প্রতিবছর ঈদ ঘিরে বাজারে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়ে। এবার বাজারে জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে ঈদের কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। যেমন ব্রয়লার, সোনালি ও দেশি মুরগি। পাশাপাশি মসলার দামও খানিকটা বেড়েছে। তবে ক্রেতাদের ভাষ্য, দাম বাড়লেও তা নাগালের বাইরে যায়নি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০-২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০-৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০ টাকা বেড়েছে। যেখানে দুই সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি হতো। আর প্রতি কেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৬৮০ টাকা, যা সপ্তাহ দুয়েক আগে ছিল ৬১০-৬৪০ টাকা।
টাউন হল বাজারের মুরগি বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে আমাদেরও পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে। এক কেজি সোনালি মুরগি ৩১০ টাকায় বিক্রি করলে আমাদের ২০ টাকা লাভ হয়। কেউ কেউ আরও বেশি দামে বিক্রি করছেন।’
কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় চিংড়ি, রুই ও আইড় মাছের দাম কিছুটা বেশি মনে হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে।মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আজিজবাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দু-এক জায়গায় অবশ্য ৮০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করতে দেখা গেছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
মসলার দাম পাঁচ-ছয় মাস আগে যা বেড়েছে, এখনো তা-ই রয়েছে। নতুন করে শুধু দারুচিনি ও গোলমরিচের দাম কিছুটা বেড়েছে।কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী সোহান রহমানঈদ উপলক্ষে মসলার মধ্যে দারুচিনি ও গোলমরিচের দাম বেড়েছে। টাউন হল বাজারের মসলা ব্যবসায়ী পলাশ পাল জানান, প্রতি কেজি দারুচিনির দাম ৪০ টাকা ও গোলমরিচের দাম ৮০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এখন এলাচি প্রকারভেদে ৪ হাজার ৬০০ থেকে ৫ হাজার টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রকার ও মানভেদে প্রতি কেজি কিশমিশ ৫৬০-৭০০ টাকা, আলুবোখারা ৪৫০-৫০০ টাকা, কাঠবাদাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, পেস্তাবাদাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাজুবাদাম ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী সোহান রহমান বলেন, মসলার দাম পাঁচ-ছয় মাস আগে যা বেড়েছে, এখনো তা-ই রয়েছে। নতুন করে শুধু দারুচিনি ও গোলমরিচের দাম কিছুটা বেড়েছে।
ঈদ সামনে রেখে মাছের বাজারে ক্রেতার ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়ল। মাছের মধ্যে রুই-কাতলা ও পাঙাশের দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আজিজ বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় চিংড়ি, রুই ও আইড় মাছের দাম কিছুটা বেশি মনে হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেল, এখন আকার ও প্রকারভেদে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকা, কই ২৫০-৩০০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, মৃগেল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, বোয়াল ৪৫০-১ হাজার ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ও রুপচাঁদা ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের আগে হঠাৎ মাছ-মুরগির দাম বেড়ে গেছে। চালের দাম বেড়েছে। এলাচিসহ কিছু মসলার দামও বেশ বেড়ে গেছে। আমাদের হিসাব করা টাকা দিয়ে মাস চলতে হয়। ফলে কিছু পণ্যের এই বাড়তি দাম আমাদের সংসারের খরচ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা সাবরিনা সারোয়ারসবজির বাজারে এখনো কিছুটা স্বস্তি মিলছে। শুধু লেবু ও শসার দাম রোজার শুরু থেকেই চড়া রয়েছে। এখনো শসার কেজি ৮০-১০০ টাকা ও প্রতি হালি লেবু প্রকারভেদে ৪০-১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য সবজি আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে।
ঈদের খাওয়া ও অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে পরিচিত সেমাই ও পোলাওয়ের চাল অনেকটা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। যেমন খুচরা বাজারে প্যাকেটজাত ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই ৫০ টাকা ও সাধারণ লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। পোলাওয়ের চাল ১০০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ ঠিক থাকায় প্রতি লিটার ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা সাবরিনা সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের আগে হঠাৎ মাছ-মুরগির দাম বেড়ে গেছে। চালের দাম বেড়েছে। এলাচিসহ কিছু মসলার দামও বেশ বেড়ে গেছে। আমাদের হিসাব করা টাকা দিয়ে মাস চলতে হয়। ফলে কিছু পণ্যের এই বাড়তি দাম আমাদের সংসারের খরচ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ও গ লমর চ র দ ম ১ হ জ র ২০০ ট ক মসল র দ ম ব যবস য় ব রয়ল র আম দ র ম রগ র র ম রগ
এছাড়াও পড়ুন:
ডিজনি র্যাশ কী, হলে কী করবেন
ডিজনি র্যাশ বিষয়টি আমাদের অচেনা। এটি মূলত ত্বকের একধরনের সমস্যা। সাধারণত কেউ গরম আবহাওয়ায় দীর্ঘসময় থাকলে এই র্যাশ দেখা যায়। বিদেশে ডিজনি ওয়ার্ল্ডের মতো থিম পার্কে গরম আবহাওয়ায় দীর্ঘ সময় থাকার পর অনেকের ত্বকে এ ধরনের র্যাশ দেখা দেয়। আর সেখান থেকেই এসেছে ডিজনি র্যাশ।
ডিজনি র্যাশ দেখতে কেমনএ ধরনের র্যাশ পায়ের নিচের দিকের অংশে, যেমন গোড়ালি বা তার কাছাকাছি জায়গায় হয়। দেখতে ছোট ছোট লাল দাগ বা ফুসকুড়ির মতো। এই র্যাশ চুলকায়ও। অনেক সময় জ্বালাপোড়া, ফোলা ভাব বা ব্যথা থাকে। গরমে রক্তনালির প্রদাহ বা ভাস্কুলাইটিস হয়ে এ রকম হয়ে যায়।
কারা বেশি আক্রান্ত হয়তীব্র গরমে বেশিক্ষণ থাকলে, বিশেষ করে যাঁরা গরম আবহাওয়ায় অভ্যস্ত নন, তাঁদের এটি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। বয়স্কদের এই র্যাশ বেশি হয়। যাঁরা দীর্ঘক্ষণ হাঁটেন বা দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁদের এটি হতে দেখা যায়। যেমন যাঁরা অনেক ঘোরাঘুরি করেন, তাঁদেরও হতে পারে। যাঁরা আঁটসাঁট প্যান্ট বা মোজা পরেন, তাঁদেরও এটি বেশি হতে দেখা যায়।
আরও পড়ুনজ্বরের সঙ্গে র্যাশ মানেই কি ডেঙ্গু১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩চিকিৎসা ও প্রতিরোধপ্রথমত, গরম আবহাওয়ায় দীর্ঘ সময় থাকা যাবে না। এ রকম পরিবেশে গেলে ঠান্ডা পানিতে নিয়মিত পা ধুতে হবে বা বরফ থাকলে শরীরে ঘষে নিতে হবে। পোশাক পরতে হবে হালকা ও আরামদায়ক। ভ্রমণের মাঝখানে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। গরম আবহাওয়ায় পানি খেতে হবে বেশি।
র্যাশ হয়ে গেলে আক্রান্ত জায়গা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন। পা উঁচু করে রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চুলকানির ওষুধ যেমন অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ রকম র্যাশ সাধারণত এক সপ্তাহের বেশি থাকার কথা নয়। থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। র্যাশ যদি ছড়িয়ে পড়ে, সেটিও ভালো লক্ষণ নয়। এ ছাড়া অনেক সময় র্যাশে ইনফেকশন বা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। যদি জ্বর আসে, শরীর বেশ অসুস্থ হয়ে যায়, দুর্বল লাগে, তাহলে ইনফেকশন হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে দ্রুত।