বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালিয়েও শেখ হাসিনার মধ্যে কোনো অনুশোচনা তৈরি হয়নি। তাঁর মধ্যে এখনো হত্যা ও প্রতিহিংসার মানসিকতা রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজের হলরুমে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন রিজভী।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, হাজার হাজার শিশু, কিশোর, তরুণের রক্ত নিয়েও শেখ হাসিনা এখনো হত্যার নির্দেশনা দেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতাকে চিরদিন নিজের করে রাখার জন্য নির্বাচন ও গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮–তে নৈশকালীন নির্বাচন এবং ২০২৪–এ ডামি নির্বাচন করেছেন, যা ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ওবায়দুল কাদের মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে এক লাখ মানুষ মারা যাবে বলে বলতেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর দেশে এ রকম কিছুই ঘটেনি।

দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সঠিক উন্নয়ন হলে দেশের মানুষ ভারতে চিকিৎসা নিতে যেত না। এটার পরিবর্তন একমাত্র দেশের চিকিৎসকেরা ঘটাতে পারেন। এ সময় তিনি ক্রিকেটার তামিম ইকবালের দেশে চিকিৎসার উদাহরণ দিয়ে তাঁর সুস্থতা কামনা করেন।

ড্যাব রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি অধ্যাপক মাহামুদুল হক সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মো.

রফিকুল ইসলাম, রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মাহফুজ উন নবী, রংপুর জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান, সদস্যসচিব অধ্যাপক দেলওয়ার হোসেন সরকার, ড্যাব রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি আকমল হাবিব চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসচিব শামসুজ্জামান সরকার, মহানগর ড্যাবের আহ্বায়ক নিখিলেন্দ্র শংকর গুহ রায়, সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম, রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম মণ্ডল প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প র ম ড ক ল কল জ সদস যসচ ব ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী