তাঁর সংগ্রহে আছে দেড় হাজারের বেশি ভ্রমণবিষয়ক বই
Published: 5th, April 2025 GMT
মা–বাবাকে বই পড়তে দেখে দেখে বড় হয়েছি। একসময় তাঁদের অভ্যাসটাই আমার মধ্যে জেঁকে বসে। স্কুলে পড়ার সময় বাবা নানা ধরনের বই উপহার দিতেন। ক্লাস সেভেনে যখন, তখন একদিন সৈয়দ মুজতবা আলীর দেশে বিদেশে দিলেন। আমার কাছে অবশ্য এই বই বিশেষ আগ্রহ তৈরি করল না। কারণ, তখন আমি রোমেনা আফাজের ‘দস্যু বনহুর’সহ বিভিন্ন লেখকের ‘দস্যু সিরিজ’–এর বইয়ে ডুবে আছি। তারপর ‘বেতাল বাহাদুর’, ‘ম্যানড্রেক’, ‘নন্টে ফন্টে’, ‘বাটুল দি গ্রেট’, ‘টিনটিন’, ‘টারজান’সহ নানা কমিকস বইয়ে বুঁদ হলাম। আর ভ্রমণের বইয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ হলো কলেজে পড়ার সময়।
১৯৮৭ কি ১৯৮৮ সাল। আমি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র। কাছেই বাংলাবাজার। আমার কলেজের সামনে ফুটপাতেও পুরোনো বই বিক্রি হতো। সেসব সংগ্রহ করতাম। ব্যক্তিগত সংগ্রহটা এভাবে গড়ে উঠতে থাকে। বাসায় যখন বইয়ের সংগ্রহ বেড়ে গেল, মনে হলো, একটা বুকশেলফ দরকার। কিন্তু বুকশেলফ কেনার মতো টাকা আমার নেই। বাসার সবার কাছে চাঁদা ধার্য করলাম। সেই চাঁদার টাকায় একটি বুকশেলফ কিনে ফেললাম।
আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল সাইকেলে ঘুরেছেন বহু দেশ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।