বেশ কয়েকদিন ধরে বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কম। আমদানিকারক ও বাজারজাতকারীর দাবির প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়। এর পরও বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়েনি। বিশেষ করে ছোট-বড় সব বাজারেই পাঁচ লিটার তেলের বোতল সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তবে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। গতকাল বুধবার ঢাকার মহাখালী, তেজকুনিপাড়া ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, শুল্কছাড় সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রতি লিটারে তাদের এ বাবদ খরচ বেড়েছে ২১ টাকা। সরকার ১৪ টাকা বাড়ানোর পরও লিটারে তাদের ৭ টাকার মতো লোকসান গুনতে হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে বলে জানান তারা।    

এদিকে তেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংগঠনটি বলছে, সয়াবিন তেলের দর বাড়ানো অন্যায্য ও অযৌক্তিক। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রমজান উপলক্ষে গত ডিসেম্বরে সব ধরনের পরিশোধিত ও অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি পর্যায়ের মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছিল। এই সুবিধা ছিল গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এর আগে গত ১৭ অক্টোবর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েল সরবরাহের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়। শুল্ক-কর ছাড়ের এসব সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ১ এপ্রিল থেকে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় আমদানিকারকরা। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই গত মঙ্গলবার দর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তাতে এক লিটার বোতলের দাম দাঁড়িয়েছে ১৮৯ টাকায়। আর পাঁচ লিটার বোতলের দাম পড়বে ৯২২ টাকা। এ ছাড়া লিটারে ১২ টাকা বাড়ানোর ফলে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল কিনতে ভোক্তাকে খরচ করতে হবে ১৬৯ টাকা।

তবে দাম বাড়ার পরও বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ বাড়েনি। সরেজমিন কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দোকানে পাঁচ লিটারের বোতল নেই। কয়েকটি দোকানে মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ব্র্যান্ডের নতুন দরের তেল দেখা গেছে। যদিও রূপচাঁদাসহ দু-একটি কোম্পানি নতুন ক্রয়াদেশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। সাধারণত বাজারে পাঁচ লিটার বোতলের তেলের চাহিদা বেশি থাকে।

বোতলের সংকট থাকলেও খোলা ভোজ্যতেলের সরবরাহে ঘাটতি নেই। তুলনামূলক কম দরে মিলছে পাম অয়েল। সরকার প্রতি লিটার পাম অয়েলের দাম ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করলেও কেনা যাচ্ছে ১৬৫ বা এর চেয়ে কিছুটা কম দরে। 

কারওয়ান বাজারের তুহিন জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো.

রায়হান সমকালকে বলেন, তিন-চার দিন ধরে পাঁচ লিটারের বোতল নেই। দাম বাড়ার পর বুধবার ফ্রেশের বোতল এসেছে। রূপচাঁদা চাহিদাপত্র নিয়েছে। বৃহস্পতিবার দেবে বলেছে।

তবে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে লিটারে ৪ টাকা কমে পাম অয়েল বিক্রি করছেন বলে জানান একই বাজারের আব্দুর রব স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. নাঈম। তিনি বলেন, খোলা পাম ও সয়াবিনের সংকট নেই। ক্রেতারা পাঁচ লিটার বোতলের বেশি খোঁজ করেন। তবে সেগুলোর সরবরাহ বাড়াচ্ছে না কোম্পানিগুলো। 

তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ক্যাব। সংগঠনটি বলছে, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অন্যায্য ও অযৌক্তিক। এ কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হবে। সাধারণ ভোক্তারা আর্থিক চাপে পড়েছেন। ক্যাব মনে করে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল থাকার পরও দেশে এভাবে দাম বাড়ানো ভোক্তাবিরোধী ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত দেয়।

এদিকে ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণের এক দিনের মাথায় এ পণ্যের আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহার করেছে এনবিআর। একই সঙ্গে অপরিশোধিত পাম অয়েলের ক্ষেত্রেও এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার এক বিশেষ আদেশে আগাম কর প্রত্যাহার করে আদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আদেশটি প্রকাশ করা হয়েছে গতকাল। 

তবে এতে তেল আমদানি ও পরিশোধনকারী মিলগুলোর লাভ-লোকসান নেই বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। মিলাররা বলছেন, তাদের আমদানিতে আগাম কর নেই। যারা ছোট আকারে আমদানি করে অন্য মিলে পরিশোধন করতে চান তাদের জন্য এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আথহার তাসলিম সমকালকে বলেন, শুল্কছাড়ের সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ায় লিটারে ২১ টাকা খরচ বেড়েছে। কিন্তু সরকার ১৪ টাকা বাড়ানোর পরও লিটারে ৭ টাকা করে লোকসান হচ্ছে।

তিনি বলেন, দর নির্ধারণে সরকারের হস্তক্ষেপ, ব্যবসা পর্যায়ে অসহযোগিতাসহ নানা কারণে বাজার থেকে তেল পরিশোধনকারী ব্যবসায়ীরা হারিয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের এখন যেসব বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তাতে কেউ এককভাবে তেল ব্যবসা করতে পারবেন না, যদি পাশাপাশি তার অন্য ব্যবসা না থাকে।  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ জ যত ল ল র সরবর হ ব ড় ত ল র সরবর হ ভ জ যত ল র পর শ ধ ত ব যবস য় ব তলজ ত পর য য় ১৪ ট ক র পরও সরক র আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না

চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে সামগ্রিকভাবে পণ্যমূল্য ৭ শতাংশ কমবে। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে পণ্যমূল্য আরও ৭ শতাংশ কমবে। এ দাম হবে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব নেই। দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনো ৮ শতাংশের ঘরে। যদিও একসময় তা দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে। দেশের মানুষকে এখনো বাড়তি দামেই পণ্য ও সেবা কিনতে হচ্ছে। আগামী বছর নিত্যপণ্যের দাম কমবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব কম।

বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক অক্টোবর ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। যার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে জ্বালানির দাম কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে আরও কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে তারা। সেগুলো হলো চীনে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া এবং বিশ্ববাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দামে বড় ধরনের পতন ঘটা। খাদ্যপণ্যের দাম বছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে, কিন্তু বছরের প্রথমার্ধে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পানীয় পণ্যের দাম হঠাৎ অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। মূলত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে মানুষ সোনার দিকে ছুটেছেন।

বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে জ্বালানির দাম আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ১০ শতাংশ কমবে। ২০২৭ সালে তা আবার প্রায় ৬ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ২০২৬ সালে কৃষিপণ্য, খাদ্য ও কাঁচামালের দাম কমবে। চলতি বছরেও এসব পণ্যের দাম কমেছে।

জ্বালানি তেল

বিশ্বব্যাংকের ২০২৬ সালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়লেও তেলের দাম কমে যাবে এবং সেই প্রভাবকে ছাপিয়ে যাবে। ২০২৫ সালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম হতে পারে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬৮ ডলার; ২০২৪ সালের ৮১ ডলারের তুলনায় যা বেশ কম। ২০২৬ সালে এই দাম আরও কমে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬০ ডলারে নামতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির হার আরও কমবে—মূলত চীনের চাহিদা কমে যাওয়া, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির দ্রুত প্রসার ও বৈশ্বিক তেল সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

২০২৫ সালে বৈশ্বিক তেলের বাজারে সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৬ সালে তা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের সর্বোচ্চ মাত্রার তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি হবে এ সরবরাহ।

কৃষিপণ্য

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কৃষিপণ্যের মূল্যসূচক ২০২৫ সালে স্থিতিশীল আছে। ২০২৬ সালে তা সামান্য ২ শতাংশ ও ২০২৭ সালে আরও ১ শতাংশ কমবে।

খাদ্যপণ্যের দাম, যেমন শস্য, তেল, প্রোটিনজাত খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম সাম্প্রতিক সীমার কাছাকাছি থাকবে। তবে মাঝেমধ্যে সামান্য কিছুটা ওঠানামা থাকবে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির হার আবার দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতায় ফিরে আসছে।

২০২৫ সালের বাকি সময়ে সয়াবিনের দাম কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে সয়াবিন সাধারণত চীনে রপ্তানি হয়, তা এবার কম দামে অন্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্রে হচ্ছে এই সয়াবিন। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কিনছে না। ফলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে এই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিন চাষের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে ব্রাজিল তার সয়াবিন আবাদ আরও বাড়ানোর পথে রয়েছে। পানীয় পণ্যের দাম ২০২৬ সালে ৭ শতাংশ ও ২০২৭ সালে প্রায় ৫ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চলতি বছর সারের দাম সামগ্রিকভাবে ২১ শতাংশ বাড়তি। চাহিদা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা ও কিছু অঞ্চলে সরবরাহ–ঘাটতির কারণে এ দাম বেড়ে যাওয়া। ২০২৬ ও ২০২৭ সালে দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমতে পারে। তবু ২০১৫-১৯ সালের গড় দামের তুলনায় তা অনেক বেশি থাকবে। এর কারণ হলো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও চলমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা।

চীন ইতিমধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট সার রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। অন্যদিকে পটাশ সরবরাহকারী বড় দেশ বেলারুশ এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। রাশিয়া ও বেলারুশ—উভয় দেশই সারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরোপিত নতুন শুল্কের সম্মুখীন।

দেশে কেন দাম বেশি

বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজার দাম না কমার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের দামের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। গত তিন বছরে ডলার দাম অনেকটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অনেক আমদানি পণ্যে শুল্ক বেশি বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে দাম কমছে না। বাজারে চাহিদা কত বা কখন কোন পণ্য আমদানি করতে হবে, সে বিষয়ে যথাযথ তথ্যের ঘাটতি আছে। ফলে সময়মতো পণ্য আমদানি হয় না।

আরেকটি বিষয় হলো দেশে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, তার অনেক কিছু উৎপাদিতও হয়। কিন্তু বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এসব পণ্যের সরবরাহে টান পড়েছে। বাজারের পণ্যমূল্যে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

তিন বছর আগে দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা বেড়ে ১২২ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক মাস ধরে আমদানির ঋণপত্র খোলাও কমেছে। এতে আমসদানিতে চাপ পড়ছে।

দেশের বাজার উচ্চ মূল্যের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয়, শুল্ক ও করের চাপ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত অতি মুনাফা ও অস্বচ্ছ বাণিজ্যিক শৃঙ্খলের কারণেও বাজারে কৃত্রিমভাবে উচ্চমূল্য বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাসের সুফল ভোক্তাপর্যায়ে পড়ছে না।

সেলিম রায়হান আরও বলেন, এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা নতুন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। পণ্য পরিবহন ও আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সরবরাহ শৃঙ্খল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

দেশে তিন বছর ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। সম্প্রতি তা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত আগস্ট মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
  • সবজির দাম কমতির দিকে, আটার দাম কেজিতে বাড়ল ৫ টাকা