পেশায় চিকিৎসক হয়েও বলিউড পা রাখেন অভিনেত্রী অদিতি গোভিত্রিকর। মিসেস ওয়ার্ল্ড বিজয়ী অদিতি বলিউডেও সুনাম কুড়ান। বলিউডে পা রাখারে আগেই অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে ডা. মুফাজ্জলকে বিয়ে করেন। এজন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি।

বিয়ের এক বছরই কন্যাসন্তানের মা হন অদিতি। ২০০৭ সালে জন্ম হয় পুত্র জিহানের। ২০০৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় মুফাজ্জল-অদিতির। যদিও বিবাহবিচ্ছেদের কারণ জানাননি কেউই। সংসার ভাঙার পর নিজেকে চিকিৎসা সেবায় ডুবিয়ে দেন অদিতি।

অদিতির কন্যা কিয়ারার বয়স এখন ২৩ বছর। আর আঠারোতে পা রেখেন পুত্র জিয়ান। সমাজের নানা প্রতিকূলতা এক পাশে রেখে দুই সন্তানকে একা মানুষ করেছেন এই অভিনেত্রী। সংগ্রামী জীবন নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে কথা বলেছেন অদিতি।

আরো পড়ুন:

রাকেশ পান্ডে মারা গেছেন

মাস পেরিয়ে ভিকির সিনেমার আয় কত?

অল্প বয়সে কন্যা সন্তানের মা হন অদিতি। প্রথম সন্তানের মা হওয়ার অনুভূতি পৃথিবীর সব দুঃখ সারিয়ে তুলেছিল তাকে। এ অভিনেত্রী বলেন, “আমার আজীবনের সুন্দর মুহূর্ত। সময়টা ভুলতে পারব না কখনো। মা হয়ে অন্যরকম ভালোবাসা অনুভব করেছিলাম। পৃথিবীতে সব সম্পর্কের মধ্যে হয়তো কিছু কন্ডিশন থাকে। তবে একজন মা ও সন্তানের বন্ধন সব কিছুর ঊর্ধ্বে। মা হওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি।”

অদিতির পুত্র প্রিম্যাচিওর হয়েছিল। তাকে ৩৫ দিন এনআইসিইউতে রাখা হয়েছিল। এ তথ্য উল্লেখ করে অদিতি বলেন, “ওর মাথাটা এত ছোট ছিল যেন এক আঙুলে ধরা যায়। তখন খালি মনে হতো যা হয় হোক, শুধু তুই বেঁচে থাক। অনেক সমস্যা ছিল ওর। এখন যদিও লম্বায় আমাকে ছাপিয়ে গিয়েছে।”

সিঙ্গেল মাদার হিসেবে দুই সন্তানকে বড় করেছেন অদিতি। তবে এই জার্নি মোটেও সহজ ছিল না। তা জানিয়ে অদিতি বলেন, “বিষয়টা খুব একটা সহজ ছিল না। তবে বাচ্চাদের সঙ্গে ওদের বাবার যোগাযোগ ছিল। আমি কখনো সেই সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টাও করিনি। কারণ আমি বিশ্বাস করি, একজন বাচ্চার জীবনে বাবা-মা দু’জনেরই গুরুত্ব সমান। আসলে বাচ্চাদের তো কোনো দোষ ছিল না।”

অদিতির কন্যা অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছে। পুত্র অভিনেতা হতে চায়; যা নিয়ে জোর প্রস্তুতি চলছে। এসব তথ্য স্মরণ করে অদিতি বলেন, “ওদের সব কিছুতে পাশে আছি। শুধু ভালো মানুষ হোক। আমার প্রাক্তন স্বামী ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তবে আমি ছেলেমেয়েদের সবসময় বলেছি তোমাদের ধর্ম হিউম্যানিটি। মানুষের জন্য পারলে কিছু করার চেষ্টা করো। তা হলে জীবন এমনিতেই সুন্দর হবে।”

১৯৭৪ সালের ২১ মে মহারাষ্ট্রের পানভেলে জন্মগ্রহণ করেন অদিতি। সেখানে বাবা-মা, ভাই-বোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মুম্বাইয়েই স্কুল-কলেজের পাঠ চুকান। ১৯৯৭ সালে এমবিবিএস পাস করেন এই অভিনেত্রী।

কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর মডেলিং জগতে পা রাখেন অদিতি। একের পর এক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ের মুকুট পরতে থাকেন তিনি। ২০০১ সালে বিবাহিত নারীদের নিয়ে একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জয়ের মুকুট পরেন অদিতি। শুধু তাই নয়, অদিতি প্রথম ভারতীয় বিবাহিত নারী যে, বিশ্বসুন্দরীর খেতাব লাভ করেন।

১৯৯৯ সালে তেলুগু ভাষার ‘থাম্মুড়ু’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন অদিতি। এতে পবন কল্যাণের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ২০০২ সালে হিন্দি ভাষার সিনেমায় প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান অদিতি। ‘সোচ’ সিনেমায় সঞ্জয় কাপুর, রাভিনা ট্যান্ডন, আরবাজ খান, ড্যানির সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। এ সিনেমায় অভিনয়ের পর ‘১৬ ডিসেম্বর’, ‘বাজ’, ‘ধুন্দ’, ‘ভিক্টোরিয়া নাম্বার ২০৩’, ‘ভেজা ফ্রাই টু’, ‘হাম তুম শাবানা’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেন অদিতি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দর য় কর ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতার সুযোগে প্রপাগান্ডার সয়লাব

১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন তৎকালিন বাকশাল সরকার চারটি পত্রিকা সরকারি ব্যবস্থাপনায় রেখে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। এতে হাজারো সাংবাদিক রাতারাতি বেকার হয়ে দুঃসহ জীবনে পতিত হন। জনগন সঠিক তথ্য ও বস্তুনিষ্ঠ খবর জানা থেকে বঞ্চিত হয়। গোটা দেশে যেন অন্ধকার নেমে আসে। জবরদস্তিমূলকভাবে তখন সাংবাদিক ও অন্যান্য পেশাজীবীদেরকে  বাকশালে যোগদানে বাধ্য করা হয়। 
অনেক সাংবাদিক সেদিন জীবন-জীবিকার ভয়ে বাকশালের ফরম পূরণ করেন। তাই সংবাদমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতা হরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত। আজ দিবস আর কালো নেই। তথ্য প্রবাহের যুগে এখন মন খূলে লেখা যায়, প্রচার করা যায়। বিশেষ করে গেলো বছরের ৫ আগষ্টে ফ্যাসিবাদের পতনের পর গনমাধ্যমে অনেকটা স্বাধীনতা বেড়েছে। গণভবনের তেল তেলা তোষামদি প্রশ্ন এখন আর চলে না। বলা চলে গণমাধ্যম বিগত ১৬ বছরের চাইতে এখন বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। তবে একটা প্রশ্ন রয়েই গেছে তা হলো পেশাদার কিছু সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে । এসব মামলা বেশির ভাগই আক্রোশের কারনে হয়েছে। বাদীকে না জানিয়ে একটা মহল মামলায় সাংবাদিকের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। এটা নিন্দনীয়। একজন সাংবাদিক মানুষ খুনের মামলার আসামী এটা মেনে নেয়া  দুস্কর । 
৫ আগষ্টে আগে যারা তোষামদি করতো , সঠিক সংবাদ লিখতে কিংবা প্রচার করতো পারতো না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দোহাই দিয়ে যারা গনমাধ্যমের কন্ঠ রোধ করে রেখেছিল তাদের ভয়ে আতংকে থাকতো। তাদের অনেকে এখন গনমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতার সুযোগে মিথ্যা প্রপ্রাগান্ডা চড়াচ্ছে। গনহত্যাার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি একটা দলের প্রতি বিশেষ দরদ দেখিয়ে মিথ্যা তথ্য চড়াচ্ছে। অনেকে তাদের ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। যাচাই বাছাই ছাড়া  মিথ্যা তথ্য শেয়ার করছে। তাদের এখনই থামা দরকার। সত্য প্রকাশ করা একজন সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব । এ পেশাগত দায়িত্বের কেউ অপব্যবহার করলে মুলত তিনিই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। একসময় তার মিথ্যা সংবাদ পরিবেশের কারনে কেউ তার পাশে আর থাকবেন না। তাকে পেশাদার সাংবাদিক নয়, একজন দালাল হিসেবে চিহ্নিত  হয়ে  আস্তুাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। 
পেছনের কথায় ফিরে  আসি, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন সংবাদ পত্রের কালো দিবস পেরিয়ে  ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার অভাবনীয় বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর সাংবাদিকদের লেখার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবারিত করেন।
জিয়াউর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমে সংবাদপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক সব কালাকানুন শিথিল করে দেশের সব জায়গা থেকে সংবাদপত্র প্রকাশে উৎসাহ প্রদান করেন। শুধু তাই নয়, প্রকাশিত সংবাদপত্র টিকিয়ে রাখা সরকারেরই দায়িত্ব বলেই তিনি মনে করতেন। তিনি রাজশাহী থেকে ‘দৈনিক বার্তা’ নামে একটি প্রথম শ্রেণীর পত্রিকা প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। এ পত্রিকা ঘিরে সমগ্র উত্তরাঞ্চলে তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটে। বহু সাংবাদিকের কর্মসংস্থান হয়।ডিক্লারেশনের শর্ত শিথিল করার কারণে সে সময় ঢাকা থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা এমনকি থানা পর্যায় থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকা প্রকাশ হতে থাকে। এসব পত্রিকা টিকিয়ে রাখতে জিয়াউর রহমান সরকারি বিজ্ঞাপন বণ্টননীতিও শিথিল করেন। বিভিন্ন সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন বণ্টন ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণমুক্ত করেন। একই সঙ্গে সরকারি বিজ্ঞাপনের ৬০ ভাগ ঢাকা থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় এবং বাকি ৪০ ভাগ মফস্বল থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় বণ্টনের ব্যবস্থা করেন। এর ফলে সারা দেশে সংবাদপত্র প্রকাশনায় নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। 
শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই  প্রথম টার্গেট করে সংবাদমাধ্যমকে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেও একই পথে হাঁটে দলটি। গত প্রায় ১৫ বছরে আমার দেশ, দিনকাল, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, সিএসবিসহ জনপ্রিয় সংবাদপত্র, বেসরকারি টেলিভিশন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে কয়েক হাজার সাংবাদিককে বেকারত্বের মুখে ঠেলে দিয়েছিল । ৬০ জন সাংবাদিক খুন হয়েছে। একের পর এক কালাকানুন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। কথায় সাংবাদিক গ্রেফতার তখন নিত্যকার ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সাংবাদিক পরিচয়ে একদল চাটুকার আওয়ামীলীগের দু:শাসনের মদদ দিয়ে জাতির উপর জুলুমের মাত্রা আরো বাড়িয়েছিল। ছাত্রজনতার বিপ্লবে ফ্যাসিবাদের ভয়াবহ পতনে মানুষ যেমন স্বস্তি ফিরে পেয়েছে তেমনি গণমাধ্যম ফিরেছে অবাধ স্বাধীনতায়। 

লেখক : সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই
  • কালিয়াকৈরে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় আটক ২ নেতা, পরে ছাড়া পেলেন একজন
  • আমি গর্বিত আমি একজন মুসলিম: আমির খান
  • প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
  • খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প
  • খামেনিকে হত্যায় ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন ট্রাম্প
  • সাংবাদিক পরিচয়ে গেস্ট হাউসের কক্ষে কক্ষে তল্লাশি, দম্পতির কাছে বিয়ের প্রমাণ দাবি
  • ডেঙ্গু-করোনায় দুই মৃত্যু, আক্রান্ত ২৭৫ জন
  • চলতি মাসের ১৫ দিনে করোনায় ৪ জনের মৃত্যু
  • গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতার সুযোগে প্রপাগান্ডার সয়লাব