মায়রা-মায়রনের একটি বেড়াল ছিলো। গত ঈদে যেটি হারিয়ে গিয়েছে। সেদিন মায়রা খেয়াল করলো বেড়ালটি জানালা দিয়ে ফিরে এসেছে। মিউ মিউ করে সারা ঘর মাতিয়ে রেখেছে। মায়রন বেড়ালটিকে আদর করে কোলে নিয়ে মায়রাকে ডেকে তুললো। মায়রা ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখলো বেড়ালছানাটি মায়রনের কোলে। মায়রা তো দারুণ অবাক হলো।
বেড়াল ফিরে এসেছে!
মায়রা আবার চোখ কচলে তাকালো। নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছে না সে। বেড়ালের নরম তুলতুলে শরীর ছুঁয়ে দিলো মায়রা। বেড়ালটিও পিটপিট করে তাকালো মায়রার দিকে। মিউ মিউ করে ডাক দিলো। জানান দিলো সে ফিরে এসেছে। মায়রা বেড়ালটিকে কোলে তুলে নিলো। বেড়ালটিও আদুরে ভঙ্গিতে মায়রার মুখের সঙ্গে মুখ মিশিয়ে আদর নিলো। মায়রা বেড়ালের শরীরটায় হাত বুলিয়ে দিলো। চোখ বুজে বেড়ালটি আদর অনুভব করলো।
বুবাই পাশের ঘরে মায়রা-মায়রনের জন্য খাবার তৈরি করছেন। মায়রা-মায়রনের আনন্দ উল্লাসে ছুটে এলেন তিনি। বেড়ালটিকে দেখে বুবাইও অবাক হলেন। সামনে বৈশাখ। বৈশাখের কেনাকাটা করতে হবে। মায়রা-মায়রনের জন্য জামা কিনতে হবে। বুবাইকে মায়রা-মায়রন বলল, বুবাই বেড়ালের জন্য কিন্তু জামা কিনতে হবে। বুবাই মার্কেট থেকে মায়রা-মায়রন এবং বেড়ালের জন্য সুন্দর জামা কিনে আনলেন। মায়রা-মায়রন তাদের আদরের বেড়ালটিকে জামা পরিয়ে দিলো। সুন্দর লাল রঙের একটি জামা। অসাধারণ সুন্দর লাগছে বেড়ালটিকে। জামা পরে বেড়ালটি সারা ঘর দৌড়ে বেড়াচ্ছে। মায়রা-মায়রন বেড়ালের সঙ্গে খেলা করছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ালটি খেলা করছে মায়রা-মায়রনের সঙ্গে। মায়রা ছড়া কাটছে-
আমার বেড়াল লক্ষ্মী বেড়াল
আমার বেড়াল লাল বেড়াল
আমার বেড়াল খেলা করে
আমার বেড়াল জামা পরে।
বেড়ালছানা বেড়ালছানা
ঘরের বাহির যেতে মানা।
বুবাই যাবে ব্যাংককে। মায়রা-মায়রনও যাবে সাথে। বেড়ালকে কি করবে? কোথায় থাকবে? কার কাছে থাকবে? বেড়ালের শরীর ছুঁয়ে আদর করে দিচ্ছে মায়রা-মায়রন। মায়রা-মায়রন বুবাইয়ের সাথে ব্যাংকক যাচ্ছে। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তারা বিমানে উঠেছে। বিমান উড়ছে আকাশে। মেঘের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে বিমান। বিমানের জানালা দিয়ে মেঘ দেখছে মায়রা-মায়রন। সাদা সাদা মেঘ। তুলোর মতো মেঘ। হঠাৎ মায়রা-মায়রন খেয়াল করলো, বিমানের জানালার পাশে কি যেন উড়ে আসছে। আরও কাছে আসতেই তাদের চোখ ছানাবড়া। তাদের সেই বেড়াল! বিমানের সাথে উড়ছে! বেড়ালটি ডাকছে মিউ মিউ.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম র ব ড় ল র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন
অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
৩. সারভাইক্যাল রিবস
৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া
৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে
৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি
৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা
৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগ
৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়
১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ
১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া
১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস
১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস
১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া
১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা
১৬. হাড়ের ইনফেকশন
১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)
১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।
উপসর্গ
ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।
বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।
সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।
ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।
হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।
ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।
চিকিৎসা
চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়
১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।
২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।
৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।
৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।
৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।
৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।
৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।
৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।
১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।
১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।
১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা
আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫