ফিফার কাছে বর্ণবাদ ও অশালীনতার অভিযোগ ব্রাজিলের, বিপাকে আর্জেন্টিনা
Published: 9th, April 2025 GMT
লাতিন আমেরিকার ফুটবল যুদ্ধে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল লড়াই মানেই টান টান উত্তেজনা। ফুটবল বিশ্বে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ ম্যাচগুলোর একটি হলো এই দুই দলের মুখোমুখি হওয়া। গত ২৬ মার্চ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বুয়েনস আইরেসের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে এমনই এক হাইভোল্টেজ ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৪-১ গোলের ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে।
তবে খেলার ফলাফল ছাপিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে মাঠের বাইরে ঘটে যাওয়া কিছু বিতর্কিত ঘটনা। ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) অভিযোগ তুলেছে—ম্যাচ চলাকালীন আর্জেন্টিনার কিছু সমর্থক ব্রাজিলিয়ান দর্শকদের প্রতি বর্ণবিদ্বেষমূলক ও অশালীন আচরণ করেছেন। সিবিএফ জানিয়েছে, এক ব্রাজিলীয় সমর্থক এমন এক ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছেন, যেখানে দেখা যায়, এক আর্জেন্টাইন ভক্ত বানরের মতো অঙ্গভঙ্গি করছেন। সেই ভিডিও প্রমাণ হিসেবে ফিফার কাছে পেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
সিবিএফ দাবি করেছে, এই ঘটনার জন্য আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ফিফার আচরণবিধি অনুযায়ী, বর্ণবাদ বা বৈষম্যমূলক আচরণ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন:
ব্রাজিলের দায়িত্ব নিচ্ছেন কে?
ব্রাজিলের কোচ হওয়ার বিষয়ে যা বললেন আনচেলোত্তি
এই অভিযোগ যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে আর্জেন্টিনাকে একাধিকভাবে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই আগের কিছু অনিয়মের কারণে কলম্বিয়ার বিপক্ষে তাদের পরবর্তী হোম ম্যাচ দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে হচ্ছে। নতুন করে এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে ফিফা আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে।
ফিফা এর আগেও এমন ঘটনায় শাস্তি দিয়েছে। চিলির বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম, বর্ণবাদ ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে তাদের গ্যালারির ৫০ শতাংশ অংশ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল ফিফা, যা পরবর্তীতে আপিল করে ২৫ শতাংশে কমিয়ে আনা হয়। তবে তখনই ফিফা সতর্ক করেছিল—একই অপরাধ আবার ঘটলে পরবর্তীতে আরও কঠিন শাস্তি আসবে।
ফলে আর্জেন্টিনার জন্য সম্ভাব্য শাস্তি হতে পারে— দর্শক প্রবেশে নতুন নিষেধাজ্ঞা, বড় অঙ্কের জরিমানা অথবা গুরুতর ক্ষেত্রে পয়েন্ট কাটা। যা তাদের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চারটি রপ্তানিনির্ভর খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে সরকার।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের রপ্তানি সক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায়, তা পর্যালোচনার জন্য ১৫ সদস্যের এ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। গত ২৯ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগের মনিটরিং সেল থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটাবে। এরপর থেকে রপ্তানিনির্ভর নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি প্রদান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির পরিপন্থী হয়ে উঠবে। এ প্রেক্ষাপটে বিকল্প কৌশল নির্ধারণে এই চারটি খাতকে বাছাই করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিবকে সভাপতি করে গঠিত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব, বস্ত্র ও পাট সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিএসটিআই মহাপরিচালক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিসিক চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই সভাপতি। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক।
কমিটির কার্যবিধিতে বলা হয়েছে—
ক) জমাকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখিত সুপারিশসমূহ থেকে সরকারের সক্ষমতা বিবেচনায় গ্রহণযোগ্য সুবিধা নির্ধারণ করা হবে।
খ) এসব সুবিধা প্রদানের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
গ) গৃহীত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থাসমূহের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কমিটি।
ঘ) প্রয়োজন হলে প্রতিবেদন বহির্ভূত নতুন সুপারিশও বাস্তবতা বিবেচনায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকবে।
ঙ) কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করার এখতিয়ার রাখবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এলডিসি-পরবর্তী বাস্তবতায় টেকসই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে, নীতিগত স্থিতিশীলতা ও খাতভিত্তিক প্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই। এই উদ্যোগকে তারা সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন।
এদিকে, বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা/হাসনাত/ইভা