কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় প্রায় ৯ মাস আগে নিখোঁজ হয় ৫ বছরের শিশু হালিমাতুছ সাদিয়া। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার সাদিয়ার বাড়ির পাশে শুকিয়ে যাওয়া একটি দিঘির খাদ (গর্ত) থেকে শিশুর মাথার খুলি ও চারটি হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। বাবা আকতার হোসেন ও মা আয়েশা ছিদ্দিকার দাবি, উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি ও হাড় তাদের মেয়ে সাদিয়ার। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও পুলিশ বলছে, ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় করতে হবে। 

রোববার উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের মধ্যম ছিলোনিয়া গ্রামের এক বাসিন্দা দিঘির গর্তে মাছ খুঁজতে গিয়ে শিশুর মাথার খুলি ও চারটি হাড় পান। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় লালমাই থানার ওসি মো.

শাহ আলম ঘটনাস্থল গিয়ে হাড় ও খুলি উদ্ধার করেন। এ সময় শিশু সাদিয়ার বাবা আকতার হোসেন ও মা আয়েশা ছিদ্দিকা উপস্থিত ছিলেন।

আয়েশা ছিদ্দিকা বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। তখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে পুলিশি কার্যক্রম তেমন ছিল না। মেয়েকে উদ্ধারে তখন পুলিশের কোনো সহায়তা পাইনি। থানায় শুধু নিখোঁজের একটি ডায়েরি (জিডি) করেছি। গত বছরের নভেম্বরে আমি বাদী হয়ে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে প্রতিবেশী হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহারের নামে অপহরণের একটি মামলা করি। তাদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে। 

মামলার পর হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহার পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত উল্যাহ বলেন, শিশুটি নিখোঁজের খবর পেয়ে গত বছরের ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাকসামের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিঘিসহ গ্রামের তিনটি পুকুরে সন্ধান করেন। ওই সময় দিঘির পাড়ে শিশুটির পায়ের জুতা পাওয়া গিয়েছিল। এখন দিঘির একটি অংশের খাদে শিশুর মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া গেছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করবে, এটাই আমাদের দাবি।

মঙ্গলবার লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, উদ্ধার করা খুলি ও হাড় সোমবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। পরিচয় শনাক্তের জন্য ওই শিশুর বাবা-মায়ের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। 

ওসি আরও বলেন, শিশুটি অপহরণের অভিযোগে যেহেতু আদালতের একটি মামলা পিবিআইয়ের তদন্তাধীন, সেহেতু আমরা নতুন করে এখনই কোনো মামলা নেব না।

পিবিআই কুমিল্লার এস আই মো. ইব্রাহিম সমকালকে জানান, গত বছরের নভেম্বরে শিশুটি অপহরণের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়। অপহরণের বিষয়ে একটি অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরে আদালতের নির্দেশে রোববার সকালে খাদিজা জাহান রিয়া নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার খাদিজা একই উপজেলার ভুশ্চি গ্রামের ইমাম হোসেনের স্ত্রী এবং নিখোঁজ সাদিয়ার বড় বোন ফাতেমার প্রাক্তন স্বামীর বড় বোন। অপহরণ ঘটনার বিষয়ে আসামিদের সঙ্গে তার কথোপকথনের অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে। তবে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালগুলো নিখোঁজ ওই শিশুর কি-না, তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গত বছর র অপহরণ র প ব আই তদন ত র একট

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজারে অপহৃত রোহিঙ্গা উদ্ধার, আটক ৩
  • র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
  • কল্পনা চাকমার অপহরণের বিচার চেয়ে ফেরার পথে হামলার অভিযোগ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির নিন্দা
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার