সৌরবিদ্যুতের ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে প্রাণ-আরএফএল
Published: 9th, April 2025 GMT
সৌরবিদ্যুতের ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। মৌলভীবাজার জেলার গোবিন্দপুরে অবস্থিত প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সমন্বিত কৃষি খামারে সৌর প্যানেল থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করবে শিল্পগ্রুপটি।
বিজ্ঞপ্তিতে প্রাণ-আরএফএল জানায়, প্রাথমিকভাবে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিদ্যুৎ কিনবে বিশ্বের খ্যাতনামা পোশাক বিপণনকারী সুইডিশ ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএমকে পোশাক সরবরাহকারী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রকল্পে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)।
বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চলমান বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে এ বিষয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, এইচঅ্যান্ডএম ও আইএফসির মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী, এইচঅ্যান্ডএমের হেড অব সাসটেইবেবিলিটি ফর প্রোডাকশন ইউসেফ এল নাটুর, আইএফসির এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক বিক্রম কুমার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এ বিষয়ে আহসান খান চৌধুরী বলেন, একটি সুন্দর ও সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ নিজস্ব যে টেকসই লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তার প্রতিশ্রুতি হিসেবে আমাদের এ খাতে বিনিয়োগ। এছাড়া সরকারের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা পাশে থাকতে চাই। বর্তমানে সারাবিশ্ব টেকসই ভবিষ্যতের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। আমরাও এ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
তিনি বলেন, মৌলভীবাজারের গোবিন্দপুরে প্রায় ১০০০ বিঘা জমির ওপর আমাদের সমন্বিত কৃষি খামার রয়েছে, যেখানে সৌর প্যানেল স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। শুরুতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে বিদ্যুৎ ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহের জন্য নীতি সহায়তা দিতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স রব দ য ৎ প র ণ আরএফএল গ র প
এছাড়াও পড়ুন:
২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের
দীর্ঘ ২২ বছর পর আবার চাকা ঘুরতে যাচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের। এরই মধ্যে কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে কর্মসংস্থান হয়েছে এক হাজার জনের। সরকারি মালিকানাধীন বস্ত্রকলটি সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) আবারও চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। আজ সোমবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারখানাটি পরীক্ষামূলক চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পিপিপিতে নেওয়ার পর রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের নাম বদলে রাখা হয়েছে বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে শিগগিরই কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। এটি পুরোদমে চালু হলে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আজ দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ-আরএফএলের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল, গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান, গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, রাজশাহীতে অবস্থিত সরকারি এই টেক্সটাইল মিলটি ২২ বছর ধরে বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে এটি পিপিপিতে চালুর উদ্যোগ নেয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। প্রায় ২৬ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কারখানাটিতে তৈরি হবে শতভাগ রপ্তানিমুখী পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটিতে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় গ্রুপটি। এরপর তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে তারা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।
আনিসুর রহমান বলেন, কারখানায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে জুতা ও ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে রাজশাহীর প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হবে।
রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসে কারখানা চালু করার প্রক্রিয়ায় কয়েক শ গাছ ও পুকুর ভরাটের বিষয়ে রাজশাহীতে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনও করেছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাইলে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাঁরা সঠিক উপায় অবলম্বন করেই এগুলো করেছেন। বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। তার বিপরীতে তিন হাজার নতুন গাছ লাগানো হয়েছে।