স্কুলছাত্র সাব্বির হোসেন (১৫) হত্যার বিচারের দাবিতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। বুধবার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের চারমাথা মোড়ে দুপুর ১২টা থেকে আধা ঘণ্টা অবস্থান করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রামনাথপুর এলাকার বাসিন্দারা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিশুবাড়ি দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সমবেত হন। সেখান থেকে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরে আসেন। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা চারমাথায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান নেন। বিক্ষোভকারীরা হত্যাকারীদের বিচার ও ফাঁসির দাবি জানান। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা ও গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে অপরাধীদের বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেন। এতে আধা ঘণ্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কর্মসূচি চলাকালে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান, স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক, কামাল হোসাইন, ফিরোজ কবির, খোকন মিয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন, অপহরণের চার দিন পর সাব্বিরের লাশ পাওয়া গেছে। আসামিরা স্কুলছাত্রকে নির্মমভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। তার হাত-পা ভেঙে শৌচাগারের কূপে ফেলে দেয়। পরে মাথায় পাথরচাপা দিয়ে রাখা হয়। এমন ঘটনা যেন আর কেউ ঘটানোর সাহস না করতে পারে, এ জন্য অপহরণ ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, সাব্বির হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় অন্য কোনো ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

অপহরণের চার দিন পর মঙ্গলবার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার আখ খামারের পরিত্যক্ত শৌচাগারের কূপ থেকে স্কুলছাত্র সাব্বির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সাব্বির উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও বিশুবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করেন। মামলায় রামনাথপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম (১৮), একই উপজেলার বিশুবাড়ী গ্রামের আবদুল আলীম (১৮), তরফকামাল গ্রামের ইউনুস আলীসহ (৩৫) তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়। চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ইউনুস, রবিউল ও আলীমকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কবিরুল ইসলাম (২০) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘গাইবান্ধায় অপহরণের চার দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুনগাইবান্ধায় অপহরণের চার দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার১৫ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপহরণ র চ র দ ন পর গ ব ন দগঞ জ উপজ ল এ ঘটন য় উপজ ল র অবস থ ন ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।

উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।

পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার