চাইলে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে না’ উল্লেখ করে বদিউল আলম বলেন, “এবারের নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকবে। সব পক্ষ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে ভোটাররা এবার নিঃসংকোচে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো টাকার খেলায় মত্ত থাকলে ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা মুখ্য হলেও প্রার্থী, ভোটার, নাগরিক সমাজ, সংবাদমাধ্যমসহ সব অংশীজনের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।”
ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সদস্য বলেন,“ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন আছে। ছাত্ররা অনেক ভালো ভালো কর্মকাণ্ড করে থাকে। তবে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি গ্রহণযোগ্য নয়। ছাত্ররা কোনো দলের লাঠিয়াল হবে-এটা হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে।”
সংসদ নির্বাচনে পিআর ও আসনভিত্তিক-উভয় পদ্ধতিরই সীমাবদ্ধতা রয়েছে জানিয়ে ড. বদিউল আলম বলেন, “বর্তমান পদ্ধতিতে আসনভিত্তিক নির্বাচনের মাধ্যমে নিম্নকক্ষ গঠন এবং আনুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে।”
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “নির্বাচনের প্রধান স্টেকহোল্ডার রাজনৈতিক দলগুলো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। নির্বাচনের সময় ঘোষণা হলেও জুলাই সনদ চূড়ান্ত হয়নি। সনাতন নাকি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে, তা নিয়ে এখনও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ শেষ হয়নি।”
“এ অবস্থায় জুলাই সনদে স্বাক্ষরসহ আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে নতুনভাবে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সরকার ঘোষিত সময় অনুযায়ী আসন্ন নির্বাচন করা সম্ভব না হলে দেশ এক ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হতে পারে। তাই গণতন্ত্র, দেশ ও জাতির স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলকে যার যার অবস্থান থেকে ছাড় দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের গতিকে বেগবান করা উচিত। তবে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, ভোটারসহ সব অংশীজনের সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব নয়”।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই প্রধান’ শীর্ষক ছায়া সংসদে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিকেরা বিজয়ী হন।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, জাকির হোসেন লিটন ও মো. হুমায়ূন কবীর। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র র জন ত র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে ‘গলায় গামছা ও মাজায় রশি’ লাগতে পারে: সিইসিকে ইসলামী আন্দোলন
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে তাঁকে সতর্ক করে এসেছেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। ওই সাক্ষাৎ শেষে দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হলে সিইসির গলায় গামছা ও মাজায় রশি লাগতে পারে, সে কথা তাঁকে বলে এসেছেন তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। সাক্ষাৎ-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে গাজী আতাউর রহমান দাবি করেন, নির্বাচনের জন্য দেশে এখনো ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরি হয়নি। নির্বাচন কমিশনের সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন তাঁরা।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা বলেছি যে আপনি যদি মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবেন, তাহলে আপনি নির্বাচন দেন। আর যদি আপনি মনে করেন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবেন না, তাহলে আপনি ঝুঁকি নেবেন না। কারণ, যদি আপনি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না দিতে পারেন, তাহলে বিগত নির্বাচন কমিশনের পরিণতি আপনাকে ভোগ করতে হবে। আপনার গলায় গামছা এবং মাজায় রশি লাগতে পারে। এই অবস্থাটা আপনি মনে রাখবেন।’
সাক্ষাতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে সাতটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচনী কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার জন্য প্রশিক্ষণ, ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন, জুলাই জাতীয় সনদের আলোকে যে সংস্কার হবে, সে অনুযায়ী পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী দলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা এবং দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।
ইসলামী আন্দোলন নিরপেক্ষ ও ক্রেডিবল (গ্রহণযোগ্য) নির্বাচন চায় উল্লেখ করে গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বিগত সময়ে বাংলাদেশে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেখানে মূল সমস্যা ছিল নির্বাচন পদ্ধতিতে। তাই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন আয়োজন আমাদের মৌলিক দাবি। যাতে জনগণের শতভাগ ভোটের মূল্যায়ন হয় এবং নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়।’
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম।