সাত ফুট গভীর গর্তে ফেলে ভাড়াটেকে জীবন্ত কবর দিলেন বাড়ির মালিক
Published: 26th, March 2025 GMT
ভারতের হরিয়ানায় এক ব্যক্তি ও তাঁর বন্ধু মিলে আরেক ব্যক্তিকে অপহরণের পর সাত ফুট গভীর গর্তে ফেলে জীবন্ত কবর দিয়েছেন।
লোমহর্ষ এই ঘটনা ঘটেছে হরিয়ানার রোহতকে। পুলিশ বলেছে, নিহত ব্যক্তি একজন পুরুষ। তিনি যোগব্যায়ামের শিক্ষক ছিলেন। তাঁকে হত্যা করা হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। মৃতদেহটি খুঁজে পাওয়া যায় গত সোমবার।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, নিহত জগদীপ রোহতকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগব্যায়ামের শিক্ষক ছিলেন। তিনি হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হারদীপের বাড়ির একটি অংশে ভাড়া থাকতেন। হারদীপের সন্দেহ হয়, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জগদীপের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
এই সন্দেহ থেকে হারদীপ প্রথমে কুয়া বানানোর কথা বলে কয়েকজনকে দিয়ে চরকি দাদরির পান্তাভাস গ্রামে সাত ফুট গভীর একটি গর্ত খোঁড়ান।
গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর জগদীপ মাত্র কাজ থেকে ফিরেছেন। এরপরই হারদীপ তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে তাঁকে অপহরণ করেন। তাঁরা জগদীপের হাত-পা বেঁধে প্রথমে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করেন। এরপর চরকি দাদরি নিয়ে তাঁকে গর্তের ভেতর ফেলে দেন। তাঁরা জগদীপের মুখে টেপ আটকে দিয়েছিলেন। যেন তিনি চিৎকার করতে না পারেন।
জীবন্ত অবস্থায় জগদীপকে গর্তে ফেলে হারদীপ ও তাঁর বন্ধুরা গর্তটি মাটি দিয়ে ভরে দেন।
ওই ঘটনার ১০ দিন পর গত ৩ জানুয়ারি জগদীপের নিখোঁজের ঘটনায় শিবাজি কলোনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্ত করতে নেমে পুলিশ প্রথমে কোনো দিশা খুঁজে পাচ্ছিল না। পরে জগদীপের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড ঘাঁটতে গিয়ে পুলিশ বেশ কিছু প্রমাণ পায়। তারই ভিত্তিতে হারদীপ ও তাঁর এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ তাঁদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানায়। আদালত রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করলে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে হারদীপ ও তাঁর বন্ধু ওই ব্যক্তিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। কীভাবে তাঁরা জগদীপকে হত্যা করেছেন, তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
জিজ্ঞাসাবাদে দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৪ মার্চ পুলিশ জগদীপের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ কর্মকর্তা কুলদীপ সিং বলেছেন, ‘এই মামলায় আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছেন বলে পুলিশ তথ্য পেয়েছে। তাঁদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে। মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। আমরা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জগদ প র
এছাড়াও পড়ুন:
র্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করা হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরের দিকে রঙ্গিখালীর গহীন অরণ্য থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযান চলাকালে জব্দ করা হয় দেশীয় অস্ত্র, তিন রাউন্ড গুলি, র্যাবের পোশাক এবং একটি ওয়াকিটকি। এর আগে, সকালে অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা সুমন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার সুমন মুন্সির বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার ডুমরাকান্দি গ্রামে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে।
আরো পড়ুন:
দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
উত্তরায় র্যাবের পোশাক পরে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা ছিনতাই
র্যাব-১৫-এর সহকারী পরিচালক আ.ম. ফারুক জানান, গত ১১ জুন রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে মো. রহিমুল্লাহর ছেলে হাফিজ উল্লাহকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান সুমন, রাকিব ও শিকদার। অপহরণের কাজে তাদের সহযোগিতা করেন এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেন নামে দুই ব্যক্তি।
অপহরণকারীরা অজ্ঞাত স্থান থেকে অপহৃতের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে অপহৃতকে হত্যার হুমকিও দেন তারা।
ঘটনার পরপরই র্যাব-১৫ গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চালিয়ে প্রথমে রঙ্গিখালীর ডাকাত সর্দার শাহআলমের বাড়ি থেকে অপহরণকারী সন্দেহে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুরকে গ্রেপ্তার করে। আজ রবিবার সকালের দিকে মরিচা বাজার এলাকা থেকে মূল অপহরণকারী সুমন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, পুলিশ ও বনবিভাগের সমন্বয়ে মোট ২৫৬ সদস্যের যৌথ বাহিনী রঙ্গিখালীর গহীন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। দীর্ঘ অভিযানে একপর্যায়ে আজ দুপুরের দিকে হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করা হয়। অভিযান চলাকালে উদ্ধার হয় একটি দেশীয় অস্ত্র, তিন রাউন্ড গুলি, র্যাবের পোশাক এবং একটি ওয়াকিটকি।
র্যাব জানায়, পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীদের দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ