‘ডিভোর্সের পর বাচ্চাদের সঙ্গে ওদের বাবার সম্পর্ক নষ্ট করিনি’
Published: 23rd, March 2025 GMT
পেশায় চিকিৎসক হয়েও বলিউড পা রাখেন অভিনেত্রী অদিতি গোভিত্রিকর। মিসেস ওয়ার্ল্ড বিজয়ী অদিতি বলিউডেও সুনাম কুড়ান। বলিউডে পা রাখারে আগেই অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে ডা. মুফাজ্জলকে বিয়ে করেন। এজন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি।
বিয়ের এক বছরই কন্যাসন্তানের মা হন অদিতি। ২০০৭ সালে জন্ম হয় পুত্র জিহানের। ২০০৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় মুফাজ্জল-অদিতির। যদিও বিবাহবিচ্ছেদের কারণ জানাননি কেউই। সংসার ভাঙার পর নিজেকে চিকিৎসা সেবায় ডুবিয়ে দেন অদিতি।
অদিতির কন্যা কিয়ারার বয়স এখন ২৩ বছর। আর আঠারোতে পা রেখেন পুত্র জিয়ান। সমাজের নানা প্রতিকূলতা এক পাশে রেখে দুই সন্তানকে একা মানুষ করেছেন এই অভিনেত্রী। সংগ্রামী জীবন নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে কথা বলেছেন অদিতি।
আরো পড়ুন:
রাকেশ পান্ডে মারা গেছেন
মাস পেরিয়ে ভিকির সিনেমার আয় কত?
অল্প বয়সে কন্যা সন্তানের মা হন অদিতি। প্রথম সন্তানের মা হওয়ার অনুভূতি পৃথিবীর সব দুঃখ সারিয়ে তুলেছিল তাকে। এ অভিনেত্রী বলেন, “আমার আজীবনের সুন্দর মুহূর্ত। সময়টা ভুলতে পারব না কখনো। মা হয়ে অন্যরকম ভালোবাসা অনুভব করেছিলাম। পৃথিবীতে সব সম্পর্কের মধ্যে হয়তো কিছু কন্ডিশন থাকে। তবে একজন মা ও সন্তানের বন্ধন সব কিছুর ঊর্ধ্বে। মা হওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি।”
অদিতির পুত্র প্রিম্যাচিওর হয়েছিল। তাকে ৩৫ দিন এনআইসিইউতে রাখা হয়েছিল। এ তথ্য উল্লেখ করে অদিতি বলেন, “ওর মাথাটা এত ছোট ছিল যেন এক আঙুলে ধরা যায়। তখন খালি মনে হতো যা হয় হোক, শুধু তুই বেঁচে থাক। অনেক সমস্যা ছিল ওর। এখন যদিও লম্বায় আমাকে ছাপিয়ে গিয়েছে।”
সিঙ্গেল মাদার হিসেবে দুই সন্তানকে বড় করেছেন অদিতি। তবে এই জার্নি মোটেও সহজ ছিল না। তা জানিয়ে অদিতি বলেন, “বিষয়টা খুব একটা সহজ ছিল না। তবে বাচ্চাদের সঙ্গে ওদের বাবার যোগাযোগ ছিল। আমি কখনো সেই সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টাও করিনি। কারণ আমি বিশ্বাস করি, একজন বাচ্চার জীবনে বাবা-মা দু’জনেরই গুরুত্ব সমান। আসলে বাচ্চাদের তো কোনো দোষ ছিল না।”
অদিতির কন্যা অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছে। পুত্র অভিনেতা হতে চায়; যা নিয়ে জোর প্রস্তুতি চলছে। এসব তথ্য স্মরণ করে অদিতি বলেন, “ওদের সব কিছুতে পাশে আছি। শুধু ভালো মানুষ হোক। আমার প্রাক্তন স্বামী ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তবে আমি ছেলেমেয়েদের সবসময় বলেছি তোমাদের ধর্ম হিউম্যানিটি। মানুষের জন্য পারলে কিছু করার চেষ্টা করো। তা হলে জীবন এমনিতেই সুন্দর হবে।”
১৯৭৪ সালের ২১ মে মহারাষ্ট্রের পানভেলে জন্মগ্রহণ করেন অদিতি। সেখানে বাবা-মা, ভাই-বোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মুম্বাইয়েই স্কুল-কলেজের পাঠ চুকান। ১৯৯৭ সালে এমবিবিএস পাস করেন এই অভিনেত্রী।
কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর মডেলিং জগতে পা রাখেন অদিতি। একের পর এক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ের মুকুট পরতে থাকেন তিনি। ২০০১ সালে বিবাহিত নারীদের নিয়ে একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জয়ের মুকুট পরেন অদিতি। শুধু তাই নয়, অদিতি প্রথম ভারতীয় বিবাহিত নারী যে, বিশ্বসুন্দরীর খেতাব লাভ করেন।
১৯৯৯ সালে তেলুগু ভাষার ‘থাম্মুড়ু’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন অদিতি। এতে পবন কল্যাণের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ২০০২ সালে হিন্দি ভাষার সিনেমায় প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান অদিতি। ‘সোচ’ সিনেমায় সঞ্জয় কাপুর, রাভিনা ট্যান্ডন, আরবাজ খান, ড্যানির সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। এ সিনেমায় অভিনয়ের পর ‘১৬ ডিসেম্বর’, ‘বাজ’, ‘ধুন্দ’, ‘ভিক্টোরিয়া নাম্বার ২০৩’, ‘ভেজা ফ্রাই টু’, ‘হাম তুম শাবানা’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেন অদিতি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দর য় কর ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
শোবিজের একঝাঁক একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”
ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”
সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”
“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।